লেখকঃ ইঞ্জিঃ মোঃ সিরাজুল ইসলাম।
বাংলাদেশে এমুহূর্তে “অপারেশন ডেভিল হান্ট” অভিযান চলছে! “শয়তান শিকারে” ৫ দিনে তিন হাজারের উপরে গ্রেফতার হয়েছে প্রায়! কারা “শয়তান”, তার সজ্ঞা, কি দেয়া হয়েছে তা স্পষ্ট নয়? যিনি ঘোষণা করছেন কোন ব্যক্তি বা দলকে উৎখাত করতে, তার বাড়ীঘর ভাঙতে, জনগণকে একত্রিত হতে আহ্বান জানাচ্ছেন তিনি ” “শয়তান” নাকি যিনি বেঁচে থাকার জন্য নিজ ঘরবাড়ী রক্ষার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন, তিনি শয়তান? কাকে নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গ্রেফতার করবেন? আদালত থেকে রায়ে “কনভিকটেড” ব্যক্তি ছাড়া কাউকে কি “শয়তান বা কাল পিট” আখ্যা দিয়ে নিবর্তন মূলক গ্রেফতার করা যায়? তা হলে আযান দিয়ে যাদের “স্বৈরাচার” বলছি তাদের থেকে বর্তমান সরকারের পার্থক্য থাকে কই? আমরা তো সামরিক শাসনের অধীনে নই, সিভিল শাসন, তা হলে চলয়মান সংবিধানে ইচ্ছে হলে ধরে আনো অনেকটা লেজেগোবরে প্রশাসনিক দায়িত্ব হয়ে যাচ্ছে না?
আমার নিজ উপজেলায় ও গ্রেফতারের হিড়িক পড়ছে! প্রশ্ন হলো “শয়তান শিকার” হোক কিন্তু একচোখা দৃষ্টিতে হলে সরকার সমালোচিত হন দেশে এবং বিদেশে! ব্যক্তির হিংসা চরিতার্থ হচ্ছে, ব্যক্তিগত শত্রুতার প্রতিফলন ঘটছে, এমনটা ১৯৭১ এ বঙ্গবন্ধু দেখে “সাধারণ ক্ষমা” ঘোষণা করেছিলেন, জনগন প্রতিহিংসার থেকে বেঁচে গেছিলো! এমন অভিযানে নিরপেক্ষতা রক্ষা হলে সরকারের সমর্থন বাড়বে!
প্রিয় পাঠক, আমার বিষয় “মুছে দেয়া যায় না কোন আদর্শ”! ১৯৭১ সাল, তার আগেই পাকিস্তান সরকার নিষিদ্ধ করেছেন রবীন্দ্রনাথ নজরুলের কোন সংগ্রামী গান বাজানো যাবে না রেডিও টেলিভিশনে! রবীন্দ্রনাথ একদমই নিষিদ্ধ! বলা হলো ধর্মীয় গান প্রচার করতে।
শুরু হলো ধর্মীয় গান প্রচার! দারুন সব গান, বাংলা উর্দু মিলে! টেলিভিশন রেডিও থেকে ভেসে এলো ” হে মাওলা মেরি কিস্তি ওপারে লিয়ে দে —
অর্থাৎ হে আল্লাহ আমার নৌকা ওপার নিয়ে দাও, মানে সেই মুজিবের নৌক!
গতকাল ছোট একটা অনুষ্ঠানে একটা আবৃত্তি দিতে সুযোগ পেলাম, সেখানে অনেক খেলাধুলার আয়োজন হয়েছে! অনেক রাইডিং আছে, বাচ্চাদের জন্য। আমি আমার লেখক দৃষ্টি দিয়ে দেখলাম আওয়ামীদের তাড়িয়ে যারা ওখানকার দখল নিয়েছে সবাই বিএনপি ছেলেরা। তারা আমাকে একটা রাইডিং এর ছবি তুলে দিলো, একজন কে চিনি, আওয়ামী ঘরোনার লোক, বললাম, একি, এতো হাসিনার নৌকা! হেসে বললো, আমি দায়িত্বে ছিলাম, এটা আমার চয়েজ। মিশে গেছে বিএনপি তে খোলস পাল্টে। ছবি টা দেখবেন!
তাই বলেছিলাম, কিছুই মুছে দেয়া যায় না! না কোন আদর্শ না কোন জাতীয় নেতা কে! ভাঙা যায় তার বাড়ী ঘর কিন্তু মোছা যায় না মানব হৃদয় থেকে! সেই বৃটিশ পাকিস্তান আমলে ও চেষ্টা হয়েছে! মুছে যাবেন হাসিনা খালেদা এরশাদ রা কিন্তু জর্জ ওয়াশিংটন লেলিন জহির শাহ বেল বেলা গাদ্দাফি গান্ধী জিন্নাহ মুজিব,
তারা জাতির জনক, মুছে যাবেন না ইতিহাস থেকে!
ভালো থাকেন সুস্থ থাকেন নিজ দেশেকে ভালোবাসেন!