মোঃ আহ্সান কবির রিজওয়ান
আমার চাচা মজা করে বলেছিল, খাওয়ার পরে পড়বা নইলে খাদ্য উপরে থাকবে আর পড়া নিচে থাকবে! টয়লেট গেলে সব পড়া টয়লেটে জমা হবে।😃 ভাত খাইছো কি দিয়ে? কেউ স্টাইল করে চামচ দিয়ে খায়, আমরা গরীব মানুষ হাত দিয়ে খাই। শীতে পড়ার সময় শরীরে জ্যাকেট/ছুইটার দিয়ে রাখতে হবে, নইলে জ্বর/কাশ হবে। তুমি কোন ক্লাসে পড়? "দশম শ্রেণি"। তাইলে দশ তলা। আর দশ তলা থেকে পরইা গেলে হাড়-হাড্ডি গুড়মুর হবে, শরীরে জখম হবে, স্কুলের মাটি কেঁপে উঠবে। তোমার শরীরের ক্ষতি হবে, এমন যেন না হয় যেন কষ্ট না পাও। গরমে এমন ভাবে পড়বে যেন ধুলাবালি শরীরে স্পর্শ না করে।😇 আমরা যখন স্কুল যেতাম। আমরা যদি স্যারকে পড়া না বুঝিয়ে দিতাম, কীভাবে কী হলো! কতখানি বুঝেছি অথবা কোন দোষ করলে স্যার আমাদেরকে মাইর দিত। আমরা যদি পড়া না বুঝি তাহলে স্যার আমাদেরকে পড়া বুঝিয়ে দিত বারবার, শতবার, হাজার বার বুঝিয়ে দিত। আমরা অনেক বার পড়া বুঝিয়ে নিয়েছি। স্যার আমাদেরকে আলোর সন্ধান করা শিখাইত, আদর করত। বর্তমানের স্যারেরা এমন করবে না। একটি বিষয় ছয়-সাত বার অথবা দশবার বুঝাই চাইবা দেখবা স্যার বিরক্ত হইছে। তাঁদের ধৈর্য কম, তাঁরা শিক্ষাটাকে ব্যবসায় পরিণত করেছে। শিক্ষা এখন মৃত্যুদণ্ডের মত। আমাদের আমলের নীতিগুলো যদি এখনো থাকত, থাকত সেই শিক্ষা ব্যবস্থা তাহলে আবার শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড হইত। আমরা যে স্বপ্ন দেখেছিলাম, সেগুলো কোথায় যে হারিয়ে গেল খুঁজে পাচ্ছি না।-
দেশ রক্ষী
গণিতে ফেল করা ছাত্রটি একদিন ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করবে। গ্রামারে ফেল করা ছাত্রটি একদিন আন্তর্জাতিক মঞ্চে বক্তব্য দিয়ে অগণিত মানুষের সমর্থন পাবে, পাবে অনুপ্রেরণা-সন্মান। পদার্থে ফেল করা ছাত্রটি একদিন সেনাবাহিনী হবে। রসায়নে ফেল করা ছাত্রটি ডাক্তার হবে। কৃষকের ছেলে জীববিজ্ঞানী। গরীরের ছেলেটি দেশের সরকার। শ্রমিকের ছেলে হবে রাষ্ট্রদূত, যে সবার মাঝে শেয়ার করবে দেশ-বিদেশের পরিস্থিতি।
হুট করে বড় হওয়া আমাদের বৈশিষ্ট্য নয়, আমাদের শিখিয়ে দেওয়া হত একবার না পারিলে দেখ শতবার।
শিক্ষার নাক চেপে ধরা হয়েছে
এখন তুফানের ধারণা ও চারপাশ নিয়ে আলোচনা। তোমাদের টাকা আছে বিধায় তুমি কোচিং এর পাশাপাশি প্রাইভেট যাওয়া আসা কর। যেন বুজতে পার ভাল ভাবে আর শিখতে পার কিছু। আমাদের টাকা অল্প তাই প্রাইভেট যাইতে পারিনা শুধু কোচিং যাই। কোচিং এর মাসিক বেতন ঠিক সময়ে দিতে পারিনা। আমাদের স্বাদ্ধ কুলায় না বিধায় তো। কোচিং রুমে স্যার প্রবেশ করে এক লাইন অংক তুলতে না-তুলতেই তুমি স্যারকে বলছো পরের অংশে, পরের লাইনে কী লিখতে হবে। কেন স্যার কি জানে না? আমরা তো স্যারের কাছে বুঝে নিতে আইছি। তুমি প্রাইভেটে অংকগুলো শিখছো বিধায় পন্ডিতগিরি করছো। এখন স্যার চাইবে অতি শিগগিরই বই পড়ালেখার মাধ্যমে কমপ্লিট/শেষ করতে। তোমাদের মত শিক্ষার্থীর কথায় কান দিয়ে স্যার ভাবতিছে সকলে বুঝি এই অংকটা বুঝেছে। কারণ দু-একজন যেহেতু বলতে পারছে কোথায় কী বসবে। ভাতের একটি দানাতে চাপ দিয়ে পুরো ভাতকে চেনার চেষ্টা। স্যার এখানে কোন মত ভাজুং-ভুজুং (বুঝিয়ে) দিয়ে অংকটা শেষ করবে। ফলে কতজন তা বুঝতে পারল? হয়তো স্যার সকলকে বলবে বুঝেছ! আমি অথবা কেউ বলতে পারে বুঝিনি। স্যার আর একবার গুরুত্বহীন হয়ে ভাজুং-ভুজুং দিবে। কিন্তু সেটা আমার অথবা কারো মাথার উপর দিয়ে উড়ে চলে যাবে। এখানে তুমি পন্ডিতগিরি করলা বিধায় আমি বা আমরা কয়েক জন অংকের বিস্তারিত ভাল ভাবে বুঝতে পারলাম না। স্যার এসে হোয়াইট ব্রোডে অংক তুল, একবার বক্তব্য দিল। তার মানে এক পলকে কি আমরা বুঝে গেলাম? নিজেকে হয়তো বুঝ দিব টাকার কাছে পরাজিত হলাম। শিক্ষা ত ব্যবসায় পরিণত হয়েছে, কোচিং এ বেতন দিয়েও কিছু শিখতে পারলাম না। এখানে কেউ যদি আমাকে বলে,"তুমি আবার স্যারকে জিজ্ঞেস করতে, অংকটা তুমি বাদে সকলে বুঝেছে।" তাহলে আমি উদাহরণ হিসেবে বলি, এ বছর আমাদের বোর্ড থেকে এসএসসি ৭২% পাশ করেছে। তাদেরকে মেধাবী শিক্ষার্থীরা হিসাবে উল্লেখ করা হয়। ২৮% ফেলের মধ্যে সর্বনিম্ন ১১% আমার মত পরিস্থিতির শিকার। কোচিং এ তোমাদের মত পণ্ডিত ছিল বিধায় আমরা গুরুত্ব পাইনি স্যারের। অনেকে আমাদেরকে অপমানও করে, পরিবার থেকে আদর পাইনা। তুমি যদি তখন পন্ডিতগিরি না করতে তাহলে স্যার হয়তো ঢেলে সাজিয়ে A টু Z বর্ণনা দিত। তোমরা কেন এই বিষয়টি বুঝতে পার না? কোথায় কীভাবে থাকতে হবে, এটিই আগে বুঝতে হবে। বই পড়লে জ্ঞান অর্জন হয় তবে আরো একটি কথা, কোন জ্ঞানীগুণি বলেনি বইয়ের মধ্যে সব জ্ঞানই থাকে। আমি দেখেছি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মুখস্ত বিদ্যার প্রচলন। আমি দেখেছি পরীক্ষায় নকলের কারবার। আমরা শুনেছি কেউ টাকা দিয়ে সার্টিফিকেট কিনেছে। আমি দেখেছি কোটা পৃথা। শিক্ষার্থীদের টাকা স্যার-কমেটি দূর্নীতি করে মেরে খাচ্ছে। আমরা দেখতেছি-জানতেছি শিক্ষক-শিক্ষার্থীর ধর্ষণ, আবার কারো কারো প্রেম। আমি দেখেছি পথেঘাটে শিক্ষার্থীদের বেহায়াপনা আচরণ। আমি দেখেছি স্বার্থের লোভে কেউ ছুটে আসে। কিছু স্যার অল্পতে হাঁপিয়ে যায়, বারবার বুঝাতে বললে বিরক্তবোধ করে! পরীক্ষায় কেউ ফেল করলে তাকে ধমক/গালি-বকা, মাইর দেওয়া হয়। (তবে কিছু কিছু স্কুলে দেখেছি শিক্ষার্থীরাই শিক্ষককে ধমক দেয়, ন্যায়-অন্যায় নিয়ে।) সে যে স্কুলের ছাত্র সেই স্কুলের স্যারের কাছে প্রাইভেট পড়ালেখা করে আর আর স্কুল পরীক্ষায় তার রেজাল্ট তিনি পাশ করে এগিয়ে দিলেন। যেমন সে প্রকৃত নম্বর পাবে ৪০, তাকে ৪৫-৫০ নম্বর দেওয়া হয়েছে। এটা কি কোন স্যার ও ছাত্রের বৈশিষ্ট্য?
[কোন প্রকার ভুল হলে ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন]
আহ্সান কবির রিজওয়ান,
শিক্ষার্থী
বেগম রোকেয়া স্মৃতি, মিঠাপুকুর, রংপুর।