লেখকঃ অথই নূরুল আমিন
আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলো আজকে হঠাৎ করে কেমন জানি দুর্বল দুর্বল একটা ভাব দেখা যাচ্ছে। অনেকগুলো রাজনৈতিক দলগুলোকে আমার কাছে এতিমের মত খুবই অসহায় মনে হচ্ছে। কোথায় তাদের দাপট। কোথায় তাদের হুংকার?
প্রিয় পাঠক, আশাকরি সবাই ভালো আছেন, আজকে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক দলগুলো নিয়ে রয়েছে এক মজার আলোচনা। আলোচনাটা হলো, প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস দেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেয়ার পর পর দেশের বেশকিছু রাজনৈতিক দলগুলো মনে করেছিল। ইউনূস সাহেবকে যা বলবে। তিনি তাই করবেন। এরকম একটা বিশ্বাস রাজনৈতিক বেশকিছু দলের নেতাদের মাঝে ছিলো।
কিন্তু রাজনৈতিক দলের নেতাদের কানে পানি ঢুকে গেলো। যেদিন জাতিসংঘের মহাসচিব বাংলাদেশে এলেন। তাও আবার একজন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধানের আমন্ত্রণে। এরকম একটি বিষয় যেন সত্যি নজির বিহীন। এর মধ্যে বিদেশী বেশকিছু রাষ্ট্র দ্রুতের সাথে প্রফেসর ইউনূসের রয়েছে গলায় গলায় ভাব।
যা অন্য কোনো ব্যক্তি প্রধান উপদেষ্টা হলে যা কখনও এরকম হতো না।
কথা থাকে যে, প্রফেসর ইউনূসের মাঝে এমন কি আছে? সারা বিশ্ব একযোগে ইউনূসকে মেনে নিলো কিভাবে বা কেন? অবশেষে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছ থেকেও তিনি সমর্থন আদায় করে নিলেন। এমনকি বিশ্বের কোনো নেতাই ইউনূসকে নিয়ে কোনো বিতর্কে যাননি।
এদিকে বতর্মান চীন সফর যেন প্রফেসর ইউনূসের কদর আরো বেড়ে গেলো। ইউনূস সাহেব চীনে যাওয়ার পর সত্যি সত্যি বাংলাদেশের একজন প্রধানমন্ত্রীর চেয়েও বেশি সম্মান এবং বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় খুব দ্রুতই হয়ে গেলো। যা বাংলাদেশের জনকল্যাণে অনেক ভূমিকা রাখবে বলে খবরে প্রকাশ।
এখানে আমরা যদি একটু চিন্তা করে দেখি। তাহলে দেখা যাবে। প্রফেসর ইউনূস একজন নোবেলজয়ী ব্যক্তিত্ব। তিনি একজন বিগ ব্যবসায়ী এবং সমগ্র বিশ্বব্যাপী একজন সুপরিচিত গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি। যার রয়ছে সোস্যাল বিজনেস। সবচেয়ে বড় কথা হলো তিনি একজন বিলিয়নিয়র।
এদিকে আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলার মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ছাড়া বাংলাদেশে আর কোনো রাজনৈতিক দলের দলীয় ব্যাংক একাউন্টে পাঁচ লাখ টাকার বেশি নেই। এমন দলের সংখ্যাই বেশি। আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলো যেন একেবারেই ছন্নছাড়া। ঢাল নেই তলোয়ার নেই নিধিরাম সর্দার। এই রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ নিজ দলের কর্মী সমর্থকেরাই বিশ্বাস করে না প্রথমত। একটি রাজনৈতিক দল যদি ঘোষণা দেয়, প্রতি মাসে পঞ্চাশ টাকা করে দলীয় ফান্ডে সবার চাদা দিতে হবে। তাহলে দেখবেন। পরের মাসেই অর্ধেক নেতাকর্মীরা নাম কাটিয়ে চলে গেছে। এভাবে প্রতিমাসেই সদস্য কমতে থাকবে। এই হলো রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থা।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ব্যাংক ভর্তি টাকা ছাড়াও তাদের রয়েছে বেশকিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং সেবামূলক প্রতিষ্ঠান বা সংগঠন। আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলো যে, অর্থহীন ছন্নছাড়া এসকল খবর কিন্তু বহিঃ বিশ্বের প্রায় সবারই কমবেশি জানা আছে।
১৯৯১ সন থেকে ২০২৪ পর্যন্ত যে দলগুলো বাংলাদেশে ক্ষমতায় এসেছিল। তারা কিন্তু দেশের জনগণকে একদম বোকা বানিয়ে ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে ছিল। দেশের জনগণ এই রাজনৈতিক দলগুলোকে অন্ধ বিশ্বাস করেছিল। কিন্তু এই দলগুলো বারবার জনগণের বিশ্বাস ভঙ্গ করেছে। প্রফেসর ইউনূস ২০২৪ এর ৮ আগস্টে রাষ্ট্রের প্রধান উপদেষ্টা না হলে জনগণ আজও জানত না। দেশের রাজনৈতিক দলগুলার যে এত বড়ো দুর্বলতা রয়েছে।
একটি বৃহৎ দলের হঠাৎ পতনের পর ইউনূস ছাড়া অন্য ব্যক্তি এই রাষ্ট্রের প্রধান উপদেষ্টা হলে বিশ্বের অনেক মোড়ল দেশের প্রধানেরা এসে কত কথা বলত। কত ভুল ধরত আর কত মাতুব্বরী করার চেষ্টা যে করতো। তা লিখে শেষ করার মত নয়। আজকে সম্পূর্ণ গরম ভাতে ছালি।
এখানে সবচেয়ে বড় ভূমিকা হলো প্রফেসর ইউনূস এর অর্থ। আর্থিক সমর্থনটা অনেক বড়। তাই জাতিসংঘ আমেরিকা, চীনসহ বিশ্বের বেশকিছু দেশ ইউনূস সরকারের সাথে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করছে। তাই দেখে বাংলাদেশের অর্থ ও সামর্থহীন রাজনৈতিক দলগুলোর কথা বলার সুর দিনদিন নরম হয়ে আসছে। দেশের অর্থহীন রাজনৈতিক দলগুলার শুভ বুদ্ধির উদয় হোক। তারা যেন ইউনূস এর কাজকর্ম দেখে অখুশি না হয়ে ভালো কিছু শেখার চেষ্টা করেন। এই প্রত্যাশাই রইল।