সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩২ পূর্বাহ্ন

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নাম ভাঙিয়ে সোর্স সহিদ বেপরোয়া

Coder Boss
  • Update Time : রবিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৪
  • ৯৭ Time View

স্বাধীন সরকার, ঢাকা:

রাজধানীর বনানীতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সোর্স সহিদের তৎপরতা ইদানিং আগের চেয়ে ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। মোটরসাইকেল নিয়ে এলাকায় ঘুরে ঘুরে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি করতে দেখা যায় তাকে। এছাড়া মাদকের হোম ডেলিভারি করেন বলে অভিযোগ এসেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ সহিদের ঘরে অভিযান পরিচালনা করলে ব্যাপক পরিমাণ মাদক ও অবৈধ অস্ত্র পাওয়া যাবে।

বনানী এলাকার সুদে টাকা দেওয়ার ব্যবসা লাল মিয়ার। এক ব্যক্তিকে দলিল করে সুদে তিন লাখ টাকা দিয়েছেন। এক বছর হয়ে গেছে লাভ ও আসল টাকা না দিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এমন অবস্থায় লাল মিয়া মামলা করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ঠিক এমন অবস্থায় পূর্ব পরিচিত সোর্স সহিদ তাকে পরামর্শ দেন মামলা করলে বছরের পর বছর পেরিয়ে যাবে টাকা পেতে। এছাড়া তিন লাখ টাকা তুলতে তার বেশি খরচ হয়ে যাবে। সহিদ লাল মিয়াকে বলেন তাকে পঞ্চাশ হাজার টাকা দিলে র‍‍্যাব দিয়ে টাকা তুলে দিবেন। পরে সহিদের কথা মতে র‍‍্যাব দিয়ে অবৈধ পন্থায় ওই ব্যক্তিকে আটকিয়ে জিম্মি করে টাকা আদায় করা হয়। বিনিময়ে চুক্তি অনুযায়ী সহিদকে দেওয়া হয় পঞ্চাশ হাজার টাকা।

এভাবে র‍‍্যাব-পুলিশ দিয়ে মানুষের ক্ষতি করা সহিদের কাছে একদম মামুলি ব্যাপার। তাকে টাকা দিলে যে কারো ক্ষতি করানো যায়। ফাঁসানো যায় মিথ্যা মামলায়। সহিদকে সহযোগিতা করে বনানী থানা ও র‍‍্যাব-১ এর কয়েকজন অসাধু কর্মকর্তা। সহিদ থাকে বনানী থানাধীন টিএন্ডটি মাঠ সংলগ্ন গোডাউন বস্তিতে। বৃহত্তর কড়াইল বস্তিতে মাদক ব্যবসায় তার রাজত্ব! বস্তির মানুষ সহিদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। বস্তির ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি। চাঁদা না দিলে পুলিশ দিয়ে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকি। এছাড়া মাদক দিয়ে নিরীহ মানুষকে ফাঁসিয়ে ফিটিং বানিজ্য তার নিত্যদিনের কাজ।

অনুসন্ধানে জানা যায়, বনানী থানা পুলিশের সোর্স হিসেবে সহিদের বেশ নামডাক ছিল। কিন্তু তার মাদক ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগে এবং বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারনে ইমেজ রক্ষার্থে বনানী থানা পুলিশ সহিদকে এখন খুব একটা ডাকে না। এছাড়া বনানী থানার বর্তমান ওসি খুব ভালো লোক, অপরাধীদের প্রশ্রয় দেন না। সহিদ বনানী থানায় সুবিধা করতে না পেরে এখন র‍‍্যাব এর সোর্স হিসেবে কাজ করছে। অভিযোগ রয়েছে র‍‍্যাবের আটক করা মাদকের চালানের কিছু অংশ আবার সহিদের মাধ্যমে মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করা হয়। সহিদের কর্মকান্ডে কেউ বাধা সৃষ্টি করলে তাকেই মিথ্যা মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়।

জানা গেছে, একসময়ের দিনমজুর সহিদ এখন অবৈধ টাকায় আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ! মাদক ব্যবসার অবৈধ টাকায় টঙ্গীতে জমি কিনে বিলাস বহুল বাড়ী নির্মাণ করছেন। কিন্তু বনানীর গোডাউন বস্তিতে থেকে মানুষকে বোঝান তার টাকা পয়সা নেই। বস্তিতে তার ঘরের বাইরে সিসি ক্যামেরা লাগানো দেখে অবাক না হয়ে উপায় নেই।

সহিদ যেই মোটরসাইকেলটি নিয়ে ঘুরে বেড়ায় (ঢাকা মেট্রো-ল-৫৭-৭৪৬৪) তার ট্যাক্স টোকেনের মেয়াদ নেই।

এদিকে বনানীর গোডাউন বস্তির বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, সহিদ বস্তির চিহ্নিত জুয়ারু। তার ঘরে প্রতিদিন জুয়া খেলা হয়। জুয়ার আসরে মদ, বিয়ার ও ইয়াবা সেবন করতে চাইলে তার ঘরেই হাজির হয়। জুয়া খেলায় হারলে আবার র‍‍্যাবের ভয় দেখিয়ে টাকা-পয়সা কেড়ে নেয় সহিদ। বস্তিতে তাকে ছাড়া জুয়া খেলায় বসলে সেই আসরের তথ্য র‍‍্যাবকে দিয়ে অভিযান চালানো হয়।

বনানীর-৪ নাম্বার রোডের একটি বাড়ীতে গাড়ি চালান মাইনুদ্দিন। থাকেন কড়াইল বস্তিতে। ডিউটি শেষ করে রাত ১১ টার সময় বাড়ী ফিরছিলেন। ৫ নাম্বার রোডে তার পথ অবরোধ করে সহিদসহ সাদা পোশাকে পুলিশ পরিচয়ে ৪ জন। মাইনুদ্দিনের পকেটে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয় সহিদ। পরে তাকে থানায় নিয়ে যাওয়ার নাটক করে। একপর্যায়ে তাদের ২ হাজার টাকা দিয়ে রক্ষা পায় মাইনুদ্দিন।

এ বিষয়ে মাইনুদ্দিন কারো কাছে অভিযোগ করেছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কার কাছে অভিযোগ করব! তারা তো পুলিশই। অভিযোগ করলে উল্টো আমাকে বিপদে পড়তে হবে। আমরা সাধারণ মানুষ।

এ বিষয়ে সহিদের সাথে যোগাযোগ করলে তার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। এবং তিনি র‍‍্যাব-পুলিশের সোর্স নয় বলে দাবি করেন। তবে বনানী থানা পুলিশের অভিযানে সহিদের উপস্থিতির একটি ছবি আমাদের হাতে এসেছে।

সোর্স সহিদের তৎপরতা বন্ধে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102