লেখকঃ ইঞ্জিঃ মোঃ সিরাজুল ইসলাম।
২৬ শে অক্টোবর ভোর রাতে ইসরায়েলের নেতানিয়াহু বাংকারে বসে ইরানে আক্রমণ চালানোর নির্দেশ দেন! প্রায় শ'খানেক ড্রোন ও যুদ্ধ বিমান উড়ে আসে ১৭০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে! আল-জাজিরা বলেছে অধিকাংশ ড্রোন আকাশে ই ইরানি প্রতিরোধ বাহিনী ধ্বংস করতে সক্ষম হয়েছে! আমি মনে করি ইরানের রাশিয়ার S 400 আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্হা কেনা উচিত! S -- 400 বিশ্বের সবচেয়ে বড় শক্তিধর প্রতিরোধ বুহ্য যা ভেদ করা অসম্ভব প্রায়!
প্রিয় পাঠক, গত ১ লা অক্টোবর ইরান ২০০ শো বাল্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তেলআবিবে সামরিক ঘাটি লক্ষ্য করে ছুড়েছিলো তার প্রতিশোধ হিসাবে ২৬ অক্টোবর আক্রমণ! উল্লেখ্য, ইরান অত্যান্ত ক্রুদ্ধ আছে ইসরায়েল ও আমেরিকার উপর হামাস নেতা হানিয়া, হিযবুল্লাহ নেতা নাসরুল্লাহ কে হত্যার জন্য! সেজন্য ১ অক্টোবর ইসরায়েল হামলা করেছিলো।
আমেরিকান বাহিনী কাসেম সোলায়মানিকে বাগদাদে হত্যা করলে এবং ১ লা এপ্রিল দামেস্কের ইরানি দূতাবাসে হামলায় ১৬ জন ইরানি নিহত হলে ইরান পরপর দু'বার ইরাকের মার্কিন ঘাটিতে হামলা চালায়!
ইরান হুমকি দিয়ে আমেরিকা কে বলেছে, এরপর আমেরিকা আমার কোন দূতাবাস বা ঘাটিতে আক্রমণ করলে Nothing should go without challenge, আক্রমণ হবে আমেরিকার মাটিতে। উল্লেখ্য, আমেরিকা ইরান থেকে প্রায় ১১হাজার ৯ শো কিলোমিটার দূর!
প্রিয় পাঠক, মার্কিন সহ পশ্চিমা বিশ্ব হিসাব কষতে বসেছে ইরানের হাতে কি আছে! আপাতত যুক্তরাজ্য ভিত্তিক সামরিক গবেষণা বলেছে,"যতদুর জানা গেছে ইরানের ব্লাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বিভিন্ন দূরত্বের আছে যে গুলোতে পরমাণু ওয়ার হেড সংযোগ করা সম্ভব এবং ইরান আঘাত হানতে সক্ষম মার্কিন যে-সব দেশে সেনা ঘাটি আছে যেমন, কাতার বাহরাইন কুয়েত ইরাক মিশর তুরস্ক রুমানিয়া বুলগেরিয়া গ্রীস ইত্যাদি! মিশরে শুধু মার্কিন সেনা ঘাটি নাই! সারা এশিয়া তথা বিশ্ব টাকে ৮০০ সামরিক ঘাটি করে বসে আছে! এখন ও এশিয়ার কোন দেশে সামরিক ঘাটি করতে মরিয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিআইএ! সব দেশে ছলে বলে কৌশলে মীর সাদিক মীর জাফর উমিচাঁদ রায় দুর্লভ জগত শেঠ তৈরি করে ফেলে এবং ধর্মের কাঁধে বা গনতন্ত্রের কাঁধে বা মানবতার দোহাই দিয়ে কোন দেশের অশিক্ষিত ধর্মপ্রাণ জনগনকে ধোঁকায় ফেলে দেয়, ঢুকে পড়ে সে দেশের আপন সেজে! যখন আহাম্মক জনগন বোঝে তখন দেশ আফগানিস্তান ইরাক সিরিয়া লিবিয়া ভিয়েতনাম কম্বোডিয়া কোরিয়া বুরুন্ডি নাইজার হয়ে যায়! পাকিস্তানের মত ৮০০ টাকায় এক কেজি আটা কিনতে হয়, বুরুন্ডির মানুষের মত খালের পাড়ে দাড়িয়ে জলে রুটি ভিজিয়ে খেতে হয়! অথচ এই আফ্রিকায় বিশ্বের বড় হীরার খনি সহ অনেক মূল্যবান ধাতুর মওজুদ আছে!
প্রিয় পাঠক, আমার একটা বদ স্বভাব হচ্ছে সব কিছু আমার দেশ, পরিবার এবং আমার নিজের চরিত্রে তুলনামূলক একটু দৃষ্টিপাত করানো! বিশ্বের মুসলিম দেশ ইরান যখন নিজ জ্ঞান বিজ্ঞানে মার্কিন ঘাটি তথা ইসরায়েলের হামলার জবাব দিতে সক্ষম তখন বাংলাদেশ জ্ঞান বিজ্ঞান অগ্রসর নয়, দ্রব্য মূল্য কমানোর দিকে নজর নয়, কোন কলেজ স্কুল বিশ্ববিদ্যালয় বা মেডিকেল কলেজের নাম পরিবর্তনে ব্যস্হ! আমেরিকার F 16 বা ফ্রান্সের রাফায়েল যুদ্ধ বিমান নয় পাকিস্তানের তৈরি বিমান কেনা যায় কিনা তেমন চিন্তা ভাবনা করছে এমন খবর সোসাল মিডিয়ায় দেখলাম।অবশ্য এ মুহূর্তে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কোন ধরনে বড় সামরিক পারচেজ করার আর্থিক সক্ষমতা বা অধিকার সংরক্ষণ করে কিনা তা আমার জানা নাই!
ভালো থাকেন সুস্থ থাকেন নিজ দেশকে ভালোবাসেন। মনে রাখবেন প্রকৃতি প্রতিশোধ নেয় বা সৃষ্টি কর্তা ছাড় দেন ছেড়ে দেন না!