কয়েকদিন হলো গ্রামে এসেছি! অনেক টা শীত কালীন অবকাশ যাপন! ছেলেটা কোথাও ঘুরতে চায় Winter Vacation এ, আগে ম্যানিলা ব্যাংকক কুয়ালালামপুর সিঙ্গাপুর ইন্দোনেশিয়া কাঠমুন্ডু কলকাতা শিলিগুড়ি দার্জিলিং যেতাম! মক্কা মদিনা গেছি উমরাহ্ করতে একই সাথে পারিবারিক ট্যুর ও হতো!
কলকাতা হৃদয় পুর এক সপ্তাহ প্রতিবছর কাটাতাম!
দেশের টালমাটাল অবস্থায় বাইরে যাওয়ার সাহস হারিয়েছি! ভারত তো যাওয়ার প্রশ্ন-ই উঠে না! তাই গ্রামে আসা! দেখা হলো রাজনৈতিক কোন কোন নেতার সাথে। বিশেষ করে বিএনপির ইউনিয়ন সভাপতি উপজেলা সভাপতি, উপজেলা সেনা প্রশাসক
অফিস এখন নতুন অতিথি ভবন! দেখলাম সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোর উপজেলার শান্তিশৃঙ্খলা প্রশাসনে! একজন দেশপ্রেমিক মেজর তাবু দিয়ে অফিস করে বিপদগ্রস্ত মানুষের অভিযোগ শুনছেন!
কারো কাছে সংবাদ পেয়ে, বাসায় এক টিভি চ্যানেল সাংবাদিক এলেন একটা সাক্ষাৎ কার নিতে! অপ্রস্তুত ও ঘরোয়া পরিবেশে তারা অনেক জটিল প্রশ্নের সম্মুখীন করলেন!
প্রিয় পাঠক, আমার বিষয় গ্রামের উন্নয়ন, আইনশৃঙ্খলা ও গ্রামীন জনগোষ্ঠীর আন্তরিকতা!
রোজ প্রাতঃ ভ্রমনে বের হই! গ্রামের এমন কোন বাড়ী নাই যে বাড়ীতে এক তলা বা দোতলা বাড়ী তৈরি হয় নাই! মনে হয় যেন কোন প্রবাসী পাড়ায় এসেছি! খুব কম বাড়ী আছে যে বাড়ীতে একজন লোক প্রবাসে নাই!
এছাড়া জন আয় বেড়েছে গত ২০২০/২১/২২/২৩/২৪
অত্যান্ত দ্রুত গতিতে! এখন সে ক্রমবর্ধমান আয় কমেছে বলে অনেকের মন্তব্য!
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি থানা প্রশাসন, সেনা প্রশাসন অনেক নজর রাখার পরেও ছিনতাই চাঁদাবাজি জিম্মি বানিজ্য চলছে বলে অনেকে বলেছেন! সবচেয়ে অবক্ষয় হয়েছে মানবতা মনুষ্যত্বের! শালিসি বানিজ্য এবং ক্ষুদ্র পাতিনেতা দৌরাত্ম্যের কথা অনেকে বললেন!
সারা ইউনিয়ন প্রাতঃভ্রমণে ঘোরা হয়েছে বলা যায়! রাস্তার মোড়ে মোড়ে মানুষের আড্ডা আছে এত ভোর তবু ও! আলোচনা বাংলাদেশ থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্প মোদি হাসিনা ডঃ ইউনূস পর্যন্ত বিস্তারিত! আমি পৌঁছালে সে “জন আড্ডা” এড়িয়ে এগুনো কষ্ট! দেশ কোথায় যাচ্ছে, হাসিনা কবে আসতেছে, খালেদা না হাসিনা —? এমন সব বিবৃতকর প্রশ্ন, ডঃ ইউনূসের পক্ষে বলা যেন মৌচাকে ঢিল মারা! একটা হাই স্কুলে একজন নিয়ে গেলেন, ঘন্টা আলোচনার পর প্রধান শিক্ষক অনুরোধ করলেন, “যে কয়দিন আছেন রোজ আসবেন!”
মানুষের আন্তরিকতার কোন অভাব নাই! চা-বিস্কুট আতিথেয়তা এড়িয়ে ও ৫/৭ কাপ হাতে নিতে হয়,
গত দুদিন ধরে নাস্তা এবং লাঞ্চ যে বাড়ীতে বাধ্য হয়ে করতে হলো তাদের আমি চিনি না তারা আমাকে দারুন চিনেন! টাইলস ওয়ালা ফ্লোর, ঐতিহ্যের কোন ঘাটতি নাই! আতিথিয়েতা যেন আকাশ ছোয়া! বাড়ীতে ছেলে মেয়ে কেউ না কেউ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রী! প্রাতঃভ্রমণ সন্ধ্যা ভ্রমণে পরিনত হয়ে বাড়ী ফেরা!
একদিন দেখা নাট্য বন্ধু (জুনিয়র) রবীন্দ্রনাথের সাথে বাড়ীতে নিয়ে উচ্চ বিদ্যালয়র শিক্ষকা স্ত্রী কে বললো,”দেখো কাকে নিয়ে এসেছি!”
বেড়ে দিলো ভাত, যখন শহরে কেবল প্রভাত! গ্রামের মানুষ early to bed and early to rise —
সন্ধ্যায় এসে স্নান! যেখানে গভীর জঙ্গল ছিলো সেখানে দ্বিতল বাড়ী!
যার বাড়ী আজ লাঞ্চ করলাম তাদের পুরা পরিবার আমাকে চিনলেন, “এই সেই সিরাজ ইঞ্জিনিয়ার” প্রতিবেশী দেখতে এলেন মহিলা অধিকাংশ, জোর করে রোড থেকে বাড়ীতে টেনে নিয়ে লাঞ্চ করালেন কিন্তু আদৌ আমি চিনলাম না!
বাসায় পরিবারের লোকদের ভয় —
এমনি অচেনা, কোথায় যেন কেউ পয়জন খাওয়ায়!
এমন আদরে মরন যদি কারো হয় —
মরতে কি’বা এত অযাচিত ভয় ?
এ ধরা ধাম ছেড়ে যেতে তো হবে নিশ্চয়
অমর কোথা কবে কে রয়, এ ধরায়!
কত জ্ঞানী গুনি মণি ঋষি
চলে গেলো এ ক্ষিতিসে আসি —
অমর তো রইলো না কেহ
আমার ও হবে বিনাশ, ভূতলে নশ্বর এ দেহ!