কলমেঃ শামীম ওসমান
আমি শামিম ওসমান সাতক্ষীরার সাধারণ নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তান। কৃষি পরিবার থেকে শৈশব থেকে গ্রামে বেড়ে উঠেছি। ২০২৪শিক্ষাবর্ষে এইচ এস সি পাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার জন্য গ্রাম থেকে খুলনায় এসেছি চারুকলা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ার জন্য। একজন চারু শিল্পী হওয়ার স্বপ্ন দেখছি। আবার চারুশিল্পীরা ছবি আঁকার পাশা পাশি লেখালেখি করেন এবং কবি সাহিত্যিকরা বিভিন্ন লেখা লেখেন।
আমাদের মানব জীবনে বেঁচে থাকতে হলে সকলকে অন্ন গ্রহণ করতে হয়।
আর সেটি কৃষির মাধ্যমে কৃষক ফসল উৎপাদন করে আমাদের অন্নের যোগান দিয়ে থাকে।আমরা ইতিহাস বা বর্তমানে লক্ষ্য করলে পাই আমাদের পূর্বপুরুষ কৃষি নির্ভর ছিলেন এবং বর্তমান ও কৃষি চলমান আছে আমাদের সমাজে।
কিন্তু আমার দৃষ্টিতে বর্তমানে কৃর্ষি ব্যবস্থার উন্নতি হলেও বিগত ৫০ বছরেও কৃষকের উন্নতি বা পরিবর্তন সাধিত হয়নি। আগেকার দিনের জমিদাররা যেমন কৃষকের নায্য অধিকার না দিয়ে অত্যাচার চালাতো বর্তমানেও কৃষকের নায্য অধিকার দেওয়া হয় না। আমরা জানি একজন কৃষক ভূমিহীন হয়ে থাকে একারণে চাষাবাদের জন্য অন্য কারো জমি ইজারা নিয়ে চাষাবাদ করে। যার জন্য প্রতি বিঘাতে ১৫০০০-২০০০০টাকা দিতে হয় সেই ভূমিধরকে।
তাছাড়াও কৃষিকাজ সম্পন্ন এবং ফসল উৎপাদনের ক্ষেত্রে কৃষকের আরো অনেক অর্থ ব্যায় হয়ে থাকে কিন্তু যখন একজন কৃষক তার উৎপাদিত ফসল বাজারে বিক্রি করতে যায় তখন তার শ্রম এবং অর্থের সঠিক মূল্য না দিয়ে সামান্য অর্থ প্রদান করা হয়। কিন্তু যখন সে তার ফসল উৎপাদন করে তখন সে এক বিঘা জমি থেকে ১৪থেকে ১৬ মণ ধান উৎপাদিত হয় যার দাম ৮ -৯ শত টাকা কিন্তু একটি মৌসুমে ফসল উৎপাদনের জন্য একজন কৃষক যে পরিমান অর্থ শ্রম এবং সময় ব্যায় করে এই সামান্য অর্থ কী তার যোগ্য মূল্যায়ন?
আদৌও কী আমরা কৃষকের মর্যদা করে থাকি? আমি মনে করি না। একজন কৃষক এবং তার পরিবারের সদস্য গণ সমাজের বৈষম্যের শিকার হয়ে থাকে
যেখানে একজন কৃষকের চাষাবাদের দ্বারা সকলের মুখে দুমুঠো ভাত জোটে।সেই কৃষককে তার নায্য সন্মান দেওয়া হয় না। আবার একজন কৃষককে বিত্তবানদের সমাজে নিন্ম চোখে দেখা হয়। কৃষকের সন্তানদের চাষার বাচ্চা সহ বিভিন্ন ভাষায় ছোট করা হয় ।এজন্য একজন চাষার ছেলে হয়ে চাষির অধিকার আদায়ে কবির ভাষায় বলতে চাই.
দেখেছি আমি কৃষক জীবনের তরী।
যারা বিন্দু বিন্দু ঘাম ঝরায় কষ্টের কর্ম ঝুড়ি।
ওরা মাঠে কাজ করে ফলায় সোনার ফসল।
মূর্খ মোটেও নয়কো ওরা।
কৃষির মাষ্টার যে তারা।
ওরা রোদে পুড়ে চাষ করে বারোটা মাস।
ওরা মাটির বন্ধু
আমি সেই সবেতেই খুজে বেড়াই ওদের চলার সিন্ধু।
আমি অনেকদিন ধরেই আমাদের দেশের এই সমস্যাটি তুলে ধরার চেষ্টা করছিলাম এবং কিন্তু সাহস পাচ্ছিলাম না। আমি খুলনা আর্ট একাডেমিতে চারুকলা ভর্তি কোচিং এ ভর্তি হয়েছি বিশ্ববিদ্যালয় পড়ার জন্য। স্যার আমাদের ক্লাসে শিল্প সংস্কৃতির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। সেখান থেকেই
আমি এ বিষয়টি আমার দেশের মানুষের কাছে তুলে ধরার সাহস পেয়েছি। আমার স্যার চিত্রশিল্পী মিলন বিশ্বাসের সংস্পর্শে না আসলে হয়তো আমি এই সাহস পেতাম না। ২০১০ সাল থেকে এ পর্যন্ত স্যারের ২২১ জন শিক্ষার্থী চারুকলায় বিশ্ববিদ্যালয় পড়ার সুযোগ পেয়েছে।২০২৪ সালে ১৫তম ব্যাচ এর শিক্ষার্থী আমি। আজ আমি বুঝতে পারলাম স্যারের সকল শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় এত সুনাম অর্জন করে কেন। আমি চিত্রশিল্পী মিলন বিশ্বাস স্যারের শিক্ষার্থী হতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি।এজন্য আমি আমার স্যারের এর কাছে চির কৃতজ্ঞ। এই লেখাটি যারা পড়বেন সবাই আমার জন্য আশীর্বাদ করবেন আমি যেন ভালো একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করতে পারি, আমি একজন নবীন তাই লেখার মধ্যে যদি ভুল ত্রুটি থাকতে পারে।ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।আমি যেন আমার দেশকে ভালো কিছু উপহার দিতে পারি এবং আমি যেন সারাজীবন গুরুজনদের দোয়া নিয়ে আমার পিতা মাতার সকল আশা যেন পূর্ণ করতে পারি।