লেখক: ইঞ্জিঃ মোঃ সিরাজুল ইসলাম।
গাঁজায় শরনার্থী শিবিরে এবং পলায়নরত ফিলিস্তিন বাসীর উপর এয়ার এ্যাটাক বাড়িয়েছে ইসরায়েল! নেতানিয়াহুর পাশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন আছে এবং বাৎসরিক প্রায় ৩/৪ বিলিয়ন আর্থিক সাহায্য চলে আসছে ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল নামক পরগাছা রাস্ট্র টার স্বীকৃতির পর থেকে! এই অর্থ একঢিলে তিন পাখী মারার কাজ করে মার্কিন, অস্ত্র গোলাবারুদ বিক্রি, ইসরায়েল কে energetic করে আরবীয় মুসলিম দেশগুলো মার্কিন পদানত রাখতে, মুসলিম নিধন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চালায় পরোক্ষভাবে! সেই যে রুজভেল্ট ট্রুম্যান কি বিষফোড়া গজিয়ে দিলেন ফিলিস্তিন ভূখন্ডে এবং ডিমারকেশন কঠোরতা পালন ও বাধ্যতা মুলক না করায় ইসরায়েল রোজ ফিলিস্তিন ভূখন্ড দখলে নেয়!
প্রিয় পাঠক, আজ পর্যন্ত ইসরায়েল আক্রমণে কম পক্ষে ২ লক্ষ মানুষ মৃত্যু বরন করেছে, ১৯ লক্ষ ফিলিস্তিন দেশ ছেড়েছে! স্লো পয়জন মৃত্যুর চেয়ে একসাথে মরা ভালো এই প্রতিজ্ঞায় গত বছর ৭ ই অক্টোবর হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েল আক্রমণ করে এবং লেবাবন ইয়েমেন বাহরাইন সিরিয়া ইরাক প্রতিরোধ বাহিনী ও সহযোগী যোদ্ধা হিসাবে এক যোগে যুদ্ধ করে যাচ্ছে। এই একবছরে একলক্ষ তিন হাজরের মত ফিলিস্তিন মারা গেছে, লেবাননে একহাজার তিনশো জনের মত!
আমেরিকা সর্বাত্মক সহযোগিতা চালিয়ে যাচ্ছে অর্থ অস্ত্র ও জাতিসংঘের ভেটো! মোট আমেরিকার ভোটোর সংখ্যা ৪৮ বার ইসরায়েল কে রক্ষা করতে এবং ১৫ বার ১৯৯১ থেকে ২০১১ পর্যন্ত ফিলিস্তিন কে সন্ত্রাসী আগ্রাসী বানায় তার উপর জাতিসংঘের স্হায়ী ব্যবস্হার জন্য। অথচ যত ছোট হোক ফিলিস্তিন নামক দেশটার স্বীকৃতি হলে বরফের মত ঠান্ডা হয়ে যায় আরব বিশ্ব!
জাতিসংঘের সদস্য রাস্ট্র ১৯৬ টার ১৯৪ টা স্বাধীন ফিলিস্তিন পক্ষে, অর্থাৎ একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা ফিলিস্তিনের আছে!আমেরিকা শুধু বাধা হয়ে দাড়ায়! অথচ আমেরিকা বিশ্বের দুর্বল দেশগুলোর মানবতা মনুষ্যত্ব তাকওয়া পূর্ণ জীবন দাত্রী, আবার কোন দেশের সরকার Genocide করলো, কোন দেশ নতুন Independent আওতায় এলো, কোন দেশে গনতন্ত্র ধ্বংস হলো এসবের মুনকিরনাকির ফেরেশতা তারা!
ইরান বিশ্বে জ্ঞান বিজ্ঞান সমৃদ্ধ মুসলিম দেশ, তাকে ঘায়েল করা হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান টার্গেট। তার উপর নিষেধাজ্ঞা অস্ত্র চালায় আসছে বহু বছর, বিশ্বের ৭/৮% তেল ইরান উত্তোলন করে কিন্তু তার তেল বিক্রির উপর নিষেধাজ্ঞা দীর্ঘ দিনের!
আজ আমেরিকা যখন ইসরায়েল কে দিয়ে ইরানের পারমাণবিক অস্ত্রাগারে হামলার হুমকি দিচ্ছে তখন রাশিয়া তার পাশে এসে দাড়িয়েছে। পাঠিয়েছেন পুতিন সামরিক কুচকাওয়াজে ভারত মহাসাগরের নৌ মোহড়ায়
তার পরমাণু অস্ত্র সমৃদ্ধ নৌবহর! আছে ইরানের পাশে চীন, উত্তর কোরিয়া, ওমান হয়তো তুরস্ক, আরো ৯ টা দেশ On Observation to join. গত শনিবার থেকে সে মোহড়া শুরু হয়েছে!
ইরান যখন পরমাণু অস্ত্র পারস্য উপসাগরে পরীক্ষা চালায়, রাশিয়ার সাথে নৌমোহাড়া দেয় বাংলাদেশের মুসলমান রা তখন ইরানের শিয়া সুন্নি পার্থক্য খোঁজে, মাজার ভাঙে, নারীর হাত-পা বাঁধে, বিজ্ঞান শিক্ষিতদের কাফের নাস্তিক বলে গলদঘর্ম, আল্লাহ রেখে মার্কিন কে দেবতা বলে, কেন সাংবাদিক লেখকদের গ্রেফতার করা হয়েছে তার ব্যাখ্যা দিতে মার্কিন বিদেশ দপ্তরের কেউ বাংলাদেশের আভ্যান্তরীন বিষয় নিয়ে অবস্থান করেন যেন দায়িত্ব প্রাপ্ত!
পাঠক, আমার মায়ের ইন্তেকালে আমি মানসিক অবসাদগ্রস্ত, গ্রামে মাকে কবর দিতে আমি শুধু দর্শক। কওমি অনেক হুজুর আগমন এবং মায়ের লাশ বহনকারী লোক কারা হবেন সে ফতোয়া দেখে আমার চক্ষু চড়কগাছ। আমার ভাতিজা শোকাহত একজন খাটিয়ায় হাত লাগানোতে তাকে বেধড়ক ধমকানো হলো, যিনি ধমকালেন তিনি এমন একজন লোক যিনি কোনদিন স্কুল মাদ্রাসা মুখো হন নাই কিন্তু ৯৫ বছর বয়সী আমার মা একজন নারী লাশ হেফাজত এবং বেহেশতে দোযখ তার নখদর্পনে!এত উপস্থিত জনতার ভিতর ও বিষয়টা আমার নজর এড়ালো না অথচ ঢাকায় লাশ গোসলে নেয়া, লাশ বাহি ডিপ ফ্রিজ গাড়ীতে তোলায় অংশ নিয়েছে আমার ছেলে ও ভাইয়ের ছেলে অর্থাৎ মরহুমার পৌত্র এবং দু’জন দারোয়ান লাশের খাটিয়া বহন করেছে!
পারিবারিক কবরস্থান গ্রামবাসীর জন্য করা, সেখানে এক হাজার টাকা হাদিয়া নিতে কোন ধর্মীয় বাঁধা দেখলাম না যে মাদ্রাসা মসজিদ করব স্হানের আমি প্রতিষ্ঠা সভাপতি কিন্তু ক্যাশ তাদের হাতে যারা ব্যবসা বোঝে! দুদিন মাত্র আমার মা নামাজ পড়তে অপারগ ছিলেন দুর্বলতার কারনে, সে জন্য জরিমানা হিসাব মত দিয়ে মাকে দায় মুক্ত করতে হলো!
শুধু আমার মাকে বেহেশতে প্রবেশের সনদটা তারা দিতে পারলো না! আমার মা ৯৫ বছর বয়সে কত-শত মানুষের প্লেটে ভাত দিয়েছেন, সন্তান মানুষ করেছেন, কতজনকে সাহায্য সহানুভূতি দেখিয়েছেন, গ্রামে তাদের মায়ায় ছুটে গেছেন, ঢাকায় থাকতে চান নাই, সেখান থেকে ঢাকায় যত্ন বেশী কিন্তু তা ফেলে গেছেন গ্রামে, ১৯৭১ সালে কয়েকশো হিন্দু কে আশ্রয় দিয়েছেন — অগণিত উপকার করেছেন তিনি ও তার রোপিত গাছ আমরা সন্তানেরা, এতকিছু আল্লাহ দেখে বিচার করবেন নাকি মৃত্যুর পর আমার মায়ের নির্জীব অবস্থায় কে খাটিয়া বহন করলো তার উপর সারাজীবনের আমল নামা শেষ হয়ে গেলো? —— ইসলাম কে জটিল থেকে জটিলতা করে বিশ্বে নাস্তিক সংখ্যা বাড়ানোর জন্য কারা দায়ী? করা আরো ৫৭ টা মুসলিম দেশের মধ্যে আরো ২০ টা ইরান বানাতে বাঁধার সৃষ্টি করলো —- বিজ্ঞান শিক্ষা হারাম বলে!