লেখকঃ ইঞ্জিঃ মোঃ সিরাজুল ইসলাম।
বিজয়ের মাস ডিসেম্বর! এমনি এক হেমন্তের অগ্রহায়ণে ৩ রা ডিসেম্বর অপরিপক্ক রাজনৈতিক নেতা ও সামরিক শাসকের হটকারি সিদ্ধান্তে পাকিস্তান নিজেদের কফিনে শেষ পেরে ক'টা ঠুকতে ভারতের বারোটা বিমান ঘাটিতে আক্রমণ চালায়! একদম অপ্রস্তুত ভারত হকচকিয়ে যায় এমন আক্রমণে! ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী তখন কলকাতা শরনার্থী শিবির পরিদর্শনে ছিলেন! শীতবস্ত্র দিয়ে কিভাবে শরনার্থীদের ঠান্ডা জনিত মৃত্যু থেকে রক্ষা করা যায়! এক কোটি লোককে খাদ্য বস্ত্র acomodate করা ছিলো অত্যান্ত দুরূহ ব্যাপার! ভারতে শীত বাংলাদেশ থেকে অনেক বেশী যেমন গরম বেশী!
ইন্দ্রা ফোনেই তার বস প্রেসিডেন্ট সম্ভবত নামটা "ভেঙ্কট গিরি" র অনুমতি নিয়ে দ্রুত দিল্লি ফিরতি বিমানে বসেই সেনাপ্রধান "ফিল্ডমার্শাল মানেকশাহকে" প্রতি আক্রমণের নির্দেশ দেন!
প্রিয় পাঠক, আমি আমার অনেক প্রবন্ধে বলে থাকি,"রাজাকে রাজনীতি জানতে হয়"! প্রতিবারই পাকিস্তান নিজেকে বর্বর প্রমান করে অন্যকে ফায়ার করার সুযোগ করে দিয়েছে! ১৯৭০ সালের নির্বাচনে একক সংখ্যা গরিষ্ঠ দলকে ক্ষমতা না দেয়া আহম্মকের কাজ ছিলো। ক্ষমতা দিলে মুজিব ছয়মাস একবছর বা দুই বছরে জনগণের কাছে অপ্রিয় হতে পারতেন! পাকিস্তান সমমনা ১৬ টা দল, জামাত মুসলিম লীগে নিজামে ইসলাম পিডিপি --- গুছিয়ে উঠতে পারতো। পাকিস্তান ও অখণ্ড থাকতো, ৩০ লক্ষ লোক ও মরতো না!
মুজিবের স্বাধীন বাংলাদেশে তিন বছরের মাথায় ভরাডুবি তে পড়া শুরু হয়েছিলো। সর্বপ্রথম পরাজয় শুরু হয় "খুলনা বিএল কলেজে" ছাত্র নির্বাচনে আমার সহকর্মী "আবু জাফর তোতা" আমার থানার ছাত্র লীগ নেতা, ভিপি নির্বাচনে পরাজিত হলো জাসদ ছাত্রলীগের কাছে!
২. অপারেশন সার্চলাইটের নামে হত্যা আগুন দেয়া কামান বন্ধুক ট্যান্ক নামায় ২৫ মার্চ মুজিব কে স্বাধীনতা ঘোষণার সুযোগ করে দিয়েছিলো!
৩. ধর্ম গত বৈষম্য করে হিন্দু ও আওয়ামী সমর্থকদের হত্যায় ভারতে কোটি লোকের আশ্রয় নেয়ায় ভারতকে বাংলাদেশ স্বাধীনতায় সম্পৃক্ত করা ছিলো বড় ভুল!
ইন্দিরা গান্ধী তার চৌকস ইংরেজি তে জাতিসংঘে বলেছিলেন, "All of you can enjoy the Genocide but I can't sleep close my eyes to avoid hearing the Scream of my Neighbours! "
৪. জাতিসংঘে পোল্যান্ডের Negotiation প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে পাকিস্তান বিদেশ মন্ত্রী প্রস্তাব কপি বেয়াদবি করে ছিড়ে ফেলে বেরিয়ে এসেছিলেন এই বলে,"I am leaving your security meeting hall, my country is calling me!"
৫. আগবাড়িয়ে ৩ রা ডিসেম্বর অর্থাৎ আজ ভারতকে আক্রমণ করে ভারতকে সুযোগ করে দিয়েছিলো সরাসরি হস্তক্ষেপের! যা রাও ফরমান ১৩/১৪ ডিসেম্বর চোখে সরিষা ফুল দেখে এবং পশ্চিম পাকিস্তানের মিথ্যা আশ্বাস ( চীন আমেরিকা আসছে) জীবন বাচাতে ততকালীন আমেরিকার পূর্ব পাকিস্তান কনসুলেটে গেলে তিনি গালাগালি করেছিলেন আহম্মকীর বিষয় তুলে!
মুজিব যেমন পাকিস্তানের ঘাড়ে বন্দুক রেখে ফায়ার করতে চেয়েছিলেন, নিজেকে বিছিন্নতাবাদী বলার সুযোগ দিতে চান নাই, স্বাধীনতা ঘোষনার সুযোগ পাকিস্তান ই করে দিয়েছিলো!
ভারত হয়তো আরো বছর অপেক্ষা করতো পাকিস্তানের ঘাড়ে দোষটা চাপাতে, পাকিস্তান ভারতকে সরাসরি আক্রমণে যাওয়ার সুযোগ করে দিলো এবং মাত্র ১৪ দিনের যুদ্ধে পাকিস্তান গ্লাস কে গ্লাস জল খেয়ে উদাম ফেলো রাখলো তার প্রতিরোধ হীন দেশ! ভারত অচল করে দিলো সব কয়টা বিমান বন্দর, মিলিটারি ঘাটি, কয়েক হাজার মাইল ভিতরে ঢুকে প্রতিরোধ না পেয়ে ভারত সেনারা সেখানেই তাবু গাড়লো!
বর্তমান প্রজন্ম শুনে হয়তো অবাক হবেন, পূর্ব পাকিস্তান কে আলাদা করার প্রথম প্রস্তাব আসে লাড়কানার জমিদার পুত্র শখে রাজনীতি তে আসা ততকালীন বিদেশ মন্ত্রী "জুলফিকার আলী ভুট্টার কাছ থেকে! " তিনি নিজেই বুঝতেন না পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান নিয়ে ১২ শত মাইল দূরত্বে হলেও পাকিস্তান "একটা দেশ!" তিনি পশ্চিম পাকিস্তানে বেশী আসন পেয়ে (পূর্ব পশ্চিম) দুজন প্রধানমন্ত্রী দাবী করেন! মুজিব তা ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করেন। মুজিব ছিলেন পূর্বপশ্চিম মিলে একক সংখ্যা গরিষ্ঠ নেতা! সত্যি যদি বলেন, পাকিস্তান ভাঙার জন্য ইয়াহিয়া ভুট্টো শতভাগ দায়ী! আমাকে বিশ্বাস না হলে পাকিস্তানের আজগর খান, জেড এ খান, সিদ্দিক সালিকের বই পড়বেন!
আমার সামর্থ্য থাকলে আমার দেশ "পাকিস্তান ভাঙার জন্য আন্তর্জাতিক আদালতে মৃত "ইয়াহিয়া ভুট্টোর" বিরুদ্ধে "রিট করতাম" কৈফিয়ত চেয়ে! বিচারের মুখোমুখি করতাম তাদের!
ভালো থাকেন সুস্থ থাকেন নিজ দেশকে ভালোবাসেন!
ধর্ম মানুষের জন্য গরু-ছাগল ভেড়া মহিষ মানুষ সহ ৭৭ লক্ষ প্রাণীর বাস দুনিয়ায়, মানুষ ছাড়া কারো জন্য ধর্ম না। বিশ্বে ধর্ম মোট ৪৩০০ টা যা মিনিটে পরিবর্তন করা যায় কিন্তু সারা জীবনে মানুষ হওয়া কঠিন। ইসলাম ধর্ম মতে নামাজ রোজা হজ্ব যাকাত " আমানু" দের জন্য অর্থাৎ মানবতা মনুষ্যত্ব তাকওয়া পূর্ণ জীবনের বিশ্বাসী ইমানদারগণ এসব করিবে, কুরআনে বলা হয়েছে,"হে বিশ্বাসীগন ----- একদিকে চুরি, মিথ্যা বলা, সুদ ঘুষ খাওয়া, ধোঁকা দেয়া, ভন্ডামি করা, হত্যা খুন রাহাজানি, ভুমি দখল, দুর্বল নিপীড়ন, আমানত খেয়ানত কারী একটা টুপি পরিহিত হলে, মসজিদে দৌড়ালে "আমানু, আল্লাহ বিশ্বাসী হয় না" কষ্ট করার দরকার নাই জাহান্নাম নরক নির্দিষ্ট আপনার জন্য! শীত আসছে ঠান্ডা পানি লাগায় অজু করার দরকার নাই যতক্ষণ মানুষ, আমানু, বিশ্বাসী, ঈমানদার না হন, দশগজের বোরকা বিবিকে পরায় ও লাভ নাই! কারন মানুষ চোখে দেখে না, দেখে তার 'মন' তা নিয়ন্ত্রণ না করলে শতগজ কাপড় ফাড়কে সে সব দেখতে পায় তার কল্পনায় এবং পাপ সেখানে --++