লেখকঃ অথই নূরুল আমিন
নির্বাচন চাই। নির্বাচন চাই না। এরকম ভাবে বতর্মানে দেশে বড় রকম বিতর্ক চলছে। বতর্মান সরকার রাষ্ট্র সংস্কার নামে বেশকিছু কাজ শুরু করেছে। বতর্মান সময়ে নির্বাচন চাই। এরকম কথা দেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক বিএনপির কাছ থেকেই বেশি আসছে। আমি বলি বিএনপি নির্বাচন চাইতেই পারে। কারণ এখন পর্যন্ত বিএনপির ভোটার সংখ্যা দেশে অনেক বেশি। কারণ হলো, বিএনপি বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বেশ কয়েকটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি। আওয়ামী লীগের সাথে বিএনপি একমত পোষণ করেনি। বিএনপির এই গুণগত মানের জন্য দেশের এক শ্রেণির ভোটারেরা আজ পর্যন্ত বিএনপির ভোটারই রয়ে গেছেন।
এদিকে ছাত্রদের সংগঠন জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতারা বলছে। নির্বাচন হবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পর অথবা গণহত্যার বিচারের পর ইত্যাদি ইত্যাদি।
এদিকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ বেশকিছু ইসলামী রাজনৈতিক দল। বিভিন্ন আসনে তাদের মনোনীত প্রার্থীদের নামের তালিকা ও প্রকাশ করেছেন। কিন্তু তারা কেউ এখন পর্যন্ত দলীয়ভাবে রাজনৈতিক দলের ইশতেহার ঘোষণা করেননি। এখন পর্যন্ত বিএনপি সহ নির্বাচনে অংশ নেবে এরকম রাজনৈতিক দলের মধ্যেও তারা তেমন কোনো পরিবর্তন আনছেন না।
তাহলে কিভাবে কি হবে? রাজনৈতিক দলের পরিবর্তন ছাড়া দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। আমরা গত সময় গুলোতে দেখেছি। যেদল যখন ক্ষমতায় এসেছে। তখনই জনগণের আশা গুলোকে আর কর্ণপাত করা হয়নি। আমরা দেখেছি সবগুলো রাজনৈতিক দল যারা বিগত সময়ে ক্ষমতায় এসেছে। সংসদ ভবন টু একনেক। একনেক থেকে প্রকল্প পাশ। তারপর কমিশন বাণিজ্য। গত তেপ্পান্ন বছরেও দেশের সুবিধাবঞ্চিত যাট ভাগ জনগণের আশা গুলো ঝুলে আছে তাদের স্বপ্নের মায়া জালে।
এরকম ভাবে একটি রাষ্ট্র চলতে পারে না। যেসকল রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নেবে। তাদেরকে অবশ্যই জাতির স্বার্থে ইশতেহার দিতে হবে। এবং সেইসব ইশতেহার বাস্তবায়ন করার অঙ্গীকার করতে হবে। এরকম বিষয় সকল দলের জন্য উচিৎ হবে। এমপি প্রার্থী বাছাই পর্বটা যেন তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মতামত বা গোপন ব্যালটের মাধ্যমে নির্বাচিত করা হয়।
তা নাহলে অনেক এমপি পাশ হওয়ার পর তারা তাদের আত্মীয়স্বজন ছাড়া অন্য নেতাকর্মীদের সাথে দূরত্ব সৃষ্টি করে চলে। তখনই দলের ত্যাগীরা বঞ্চিত হয়। তারপর দলের ভিত্তি দুর্বল হয়ে পরে। যার বড় প্রমাণ দুষ্ট আওয়ামী লীগ।
আর বতর্মান সরকার। বতর্মানে দেশের কোন রাজনৈতিক দলের শত্রু নয়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাথে সব দলের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। যার ফলে বতর্মান সরকার আরেকটু সংস্কার করুক। দুটি বছর তারা থাকুক। ড. মুহাম্মদ ইউনূস যথেষ্ট যোগ্য ব্যক্তি। তিনি অবশ্যই ভালো কিছু করার চেষ্টা করবেন। আর যেসকল রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনে যাবেন। আপনারাও নিজের দলকে আরো শক্তিশালী করে গড়ে তুলুন। যার যার দলকে যত বেশি শক্তিশালী করবেন। ততই ভোটারের সংখ্যা বাড়বে। এটা যেহেতু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তাই কারচুপি করে কেউ ক্ষমতায় আসতে পারবেন বলে আমার মনে হয় না। বিজয়ী হতে হলে ভোটার থাকতেই হবে। নির্বাচন দুবছর দেরি হলেও সমস্যা নেই।
অথই নূরুল আমিন
কবি কলামিস্ট ও রাষ্ট্র বিজ্ঞানী।