অথই নূরুল আমিন
============
আসন্ন সংসদ নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এগিয়ে যাচ্ছে খুবই দ্রুত। সংস্কার চলছে পঞ্চমুখী। রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য প্রস্তুতি ও নিচ্ছে সতর্ক ভাবে। তবে বতর্মানে সবচেয়ে সুশৃঙ্খলভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। বেশকিছুদিন ধরে তাদের মিটিং মিছিল প্রচারণা চলছে দিনের আলোর মত চোখে পড়ার মত। এদিকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভালো কাজ ও বিভিন্ন কর্মসূচি দেখছে এবং দেশের ভোটারদের একটা বড় অংশ জামায়াতের দাড়ি পাল্লা মার্কায় ভোট দেবেন বলে সর্ব জায়গায় আলোচনা চলছে সরগরম।
আমার কথা হল, দেশের জনগণ প্রথমত শান্তি চায়। দেশের জন্য রাজনৈতিক দলগুলো ভালো কিছু করুক। তাও চায়। তবে বিগত সরকারগুলোর আমল গুলো খুবই দুঃখজনক ছিল। বিশেষ করে রাজনৈতিক দলগুলো বিগত সময়ে যারাই ক্ষমতায় এসেছে। তারাই উন্নয়ন আর উন্নয়ন করছে বলে সময় নষ্ট করেছে। দেশের সুবিধাবঞ্চিত ষাট ভাগ জনগণের সাথে করেছে প্রতারণা। অন্য দিকে তারাই সেইসব উন্নয়নের নামে দুর্নীতি করেছে। বিগত সরকার গুলোর কাছে কোনরকম সুযোগ সুবিধা পায়নি, বিশেষ করে দেশের ষাট ভাগ সুবিধাবঞ্চিত মানুষেরা। অন্য দিকে যে দল যখন ক্ষমতায় এসেছে। সেই দলের নেতাকর্মীরা দেশের সাধারণ মানুষ জনকে তাদের ইচ্ছে মত শোষণ করেছে বিভিন্নভাবে। জনগণের ভোটের সরকার গুলো মূলত। কেউই সাধারণ জনগণের কোন দাবী তারা পূরণ করেনি।
একটি রাজনৈতিক দলের কাছে জনগণ মূলত ভাত কাপড় চায় না। দেশের সুবিধাবঞ্চিত ষাট ভাগ জনগণের দাবী ছিল, অতিতের সরকার গুলোর কাছে। তারা যেন নিত্য পণ্যের মূল্য কমিয়ে রাখে। তারা যেন পেঠ ভরে মোটা ভাত আর পরনে যেন মোটা কাপড় থাকে। তাদের সন্তানরা যেন একটু লেখাপড়া করতে পারে।
দেশের ভূমিহীন, গৃহহীনরা যেন সরকারের সহযোগিতায় একটু আশ্রয় পায়। দেশের সুবিধাবঞ্চিত জনগণের এরকম ছোট ছোট চাওয়া পাওয়া গুলো না মিটিয়ে, বিগত রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতায় এসে বিশ্ব দরবারে দামি হবার জন্য, তারা প্রতি মঙ্গলবারে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (একনেক) সভায় হাজার হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকল্প অনুমতি দেয়। শুধুমাত্র কমিশন বাণিজ্য করার জন্য। মন্ত্রী এমপিরা সেই কমিশনের ভাগ প্রকাশ্যে নিতে ও সরাসরি জনগণ দেখেছে।
অথচ বিগত সরকার গুলো একবারও ভাবেনি। দেশের ষাট ভাগ মানুষকে ক্ষুধার্ত রেখে কোনভাবেই দেশ উন্নয়ন করা সম্ভব নয়। লোভী সরকার গুলো একবারও ভাবেনি। দেশের মানুষ যদি সরকারের প্রশংসা না করে। তাহলে রাস্তা ঘাট ব্রিজ উড়াল সেতু কি তাদের প্রশংসা করবে? না কখনও করবে না।
লক্ষ্য করে দেখা গেছে। জাতীয় নির্বাচনে মূলত গরিব ভোটারদের সংখ্যাই বেশি। তারা দীর্ঘ লাইনে ভোট দেয় আর আশায় বুক বাধে। অথচ সরকার গঠনের পরেই সরকারের মন্ত্রী এমপি গুলো একদম ভুলে যায় গরিব ভোটারদের কথা।
এখানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে বন্যার সময় দেখলাম। ভানবাসী মানুষের পাশে ছিলেন দলের আমীর সহ ছাত্র শিবিরের সক্রিয় দক্ষ ভূমিকা। খুবই নিয়ম শৃংখলা নিয়ে তারা প্রায় সবাই অসহায় মানুষদের পাশে ছিলেন। এছাড়া জুলাই আন্দোলনে নিহত- আহত প্রায় সকলের মাঝে যোগাযোগ রাখা হয়েছে তাও খুবই সুন্দরভাবে। এই কর্মসূচি গুলো দেশের জনগণ খুব ভালো করে পরখ করেছেন। তাই সারাদেশ জুড়ে আজকে খুব নীরবে জামায়াত নিয়ে আলোচনা চলছে। ভোটটা এবার জামায়াতকেই দেব বলে নিজেরাই প্রতিজ্ঞা করছে। প্রকৃতপক্ষে জনগণের চাওয়া পাওয়া কিন্তু একটি সরকারের কাছে খুব বেশি থাকে না। এই সামান্য চাওয়া পাওয়া পূরণ করতে। বিগত সময়ের সরকারে আশা রাজনৈতিক দলগুলো ব্যর্থ হয়েছে বারবার। তাদেরকে জনগণ এবার নিরাশ করবে। এরকম আলাপ আলোচনা সব জায়গায় চলছে।
===================
অথই নূরুল আমিন,
কবি কলামিস্ট ও রাষ্ট্র বিজ্ঞানী।