আমি গ্রামের একটি সাধারণ নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তান।আমি ২০২৪শিক্ষাবর্ষে এইচ এস সি পাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার জন্য গ্রাম থেকে খুলনায় এসেছি। চারুকলা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ার জন্য। শিল্পী কবি সাহিত্যিকরা ছবি এঁকে এবং বিভিন্ন লেখার মাধ্যমে দেশকে সুন্দর করার জন্য অনেক ভূমিকা রাখেন এটা আমরা সবাই জানি। আমি
খুলনা আর্ট একাডেমির শিক্ষক চিত্রশিল্পী মিলন বিশ্বাসের কাছে বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলায় পড়ার জন্য ভর্তি হয়েছি।খুলনা আর্ট একাডেমি এমন একটি প্রতিষ্টান,যেখানে পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি দৈনন্দিন জীবনের বিষয় বলি সম্পর্কেও শিক্ষা দেওয়া হয়।আমি শহরে এসে আমার জীবনের দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয় করতে গিয়ে দেখলাম যে দ্রব্যমূল্যের আকাশছোঁয়া দাম।আমি তখন থেকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি সম্পর্কে লিখতে চেষ্টা করি।কিন্তু আমি এই বিষয়টিতে কোনভাবেই সফল হতে পারছিলাম না।পরে আমি আমার শিক্ষক চিত্রশিল্পী মিলন বিশ্বাস দৈনন্দিন জীবনের বিষয়গুলির উপর যে ক্লাস নিয়ে থাকেন আমি সেখান থেকেই দ্রব্যমূল্যের উদ্ধগতি বিষয়টি সম্পর্কে লেখার সাহস পেলাম।আর আমি তখন থেকেই এ বিষয়টি সম্পর্কে লিখতে শুরু করি এবং এ বিষয়টি আমার কলমের মাধ্যমে তুলে ধরলাম।
সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের দেশে বিভিন্ন সমস্যা বলির মধ্যে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি একটি প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।দ্রব্যমূলের উর্ধ্বগতি আমাদের দেশে এখন জাতীয় সমস্যা হয়ে উঠেছে।সম্প্রতি এ বিষয়টি আমাদের চরমভাবে ভাবিয়ে তুলছে।চৈত্র মাসের শুরুতে প্রকৃতি রাজ্য যেমন নেমে আসে তাপদাহের আগুন তেমনি আমাদের দ্রব্যমূল্যের বাজারে সৃষ্টি হয়েছে মূল্যবৃদ্ধির আগুন।অত্যাধিক মূল্যবৃদ্ধির ফলে বাজারে ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে।যার ফলে দেশে নেমে এসেছে দুর্ভোগ।চাল,ডাল,চিনি ও তেল এর যেমন দাম বৃদ্ধি পেয়েছে তেমনি কাঁচামালের দামও ঊর্ধ্বমুখী। আলু,বেগুন, ফুলকপি,মুলা ও ঝাল ইত্যাদি সবজির বাজারে আগুনের তাপদাহের মতো মূল্যবৃদ্ধি পাচ্ছে।আমাদের দেশের বাজারের কাঁচা সবজি যেমন আলুর পাইকারি মূল্য ৬৫-৭৫ টাকা,কিন্তু এই আলু বাজারে বিক্রয় করা হচ্ছে প্রতি কেজি দরে ১০০-১৩০ টাকা।তেমনি বেগুন যার পাইকারি মূল্য প্রতি কেজি ৪৭-৫৩ টাকা,কিন্তু এই বেগুন বাজারে বিক্রয় করা হচ্ছে প্রতি কেজি ৭৫-৮৫ টাকা।এছাড়াও ফুলকপি যার পাইকারি মূল্য ৩৫-৩৮ টাকা,কিন্তু বাজারে এসব দ্রব্য ক্রয় করতে হচ্ছে ৫৫-৬৫ টাকা প্রতি কেজি।আমরা যদি একজন গার্মেন্টস কর্মী বা একজন শ্রমিকের কথা ভাবি তবে তারা দিনে সর্বোচ্চ ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা আয় করতে সক্ষম হয়।তারা তাদের এই একদিনের আয় দিয়ে যদি বাজার করে তাহলে তারা সর্বোচ্চ১ কেজি আলু,১/২কেজি ঝাল, ১ কেজি ফুলকপি এবং ১ কেজি চাল কিনতে সক্ষম হয়।তারা তাদের নিজের একদিনের আয় দিয়ে ঠিকমতো মাছ বা মাংস ক্রয় করে খেতে পারে না ।এসব দ্রব্যের এমন অত্যাধিক আকাশ ছোঁয়া মূল্যের কারণে সাধারণ মানুষ এসব দ্রব্য ক্রয় করতে ব্যাহত হচ্ছে।যার ফলে আমাদের দেশে নেমে এসেছে দুর্ভিক্ষ ।বিভিন্ন পরিবার না খেতে পেরে মারা যাচ্ছে।দ্রব্যমূল্যের যেমন দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে তেমনি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবীদের বেতন ও বৃদ্ধি পাচ্ছে যার ফলে এসব ব্যক্তিদের বাজার থেকে বিভিন্ন দ্রব্য সামগ্রী ক্রয় করতে তেমন অসুবিধা হয় না।কিন্তু আমাদের দেশের যে সব নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের ব্যক্তি আছে তাদের এ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সাথে তাল মিচলতে কষ্ট হচ্ছে।আর এই সমস্যার পিছনে বিভিন্ন কারণ জড়িয়ে আছে। প্রথমত: আমাদের দেশের কিছু সংখ্যক অসাধু ব্যবসায়ীরা এর প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।এসব অসাধু ব্যবসায়ীরা নিজেদের ভোগ লাভের আশায় এসব দুর্নীতি করে যাচ্ছে।এসব অসাধু ব্যবসায়ীরা আমাদের দেশের নিম্নবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত পরিবারে সুচ হয়ে ঢুকে ফাল হয়ে বেরিয়ে যায়।দ্বিতীয়তঃ এই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির পেছনে একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো মুনাফা লোভী মজুদ দাররা,এরা প্রায়ই অধিক মুনাফা অর্জনের মানসিকতায় দ্রব্যের দাম বাড়িয়ে এমন নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে।তৃতীয়ত:এই দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধির কারণ হলো কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি আমাদের দেশে নতুন কোন সমস্যা নয় এ সমস্যাটি অনেক পুরানো সমস্যা কিন্তু আমাদের দেশের সরকারের এ বিষয়টি নিয়ে তেমন কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় না।যার ফলে এ সমস্যাটি দিন দিন বেড়ে চলেছে।কিছুদিন আগে অনলাইনে একটি নিউজ দেখলাম যে ভারতের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার এক গ্রামে একটা গোটা পরিবার চরম দরিদ্র থেকে মুক্তি পেতে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছে।আমি চাই আমাদের দেশে এমন কোন ঘটনার সম্মুখীন যেন না হতে হয়।আমাদের এ সমস্যাকে নিরসন করতে হলে সরকারিভাবে পদক্ষেপের পাশাপাশি,বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানদের এগিয়ে আসতে হবে।তাহলেই আমরা দ্রব্যমূলের উর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারব এটা আমার বিশ্বাস।
আমি অনেকদিন ধরেই আমাদের দেশের এই সমস্যাটি তুলে ধরার চেষ্টা করছিলাম এবং আমি এ বিষয়টি আমার দেশের মানুষের কাছে তুলে ধরতে পেরেছি আমার গুরুদেব চিত্রশিল্পী মিলন বিশ্বাসের সংস্পর্শে এসে।এজন্য আমি আমার গুরুদেব এর কাছে চির কৃতজ্ঞ। এই লেখাটি যারা পড়বেন সবাই আমার জন্য আশীর্বাদ করবেন আমি যেন ভালো একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করতে পারি, আমি একজন নবীন তাই লেখার মধ্যে যদি ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।আমি যেন আমার দেশকে ভালো কিছু উপহার দিতে পারি এবং আমি যেন সারাজীবন গুরুজনদের আশীর্বাদ নিয়ে আমার পিতা মাতার সকল আশা যেন পূর্ণ করতে পারি।