ধর্ম একটা বিশ্বাস! অদেখা অচেনা আকৃতি প্রকৃতি হীন কোন শক্তিকে বিশ্বাস করে তার উপসনা করা, তাকে নিজের ইহকাল পরোকাল
সমর্পণ করা! তার নামে কিছু ন্যায় অন্যায় মেপে দূরত্ব বজায় রাখা! মানুষ আসলে প্রকৃতির কাছে খুব অসহায় তাই সেই অসহায়ত্ব কলে তার আশ্রয় প্রার্থনা করে মানসিক স্বস্তি পাওয়া! ঝড় প্লাবন সাইক্লোন মহামারী করোনা প্লেগ ব্লাকডেড ইত্যাদি সময় মানবের শেষ আশ্রয় স্হল সেই অদেখা শক্তি। সারা বছর চুরি ডাকাতি রাহাজানি দাম্ভিক হিংসুক পরার্থ লোভী কিন্তু প্রকৃতির জ্বালে আটকে গেলে মহা ধার্মিক, ছুটোছুটি মসজিদ মন্দির গির্জায়।
আবার তা ও শত ভাগ বিশ্বাস রাখে তা বলা যাবে না। গত বিশ্ব মারী কোভিডের সময় খোদ ধর্মগুরু পোপ তার ভ্যাটিক্যান গির্জায় হাজিরা বন্ধ করেছেন, পবিত্র কাবা মক্কা মদিনায় উপাসনার জমায়েত বন্ধ করা হয়েছে, গয়া কাশি বৃন্দাবন জাতায়াত বন্ধ করা হয়েছে!
কেউ বলেন নাই আমি আল্লাহ ভগবান ঈশ্বর দর্শনে মরতে ভয় পাই না তার উপাসনালয় যাবে-ই যাবো!
প্রিয় পাঠক, তার অর্থ আল্লাহ ভগবান বিশ্বাস ততটা গাঢ় নয় যতটা আত্মসমর্পণ ধর্মে বলা হয়। জীবন দিয়ে মন্দির মসজিদ ভাঙতে শহীদ হতে ভীত নই কারন ওখানে আছে ধার্মিকতা থেকে রাজনীতি বেশী! আমরা যারা লেখালেখি করি, সত্যি লিখলে, কুসংস্কারের বিরুদ্ধে লিখলে মাদ্রাসা মসজিদ মন্দির ফান্ড চোর কে নিয়ে সমালোচনা করলে, আমরা নাস্তিক! এমন অস্ত্র ব্যবহার হয় যন্ত্র তন্ত্র ! আমি শতবার এ অস্ত্রের আঘাতে জর্জরিত অথচ সুদ ঘুষ মিথ্যা হিংসা-বিদ্বেষ পরার্থ সুযোগ থাকা সত্বেও নারী ভোগী বা অর্থ আয়ে নিজেকে উৎসর্গ করি নাই! আপনি জানেন কি বিশ্বে ধর্মীয় বিভেদের কারনে এবং অবৈজ্ঞানিক ধর্মীয় নির্দেশ শুনে বিশ্বের অনেক দেশের ৬০% মানুষ গির্জা মন্দির ছেড়েছে (পিউ রিসার্চ রিপোর্ট) ! যদি নাস্তিক বলেন, হা নাস্তিক বেড়ে যাচ্ছে দ্রুত গতি তে!
মজার কথা বিশ্বে কোন কালে কোন নাস্তিক ছিলো না এখন ও নাই! কেন বলছি তা শোনেন,
বিশ্বের প্রথম নাস্তিক হলেন "গ্রীসের ডিয়াগোরাস" তিনি কাঠের মূর্তি দিয়ে রান্না করতেন, লোকটা ছিলেন সাহিত্য জগতের মানুষ! তিনি মরার আগে নিদারুণ কষ্ট পাচ্ছিলেন মাসাধিক কাল! তিনি একসময় বলেছিলেন, "আমি বিশ্বাস করি প্রকৃতি নিয়ে জন্মমৃত্যু এবং সবং চলয়মান! তবুও আমি অনেক কষ্ট পাচ্ছি, যদি কেউ বা কোন শক্তি থেকে থাকো আমাকে একটু কষ্টহীন মৃত্যু দাও!
সত্যি ই তিনি নির্ভীঘ্নে ঘুমিয়ে গিয়েছিলেন এবং মৃত্যু বরন করেছিলেন।
পাঠক, সেই নাস্তিক যদি স্বীকার করে থাকেন " কেউ আছে" তা হলে বিশ্বে কোন নাস্তিক থাকে? থাকে না, কোন একসময় অদৃশ্য শক্তির শরণাপন্ন হতে হয়!
মানসিক ঈমান না এনে লেবাসি ধর্ম মানুষ কে পবিত্র করে না বরং অর্থবিত্ত ক্ষমতায় যাওয়ার হাতিয়ার হিসাবে সব ধর্ম ব্যবহার হচ্ছে! বিশ্বে এই ধোঁকার ধর্ম বেশী সমাদৃত। মানুষ অমানুষের চেহারা এক, চলনে বলনে আলহামদুলিল্লাহ মাশাল্লাহ ফি আমানিল্লাহ জয় শ্রীরামের খই ফুটে। লোক দেখাতে কেই দশ হাজার কোটি টাকায় পঞ্চাশ ভরি স্বর্ন ঢেলে রাম মন্দির বানায় কেউ দশহাজার কোটি টাকা খরচ করে মসজিদ বানায় ছাদে তার হেলিপ্যাড। ভারতের অমৃত স্বরের স্বর্ন মন্দিরে নাকি পাঁচশ কেজি স্বর্ন ঢালা আছে! হেলিপ্যাড মসজিদ বানানো দেশটা আফ্রিকায় যার পাশেই বুরুন্ডি নাইজার ইথিওপীয়ার মত দেশ যারা এক বেলা খেতে পায় না! তাদের পেটে ভাত দেয়া আমাদের কাছে ধর্ম কিন্তু ৫৫৬ টা মডেল মসজিদ হ্যালিপ্যাড ওয়ালা মসজিদ আমাদের বিবেকে অপচয় মনে করে। আল্লাহ মরুভুমির বালুকণায় বা দুর্বা ঘাসে গামছা বিছিয়ে নামাজ পড়া লোকটার উপাসনা হেলিপোর্ট ওয়ালা মসজিদে নামাজ পড়ার থেকে কম মূল্যায়ন করেন তা আমি মনে করি না! আমি মক্কায় পবিত্র মসজিদুল হারমে ৫ মাইল দূর থেকে এসে নামাজ পড়তাম কিন্তু তার অনতি দূরে সাধারন মসজিদে সৌদি আরব বাসীতে পরিপূর্ণ নামাজ হতে দেখেছি কারন তারা জানতো আল্লাহ সব জায়গায়! আমরা আবার একটু বেশী মুসলমান!
আমরা হিন্দু হই মুসলিম হই কিন্তু মানুষ হই না তাই আমাদের উপাসনা আমাদের মুখের শক্তি বৃদ্ধি করে না। আমি দেখেছি কারো অভিশাপে মাত্র তিন দিনের ভিতর বিরাট ঘর মাওলানা সাহেবের পুরড়ে কয়লা, অথচ সারাদিন তসবিহ পকেটে নিয়ে চলা লোকটার কোন কষ্ট উদ্ধার করতে আল্লাহ হাত বাড়াচ্ছেন না বা কোন প্রার্থনা মঞ্জুর হচ্ছে না! কারো অভিশাপে তাকে গুলি করতে চাওয়া লোকটার হাতের আঙুল কাটা গেছে বিচারে, আজ ও সেই কলঙ্ক বহন করে চলছে। কিন্তু হুশ হচ্ছে না কারন আমাদের দেশে যারা ধর্ম শিক্ষায় শিক্ষিত তাদের বোঝার মত আই-কিউ নাই এবং লোভ মুক্ত নয়, মসজিদ মাদ্রাসার দানের টাকায় শুরু করেছেন চার তলা বাড়ী! এমন লোকের প্রার্থনা কি সৃষ্টি কর্তা শুনবেন?
ভালো থাকেন তাকওয়াপূর্ণ জীবন গড়েন, মানব দরদী মানুষ হন, মানবতা মনুষ্যত্ব বৃদ্ধি পেলে ধর্ম কাজ করছে ধরে নিবেন! নারী শিক্ষা বিজ্ঞান শিক্ষা হারাম নয়! এটা ভন্ড ধার্মিকদের ভন্ড ফতোয়া!