লেখক: অথই নূরুল আমিন।
একথাটি সবার জানা, ছাত্রলীগ অনেক পুরাতন একটি ছাত্র সংগঠন বটে। তারা ৫২ ভাষা আন্দোলন সহ ৬৯ ' ৭০' ৭১' ৭২ ' ৯০ সহ একদম ২০২৪ পর্যন্ত। সবকিছুতে তারা ছিল। তারপর তাদের বর্তমান অশুভ কার্যক্রমের জন্য আজকে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ। তবে কথা থাকে ২০০৮ থেকে ২০২৪ এই ষোল বছরে ছাত্রলীগের ভালো কোন বিষয় খোঁজে পাওয়া যায়নি। একথাটি সত্যি সত্যি তিন সত্যি করেই বলা যায়।
আমার ধারণা ছিল, আওয়ামী লীগ যেখানে ক্ষমতায় সেখানে ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে দেশের সকল ছাত্রদেরকে নিয়ে বিভিন্ন দাবি জানাবে। এবং শিক্ষার মান আরো উন্নত করতে তাগাদা দেবে। পড়ার খরচ কমানোর কথা বলবে ইত্যাদি ইত্যাদি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সরকারি বেসরকারি শিক্ষাঙ্গনে বৈষম্য দূর করার ব্যবস্থা নেবে খুবই জোরদার ভাবে।
কিন্তু না,তা আর হয়নি। ছাত্রলীগ তাদের ক্ষমতা ভুল পথে চালিয়ে দিল, চাদাবাজী, টেন্ডারবাজি, ছিনতাই ধর্ষণ,খুন- খারাপি কাজে জড়িয়ে গেল। ছাত্রলীগ গোটা জাতির কাছে তারা অপছন্দের হয়ে গেল। কথা কিন্তু সত্যি। ছাত্রলীগ যদি দেশের ছাত্র সমাজ নিয়ে সরকারের কাছে কোনো প্রস্তাবই দেয়নি। তাহলে ছাত্রলীগ দিয়ে ছাত্র সমাজের কি দরকার?
এদিকে ছাত্রদল তারা কিন্তু গত ষোল বছরে যদিও তেমন কিছু করতে পারেনি। তবু যথেষ্ট শক্তিশালী ছিল ছাত্রদলের ভূমিকা। এটা বলাই যায়। কিন্তু তাদেরও দেশের ছাত্র সমাজ নিয়ে, বেতন কমানো, সেশনজট কমানো, শিক্ষা উপকরণের দাম কমানো, এরকম কোনো প্রস্তাব সরকারের কাছে করতে শুনিনি কখনও। আসলে আমি ভেবে পাইনা। ছাত্রদের রাজনীতি কিসের জন্য, কিসের স্বার্থে তা কিন্তু আমি আজও বুঝে উঠতে পারিনি। তবে আমি জানি ছাত্রশিবির তারা ইসলামী ধারার কিছু শিক্ষা চায়। এটা তাদের গঠন কাঠামোতে আছে। ছাত্র ইউনিয়নভুক্ত ছাত্রদের রাজনীতি কেন এবং কি কারণে তাও এখনো বুঝা যায়নি পরিস্কার ভাবে।
যাই হোক, ছাত্রলীগ আওয়ামী লীগের একটি সংগঠন ছিল। ছাত্রদল বিএনপির একটি সংগঠন। ছাত্রশিবির বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর একটি সংগঠন। ছাত্র ইউনিয়ন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অঙ্গ সংগঠন বটে।
এদিকে ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি। তাদের কিন্তু আর কোনো মুল দল নেই। তারাই প্রথম তারাই শেষ। এখন প্রশ্ন হলো, এই ছাত্রদের রাজনৈতিক দল নিয়ে কিন্তু পঞ্চমুখী জল্পনা কল্পনা চলছে। কি করবে তারা? কি করতে চায় তারা? কেন এরকম দল হঠাত করে গঠন করল। তাদের উদ্দেশ্য মুলত কি? আমারও কথা একটাই। তাদের রাজনৈতিক দলের মুল বিষয় বস্তু কি? তারা কি দেবে নির্বাচনী ইশতেহার? কারা তাদের পৃষ্ঠপোষক। কারা তাদের ভোটার?
এটা কি ছাত্র রাজনীতি নামে পরিচিত হবে নাকি সরাসরি রাজনৈতিক দল হিসেবে গড়ে উঠবে? জাতীয় নাগরিক পার্টিতে কারা সদস্য হতে পারবে? তা কিন্তু এখনো স্পষ্ট নয়। দেখা যাক। তারা কি দেশের আপামর জনগণের জন্য নাকি শুধুমাত্র ছাত্রদের জন্য। তা হয়তো খুব শিঘ্রই জানা যাবে। বিশেষ করে দলীয় মার্কা পাওয়ার পর। তবে চতুর দিকে তাদেরকে নিয়ে বিতর্ক কিন্তু ছাড়ছে না। এখনো তারা বিতর্কের সাগরের মাঝখানেই আছে। তা কিন্তু নিশ্চিত করেই বলা যায়।
অথই নূরুল আমিন,
কবি কলামিস্ট ও রাষ্ট্র বিজ্ঞানী।