লেখকঃ ইঞ্জিঃ মোঃ সিরাজুল ইসলাম।
একটা হত্যা যতটা অপরাধ তার থেকে অপরাধ সেই হত্যার পর নারী টার লাশ বলৎকার করা! একজন নারীকে ধর্ষণ যতটা অপরাধ তার চেয়ে বড় অপরাধ ধর্ষণের পর নারীটাকে হত্যা করা! এমন কাজগুলোকে মানবতা বিরোধী অপরাধ বলা হয়! ১৯৭১ সালে জামাতে ইসলাম সহ অনেকগুলো দল পাকিস্তান পক্ষে যুদ্ধ করেছে, কূটনীতিক যোগাযোগ করেছে বহির্বিশ্বে, আমি, এ পর্যন্ত কোন অপরাধ দেখি না কারন There is no boundary in Love and War! তখন জামাতে ইসলাম সক্রিয় ভাবে পাকিস্তানের সাথে থাকতে চেয়েছে, সে জন্য জয়লাভ করতে যে কোন ধরনের মস্তিষ্ক সঞ্চালন তারা করেছেন! ভালোবাসা দুই পক্ষ বিরহে আত্মহত্যা পর্যন্ত করে! প্রেমিক প্রেমিকার দোষ দেখি না!
জামাতের মানবতা বিরোধী কর্ম ছিলো নিরীহ জনগণের আাবাস চিনিয়ে নারী ধর্ষণে সহযোগিতা ও মেধা শূন্য করতে জ্ঞানী গুনি বুদ্ধি জীবি বাসা থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা!
প্রিয় পাঠক, নির্বোধ অপরিনামদর্শী ঘুমন্ত দুর্নীতি প্রশ্রয়দানকারী শাসক শেখ হাসিনা বিতাড়িত হয়েছেন তা যথাযথ ছিলো কিন্তু ৩২ নাম্বার ধানমন্ডির ঐতিহাসিক বাড়ীটা ভাঙচুর আগুন ধূলিসাৎ না করলে-ও বর্তমান শাসক পারতেন। জনগনের আক্রোশ বলা যাচ্ছে না এইজন্য যে ৫ ই আগষ্টের পরপরই এমন ঘটনা ঘটলে প্রশাসনিক দায়ভার ছিলো না! এখন রীতিমতো একজন নিরপেক্ষ সরকার ক্ষমতায়, এ বাড়ীটা ভাঙচুর আগুন ধূলিসাৎ ঠেকানো সরকারের দায়িত্ব হয়ে দাড়িয়েছে। এখন এই বাড়ীতে ই শত-শত লোককে হত্যা করা হয়েছে, বন্দী করে রাখা হয়েছিলো তার প্রমাণ করার চেষ্টা হাস্যসকর বা হত্যার পর লাশ বলৎকার তুল্য!
আয়না ঘর কি? বৃটিশ আমলে কোথায় তা করা হয়েছিলো, দ্বিপন্তর কি, কালা পানি কি, বৃটিশ নিবর্তন মূলক শাস্তির এই বিষয়গুলো অনেক পন্ডিত জানেন না! “আয়না ঘর” বানানোর চেষ্টা ৩২ নাম্বার বাড়ীটাকে কলঙ্কিত করা প্রয়াস মাত্র। কারো ভিতর যদি ইসলাম বা অন্য ধর্মের (কুরআন গীতা বাইবেলের) বিন্দু মাত্র আস্হা থেকে থাকে তাদের এসব থেকে বিরত হওয়া উচিত। আমরা নানা সমস্যায় জর্জরিত! “মার্কিন আন্তর্জাতিক আদালতে” হাসিনা বিরোধী মামলা বন্ধ হয়ে গেছে, হাসিনা আমলের আইএমএফ লোন তৃতীয় কিস্তি পেয়েছেন, নতুন লোন আর পাবেন কি-না তা ঈশ্বর জানেন? জাতিসংঘ ৫ ই আগষ্ট থেকে ১৫ ই আগষ্ট পর্যন্ত বাংলাদেশের ঘটনায় নিহত আহতের তদন্ত রিপোর্ট চেয়েছে। সরকার তা এখন ও দাখিল করেন নাই কেন? ৫ ই আগষ্টের পর ১৫ আগষ্ট পর্যন্ত হাসিনা স্বৈরাচার নিপাত হয়েছে কিন্তু লাশ পড়েছে ১৫ ই আগষ্ট পর্যন্ত স্বৈরাচার আমল থেকে বেশী! কে এসব হত্যা করলো, কে দায়ী, কারা এত হত্যা করলো, প্রায় ৩০০ পুলিশ হত্যার দায় কার — জাতিসংঘের চাওয়া তদন্ত কি সে কারনে মুখ থুবড়ে পড়লো? সেই প্রথম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর দাবী মত ৭.৬২ বুলেট কোথা থেকে এলো তার তদন্ত আজও কি হয়েছে?
আমাদের সমস্যা “৩২ নাম্বারে আয়না ঘর” খোঁজা না, গরীবের পেটে ভাত দেয়া, দ্রব্য মূল্য কমানো, রিজার্ভ বাড়ানো, তিস্তা কাজ চীনকে দিয়ে শুরু করানো, ভারতের বিনা পয়সায় আকাশ পথ ব্যবহার থেকে রেভিনিউ দাবীর আলোচনা, ভারত কেন সীমান্তে ৫০ হাজার সৈন্য আজও রখেছে তানিয়ে আলোচনা করে সৈন্য ফেরত নিতে বলা, রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু করা, ইন্টারনেট সরবরাহ উন্নত করা, নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা, বন্ধ শিল্প কলকারখানা চালু করা, আগের আমল ভালো ছিলো এমন কথা না শোনা!
কারো বাড়ী ভাঙলে কারো মাজার ভাঙলে তাকে জনগণের হৃদয় থেকে মুছে দেয়া যায় না, কারন সারাবিশ্ব ইতিহাসে “মুজিব” বাংলাদেশের জাতির জনক, জিন্নাহ পাকিস্তানের জাতির জনক, গান্ধী ভারতের জাতির জনক! এসব মোছামুছির খেলায় ইতিহাসের পাতায় নায়ক হওয়া যায় না বরং ইতিহাস ভিলেন হিসাবে চিহ্নিত করে। মুছে দেয়া যায় তার থেকে-ও মহৎ কাজ করে নিজেকে মানব হৃদয়ে প্রতিষ্ঠিত করুন! মানুষ ভুলে যাবে কে মুজিব কে জিন্নাহ কে গান্ধী? ১৯৭১ এর জন্য জিন্নাহ কে কেউ দায়ী করে না ইয়াহিয়া ভুট্টো কে ভিলেন বলে!
বাঙালি জাতিসত্তা কেড়ে নেয়ার চেষ্টায় বই মেলাকে জেহাদি করার চেষ্টা ভুল পদক্ষেপ। সাহিত্য সংস্কৃতি জগতের লোক মুক্ত মনা হয় তাদের ধর্মীয় উন্মাদনায় ঠেলে দিতে গেলে বুমেরাং হয়! বই মেলা স্বাধীন ভাবে চলতে দিন!