কলমে: মুবাশ্বেরা করিম অনন্যা।
এক তলা বাড়িতে মা বাবার সাথে তিন বোনের বাস।
ঘরের আসবাব সাধারণ হলেও ঘরের মধ্যে এক তুলনাহীন সৌন্দর্য বিরাজমান। বাড়ির নাম আনন্দ মহল। এই নাম দেয়ার এক সুন্দর ইতিহাস আছে। বড় মেয়ের নাম আলো,মেজটার নাম নয়ন আর ছোটটা নন্দন। অর্থাৎ আলোর “আ”, নয়নের “ন” আর নন্দন এর “ন্দ” নিয়ে এর নামকরণ। এই বুদ্ধি অবশ্য তাদের ছোট চাচার, যিনি পিএইচডি করতে একসময় কানাডা চলে যায়। এজন্য তিন বোনের অনেক দুঃখ ছিল। ছোট চাচা তাদের সবচেয়ে প্রিয় মানুষ ও শিক্ষক ছিলেন। পাঠ্যবইয়ের বাইরে বিশ্বের নানা জ্ঞানবিজ্ঞানের গল্প বলতেন। কিন্তু একটা শর্ত থাকত যে- আগে তাদের স্কুল-কলেজের পড়া শেষ হওয়া চাই। ছাদে ছোট চাচার একটা লাইব্রেরি ছিল। লাইব্রেরির নাম দেন জ্ঞানসমুদ্র। সেই লাইব্রেরির সদস্যদের ডাকা হত ক্যাপ্টেন, অর্থাৎ
জ্ঞানসমুদ্রপথ পাড়ি দেবার জন্য প্রত্যেকে একেকটা জাহাজের ক্যাপ্টেন হিসেবে বিবেচিত হত। বই পড়ার টেবিলগুলোর ছিল জাহাজের মতো ডিজাইন। লাইব্রেরিতে সর্বমোট চারটি জাহাজসদৃশ টেবিল ছিল। তিন বোন ও তাদের ছোট চাচা এই চারজনের এই লাইব্রেরি। বর্তমানে বড় বোন ঢাবিতে ইংলিশ ডিপার্টমেন্টে পড়ে আর মেজ পড়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগে।বড় দুইজন তাই বাড়ির বাইরে আর এখন শুধু ছোট মেয়েটা এই লাইব্রেরিতে পড়ে। ছোট চাচা নাকি কয়েকদিনের জন্য আসবে। সামনে রোজা। বড় আর মেজ বোন ও আসবে।সেইসাথে হয়তো ফিরে আসবে আনন্দ মহলের সেই পুরনো আনন্দও।