শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০৭:২৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রসেনার ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিশাল ছাত্রসমাবেশ ও বর্ণাঢ্য র‍্যালি অনুষ্ঠিত চিত্রশিল্পী তুলি সাধুর পিতার মৃত্যুতে খুলনা আর্ট একাডেমি গভীর ভাবে শোকাহত। চাঁপাইনবাবগঞ্জে মহানন্দা দারিদ্র্য বিমোচন সংস্থার উদ্যোগে কম্বল বিতরণ হারিয়ে যাওয়া অতীতের কেরোসিন স্টোভ মধ্যনগরের রামদীঘা গ্রামের আমেরিকা প্রবাসী তাপস তালুকদারের মাতৃ বিয়োগ লোহাগাড়া পদুয়া মাদ্রাসায় শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহেদুল ইসলাম পলাশবাড়ীতে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের দ্বি বার্ষিক কাউন্সিল অনুষ্ঠিত পলাশবাড়ীতে অপহৃত তৃষ্ণাকে ৩ মাসেও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ, ফিরে পাবার আকুতি মা-বাবার রায়গঞ্জে বেড়েছে শীতের তীব্রতা বিপর্যস্ত জনজীবন কবিতাঃ জাগা আঁখি

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রসেনার ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিশাল ছাত্রসমাবেশ ও বর্ণাঢ্য র‍্যালি অনুষ্ঠিত

Coder Boss
  • Update Time : শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ৩ Time View

চট্টগ্রাম থেকে সংবাদদাতা:

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনার ইতিহাস, ঐতিহ্য, গৌরব ও সংগ্রামের ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল (২৪ জানুয়ারি ২০২৫ ইংরেজি) শুক্রবার বিকাল ৩টায় চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার উদ্যোগে ছাত্রসমাবেশ কর্ণফুলী এ.জে চৌধুরী ডিগ্রি কলেজ ময়দানে অনুষ্ঠিত হয়।

ছাত্রসেনা দক্ষিণ জেলার সভাপতি ছাত্রনেতা মোঃ ওসমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মহাসচিব জননেতা অধ্যক্ষ আল্লামা স.উ.ম আবদুস সামাদ। উদ্বোধক ছিলেন, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের বিভাগীয় সাংগঠনিক সচিব মাওলানা এস.এম.শাহজাহান। প্রধান আলোচক ছিলেন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনার সাবেক সভাপতি নুরুল হক চিশতি। বিশেষ অতিথি ছিলেন, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা নুরুল ইসলাম জিহাদী, বিভাগীয় সাংগঠনিক সচিব মাওলানা এম. এ. মাবুদ, সহকারী দপ্তর সচিব অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম, তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সচিব মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন, শ্রম ও কৃষি বিষয়ক সচিব এম মহিউল আলম, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি মাওলানা ফেরদৌসুল আলম আলকাদেরী, সেক্রেটারি আলী হোসেন, মহানগর দক্ষিণ সেক্রেটারি আলমগীর ইসলাম বঈদী, মাওলানা সাইফুদ্দিন আলকাদেরী, মাওলানা মুহাম্মদ এনাম রেযা, যুবনেতা দিদারুল আলম, আবদুল্লাহ আল মামুন, মনিরুল ইসলাম সাবেক ছাত্রনেতা নূরের রহমান রনি। প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা কেন্দ্রীয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ছাত্রনেতা শাহেদুল আলম।

প্রধান অতিথি অধ্যক্ষ স.উ.ম আবদুস সামাদ বলেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষা ছিল বৈষম্যহীন স্বাধীন সার্বভৌম সর্বজনের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা। ২০২৪ সালেও একই উদ্দেশ্য নিয়েই ছাত্রজনতাকে লড়াই করতে হয়েছে। কারণ, বৈষম্যহীন, সমতাভিত্তিক, অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক চেতনার আলোকে একটি সমাজ ও রাষ্ট্র নির্মাণের প্রত্যাশার বিপরীতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল আমলাতন্ত্রের সমন্বয়ে লুটেরা, ধনিক ও বণিক শ্রেণির স্বার্থকেন্দ্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা। তাই এ আমলাতান্ত্রিক পুঁজিবাদি রাজনৈতিক ব্যবস্থার বিপরীতে এখন আমরা আদর্শ রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখছি, যেখানে রাজনীতির নামে হানাহানি, দলাদলি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থাকবে না। এরকম বৈষম্যহীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য প্রথমে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ছাত্রজনতার আন্দোলনে ১৫ বছরের একদলীয় সরকারের পতনের পর বর্তমানে নতুন আরেক চক্র তাদের স্থলাভিষিক্ত হয়ে সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজি কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ২৪’র অর্জন কোন নির্দিষ্ট দলের অর্জন নয়, ইহা সর্বস্তরের ছাত্রজনতার অর্জন। তা কুক্ষিগত করে নিপীড়ন করা জনগণ মেনে নেবে না। এ দেশে ইসলাম এসেছে যেসব আউলিয়া কেরামের মাধ্যমে অথচ সেই মহান আল্লাহ অলিদের মাজারে একদল উগ্রবাদি জঙ্গি হামলা করছে, সূফিবাদি শিক্ষকদের হেনস্তা করছে, ব্যাংক দখল করতেছে, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। আমরা অনেক ছাড় দিয়েছি, আর ছেড়ে দেব না। আমরা দেশে সুশাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে অন্তবর্তী সরকারকে সহযোগিতা করতে চাই। এজন্য সকল অন্যায়-অনাচারের বিরুদ্ধে সরকারকে কঠোর হতে হবে। দ্রুত নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করে সকল দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।

প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক সৈয়দ মুহাম্মদ তারেক ও সদস্য সচিব মোঃ ইসমাইল হোসাইন যৌথ সঞ্চালনায় আমন্ত্রিত পীর মাশায়েখ ও ওলামায়ে কেরামের মধ্যে বক্তব্য রাখেন,পীরজাদা শামুনুর রশিদ আমিরী, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ওবাইদুল হক হক্কানী, মনির আহমদ আনোয়ারী, মাওলানা মুছা, মাওলানা আবু সাদেক, হাবিবুল মোস্তফা সিদ্দিকী, হারুনুর রশিদ, হাসান আলী, আরিফ হোসেন সবুজ, মুহাম্মদ ইসমাঈল হোসেন, আরমান হোসেন, সাঈদুল আলম পারভেজ প্রমুখ।

অন্যান্য বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা সপ্ত মূলনীতি ও পঞ্চ কর্মসূচির আলোকে ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে বর্তমান ৪৫ বছরের ইতিহাস কলঙ্কমুক্ত অহিংস ইতিহাস। এ দীর্ঘ পথচলায় ছাত্রসেনা কর্মী হালিম, লিয়াকত, সাইফুল, নঈম, জিঁতু, সাদেকসহ অনেকে প্রাণ দিয়েছে, কিন্তু, কারো উপর আক্রমণ করে নি। ছাত্রসেনা প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে ছিল সরব। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রসংসদ নির্বাচন, শিক্ষাসামগ্রীর দাম কমানো, শিক্ষাখাতে সর্বোচ্চ বাজেট বরাদ্দসহ ছাত্রদের অধিকার সমুন্নত রাখার প্রভৃতি আন্দোলন এবং দেশ-জাতি, মাযহাব-মিল্লাতের স্বার্থে ছাত্রসেনা রাজপথে ভূমিকা রেখেছে। স্বতন্ত্র ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ছাত্রসেনার আন্দোলনের ফসল। ২৪’র আন্দোলনে ছাত্রসেনা আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়ে অংশ নিয়ে অসংখ্য নেতাকর্মী মামলা-হামলা ও জেল-জুলুমের শিকার হয়েছে। অথচ, কয়েকটি দল ছাত্রজনতার এ অর্জনকে কুক্ষিগত করে ক্ষমতায় যাওয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত। বক্তারা আরো বলেন, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার প্রতি প্রত্যেক ক্ষমতাসীন দল বিমাতাসূলভ আচরণ করেছিল। এবার কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নের জন্য দলমত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা রাখতে হবে। ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৭১’র মুক্তিযুদ্ধ, ৯০’র স্বৈরচার বিরোধী আন্দোলন ও ২৪’র বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন প্রভৃতি আন্দোলনে বিজয় এসেছে ছাত্রদের মাধ্যমে। আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণেও ছাত্রদের অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে।

৪৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ছাত্রসমাবেশে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার পক্ষ থেকে ৯ দফা দাবি পেশ করা হয়। সেগুলো হলো-

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার আয়োজনে আজকের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ছাত্রসমাবেশ প্রস্তাবনা

১। উত্তর চট্টগ্রামে ৩টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সহ চট্টগ্রাম বিভাগে ৮টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় আছে।কিন্ত দক্ষিণ চট্টলাসহ কক্সবাজার – বান্দরবান ৩ জেলার বিশাল জনগোষ্ঠীর জন্য কোন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয়নি।আমরা দক্ষিণ চট্টলার বীর পুরুষ,স্বতন্ত্র ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রথম স্বপ্নদ্রষ্টা মাওলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদীর রেখে যাওয়া জায়গা দেয়াং পাহাড়ের পাদদেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দাবি জানাচ্ছি।

২। বৃহত্তর দক্ষিণ চট্টগ্রামে ৫০০ শয্যার পূর্ণাঙ্গ হাসপাতালসহ মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা এবং একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পদক্ষেপ নিতে হবে।

৩। ওয়ান সিটি টু টাউন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দক্ষিণ চট্টগ্রামে শিল্পায়ন ও পর্যটনের অপার সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলতে কর্ণফুলী, আনোয়ারা, চন্দনাইশ, পটিয়া, বোয়ালখালী, বাঁশখালী ও মহেশখালী ঘিরে একশত বছরের একটি ডিটেইলড মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
৪। কালুরঘাটে প্রস্তাবিত নতুন সেতু দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।

৫। টানেলের পরিপূর্ণ সুফল দ্রুত পেতে হলে টানেলের পূর্বাংশে তথা কর্ণফুলীর দক্ষিণ পাড়ে পরিকল্পিত নগরায়ন ও শিল্পায়ন করতে হবে।

৬। দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষকে বন্যা থেকে রক্ষা করার জন্য দোহাজারী, কক্সবাজার রেললাইনে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ব্রিজ ও কালভার্ট নির্মাণ করতে হবে।

৭। দক্ষিণ চট্টলার প্রতিটি থানায় কম্পিউটার ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, নার্সিং এবং কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু এবং সরকারি পলিটেকনিক প্রতিষ্ঠা করে স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে পদক্ষেপ নিতে হবে।

৮। সরকারিভাবে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হতাহতের পূর্ণ তালিকা করে ক্ষতিগ্রস্ত ছাত্র ও তাদের পরিবারের দায়িত্ব রাষ্ট্রকে নিতে হবে। ছাত্র আন্দোলনে বিরুদ্ধে কর্তৃত্ববাদী সরকারের দায়েরী মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।

৯। ৫ আগস্ট ২০২৪ ইংরেজির পর একটি দল মসজিদ-মাদ্রাসা ও ব্যাংক দখলে লিপ্ত হয়ে পরিকল্পিতভাবে ইমাম-খতিব, শিক্ষক ও ব্যাংকারদের চাকুরিচ্যুত করছে। বৈষম্যহীন বাংলায় এ ধরণের বৈষম্য বন্ধ করতে হবে।

সমাবেশ শেষে এক বর্ণাঢ্য র‍্যালি কলেজ বাজার থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ অন্তে মইজ্জ্যের টেক মোড়ে এসে সমাপ্ত হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102