আব্দুস সামাদ, লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি:
লালমনিরহাট জেলার অন্যসব প্রাণীর মতো অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে বহুবর্ণিল, অপূর্ব সুন্দর রঙ ও বৈচিত্র্যপূর্ণ পতঙ্গ প্রজাপতি। তবে শীতকালে ফুলের বাগানের ফুলে ফুলে বর্ণিল রঙের প্রজাপতির দেখা মিলেছে।
জানা গেছে, ১৫ থেকে ২০হাজার প্রজাতির প্রজাপতি রয়েছে সারা পৃথিবীতে। আর লালমনিরহাটে শীতকালে বিভিন্ন ফুল ফুটলে কিছু প্রজাতির প্রজাপতির উড়াউড়ির দৃশ্য চোখে পড়ে। এমনই দৃশ্য চোখে পড়েছে লালমনিরহাটের মোগলহাট ইউনিয়নের ফুলগাছ গ্রামে।
লালমনিরহাট থেকে ইতোমধ্যে বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে প্রজাপতি। পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে দেশের উত্তরাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাটে সৌন্দর্যময় নিরীহ প্রকৃতির পতঙ্গ প্রজাপতি ক্রমশ আবাস হারিয়ে বিলুপ্ত হতে চলেছে বলে ধারণ করছেন অনেকেই।
অধিকাংশ প্রজাতির প্রজাপতির আয়ুষ্কাল এক থেকে দুই সপ্তাহ। কিছু প্রজাপতি আবার দেড় বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে মর্মে জানা গেছে।
প্রজাপতি এক সময় আমাদের দেশে বনে জঙ্গলে, গ্রামে-গঞ্জে প্রচুর দেখা যেত। এখন অনেকটা কমে গেছে। লালমনিরহাটের কিছু কিছু বাড়ির ফুল বাগান ও সবজী ক্ষেতে এখনও অনেক প্রজাপতির দেখা মেলে।
গবেষকেরা জানিয়েছেন, প্রজাপতির ডানা অত্যন্ত স্বচ্ছ। এদের ডানা মূলত ‘চিতিন’ নামক এক প্রকার প্রোটিন দিয়ে কয়েকটি স্তরে সাজানো। এই প্রোটিন প্রজাপতির ‘ইক্সোসকিলেটন’ তৈরি করে। প্রজাপতির ডানার স্তরগুলো এতই সূক্ষ্ম যে এর মধ্য দিয়ে সবকিছু দেখা যায়। কয়েক হাজার ক্ষুদ্র আঁশ ডানার স্তরগুলোকে আবৃত করে রাখে।
আঁশগুলোতে বিভিন্ন রঙের আলো প্রতিফলিত হয়ে নানা রঙ ধারণ করে। প্রজাপতি পা দিয়ে স্বাদ গ্রহণ করে। স্ত্রী প্রজাপতি বিভিন্ন ধরনের ফুলের গাছে বসে পা দিয়ে পাতার ওপরে ঘষে উদ্ভিদ হতে রস গ্রহণ করে। প্রজাপতির পায়ের পেছনে ‘কেমোট্রিসেপটর’ নামক এক প্রকার সংবেদী অঙ্গ থাকে, যার মাধ্যমে এরা স্বাদ গ্রহণ করে থাকে।
লালমনিরহাট জেলার লালমনিরহাট সদর, আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা, পাটগ্রাম জগতবেড় ইউনিয়ন পরিষদের ২ নং ওয়ার্ড কচুয়ায় পাড়েও প্রভৃতি এলাকার বিভিন্ন গ্রামগুলোতে প্রচুর প্রজাপতির দেখা মেলে।
বন-গঞ্জল, গাছ-গাছি, ঝোপ-ঝার নির্বিচারে কর্তন করার ফলে প্রজাপতি তাদের আবাস হারিয়ে ফেলছে। এ কারণেও অনেক প্রজাপতি বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। আসুন প্রজাপতি রক্ষায় সচেতন হই।