বিলকিস নাহার মিতু:
নদীমাতৃক দেশ আমাদের বাংলাদেশ। ছোট-বড় অসংখ্য নদী জালের মতো ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। এক সময় এই নদী গুলো থেকে প্রচুর মাছ পাওয়া যেতো কিন্তু বর্তমানে তা অনেকাংশেই কমে গিয়েছে। আর এই কমে যাবার অন্তরায় হচ্ছে নদীতে প্রচুর বর্জ্য ফেলে নদীকে দূষণ করা। নদীর তীরবর্তী স্থানে রয়েছে কলকারখানা, ইটের ভাঁটা, দোকানপাট ইত্যাদি। কলকারখানার সমস্ত বর্জ্য এই নদীতেই ফেলা হয়। এছাড়া যারা হাঁস মুরগির দোকান দেয় তারা হাঁস মুরগির বিষ্ঠা এমনকি মৃত হাঁস মুরগিও নদীতে ফেলে। বিভিন্ন জলযান থেকে নিষ্কাশিত তেল নদীর পানিতে মিশে নদীকে দূষিত করে। শুধু এই না নগরের ময়লাও ফেলতে দেখা যায় নদীতে। অনেক হোটেল এবং রেস্টুরেন্টের উচ্ছিষ্ট খাবার অবাধে নদীতে ফেলা হচ্ছে। এর ফলে নদী দূষিত হয়ে নদীতে বসবাসকারী প্রাণীদের প্রতিকূলতা তৈরি হচ্ছে। যেসব প্লাস্টিক বা পলিথিন নদীর পানিতে ফেলা হয় তা মাছ খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করলেও তাদের হজম হয়না এবং এর ফলে মাছের মৃত্যু ঘটে। এ কারণেই মাছের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। শুধু মাছই না যেসব তিমি বা ডলফিন রয়েছে তাদের জন্যও বিরূপ পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। নদীর পানিতে যারা গোসল করে বা নদীর মাছ যারা খাচ্ছে তাদের দেখা দিচ্ছে চর্মরোগ, শ্বাসকষ্ট এমনকি প্রাণঘাতী ক্যান্সার সহ নানান রোগের প্রাদুর্ভাব।
নদীকে বাঁচালে বাঁচবে দেশ। তাই দ্রুতই এর পদক্ষেপ আমাদেন গ্রহণ করা উচিত। নদী থেকে দূরে কলকারাখানা, দোকানপাট স্থাপন করতে হবে। অবাধে বর্জ্য ফেলা বন্ধ করতে হবে। প্রয়োজনীয় শোধনাগার তৈরি করতে হবে। জলযান গুলো মেরামত করতে হবে যেন তেল নদীতে না মেশে। নদী ভরাট বন্ধ করা জরুরী। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নজর রাখা উচিত কারা নদীতে বর্জ্য ফেলে তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করা। সরকারের দৃষ্টি রাখা উচিত নদী রক্ষার জন্য। সর্বোপরি আমাদের সকলকে সচেতন হতে হবে।
বিলকিস নাহার মিতু,
সরকারি বি এল কলেজ, খুলনা।