কলমে: জাসমিনা খাতুন
ঘন জঙ্গলের বড়ো বড়ো গাছের পাশেই ছিল একটি ছোট তুঁত গাছ। সেই তুঁত গাছের পাতায় কাইতো নামের এক শুঁয়োপোকা বাস করত।
সে তুঁত পাতা খেয়ে জীবনধারণ করত এবং নিজের ও বাইরের জগতের পরিবর্তন লক্ষ্য করত।
একদিন একটি ছোট মধুচূষক পাখির চোখে পড়ল, আর পাখিটি ছোঁ মেরে তাকে খেতে আসল। তবে কাইতো সেদিন ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেল।
প্রতিদিন দূরে উড়তে থাকা পাখিদের সে পলকহীন চেয়ে দেখত আর মনে মনে স্বপ্ন আঁকত।
সে ভাবত, “ইস! যদি আমারও ওই রকম দুটো ডানা থাকত! তাহলে আমিও দূর আকাশে উড়ে নদী-নালা পেরিয়ে প্রিয় স্বপ্নগুলো আঁকতে পারতাম।
পুনর্জন্ম হলে আমি একদিন বাজপাখি হব।”
এমন ইচ্ছে মনে নিয়ে কাইতো নিজেকে গুছিয়ে নিতে থাকে, নিজের চারপাশে কোকুন তৈরি করে।
তবে, প্রথমবারের মতো সে অন্ধকারের মুখোমুখি হয় এবং তার খুব ভয় লাগে।
কিছু সময় যেতে না যেতেই কাইতো সম্পূর্ণ অন্ধকারে ঢুকে পড়ে, কোকুনে বন্দি হয়ে।
তার শরীর ধীরে ধীরে দ্রবীভূত হতে থাকে, কিন্তু সে লক্ষ করে যে তার শরীরে নতুন কিছু তৈরি হচ্ছে।
আস্তে আস্তে তার রঙিন ডানা গজাতে থাকে। তার ইচ্ছাশক্তি, ধৈর্য এবং অধ্যবসায়ের প্রতিফলন হলো এক সুন্দর প্রজাপতিতে।
এখন সে নানা ফুলে ফুলে, বাগানে বাগানে উড়ে বেড়ায়, গান গায় নিজের মর্জিমতো।