স্টাফ রিপোর্টার:
নারীর ক্ষমতায়ন ও বৈষম্যহীন সমাজ গঠনে আত্মপ্রত্যয়ী সফল নারী শিল্পোদ্যোক্তা ও দেশবরেণ্য সংগঠক সাহানা সুলতানা জাতীয় জাগো নারী ফাউন্ডেশন কর্তৃক বর্ষসেরা আলোকিত নারী আজীবন সম্মাননা ২০২৪ এ মনোনীত হয়েছেন।
আগামী ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ শনিবার, বিকেল ৩.৩০ ঘটিকায়
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের, মহিলা সংস্থা ভবন অডিটোরিয়ামে তাঁকে আজীবন সম্মাননা ২০২৪ প্রদান করা হবে।
দেশবরেণ্য ও বর্ষসেরা আলোকিত নারী হিসেবে আজীবন সম্মাননায় মনোনীত
সাহানা সুলতানার একান্ত সাক্ষাৎকারে বলেন তার পরম শ্রদ্ধেয় পিতা হলেন জনাব আকবর আলী একজন সাধারন বব্যবসায়ী ও মাতা নাসিমা বেগম একজন গৃহিণী তার জন্ম ১৯৭৪ সালের ১৩ মার্চ।
পুরান ঢাকার নারিন্দা এলাকায়।
শান্ত স্বভাবের সাহানা চার ভাইবোনের মধ্যে সবার বড়।ছোট দুই ভাইয়ের একজন, শওকত তাইওয়ানের ব্যবসায়ী।ছোট ভাই কাওসার আলীও ব্যবসায়ী।ছোট বোন রুনা খান স্বামীর সংসারে সুখেই আছেন।
বাল্য কাল থেকে সাহানা যৌথ পরিবারে বড় হয়ে ওঠেন।শিক্ষা জীবন শুরু হয় ওয়ারী উচ্চ বিদ্যালয়ে। পরবর্তীতে টিকাটুলিস্থিত শেরে বাংলা বালিকা মহাবিদ্যালয় ভর্তি হন। ১৯৯০ সালে ঐ স্কুল থেকে এস এস সি পাশ করেন।
পরবর্তীতে সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজ ভর্তি হন।
সেখান থেকে ১৯৯২ সালে এইচ এস সি এবং ১৯৯৪ সালে বি,এস,সি পাশ করেন।
পড়াশোনার অধিক আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও বিয়ের পিড়িতে বসতে হয় সাহানাকে।পুরান ঢাকার বংশাল নিবাসী একজন ব্যবসায়ীর সাথে ১৯৯৫ সালে সাহানার বিয়ে হয়।সংসার সন্তান নিয়ে ব্যাস্ত থাকতেন, তিন সন্তানের জননী এই সাহানা।তার বড় ছেলে মো. আমিন শয়ন,ছোট ছেলে মো. আলিম নয়ন,এবং আদরের মেয়ে সুমাইয়া,,শিক্ষা নবীশ।
সাল ২০১৯ থেকে সংসার সন্তানের যত্নের পাশাপাশি সাহানা নানা সামাজিক কার্ম কান্ড ও নারী উদ্যোক্তাদের সাথে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেন।
প্রথমে তিনি অনলাইনে পোষাক বিক্রি শুরু করেন।
ব্যাবসায় তেমন সফলতা আসেনি। কারন ব্যাবসার শুরুতেই সারা বিশ্বে করোনা নামক ধস্ নামে।
সাহানা খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হন,সেই সময়ে ।কিন্তু তিনি দমে থাকেননি।
ড্রেস সেলের পাশাপাশি আচার ও হোমমেড ফুড নিয়ে কাজ শুরু করেন তিনি।
তিনি আচার ও হোমমেড ফুডে ব্যাপক সাড়া পান।দিক বিদিকে ছড়িয়ে পড়ে তার আচার ও হোমমেড ফুডের প্রচারনা।তিনি দেশ সহ দেশের বাইরেও আচার, ড্রেস পাঠান।বিভিন্ন ইভেন্টে খাবার পাঠান।অফিস লাঞ্চ সহ ফুড পান্ডা,হাংরি নাকি,সহজ ফুডে খাবার ডেলিভারি দেন।
তিনি বিজনেসের পাশাপাশি নিয়মিত লেখালেখি করেন। ছোটবেলা থেকেই লেখালেখির ঝোক ছিলো সাহানার।বর্তমানে তিনি একজন নিয়মিত লেখিকা।
ওনার লিখা ৩০০ এর অধিক কবিতা আছে।নিয়মিত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখা প্রকাশ করেন। অসংখ্য কাব্যগ্রন্থে, ম্যাগাজিনে,পত্রিকায় ওনার কবিতা ছাপা হয়।কোলকাতার প্রয়াস পত্রিকায় ওনার লেখা কবিতা ছাপা হয়েছে।সাধারণ নারী নামক একক কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হওয়ার পথে।
উনি একজন রন্ধন শিল্পীও। পারিবারিক ভাবে শিক্ষা নেয়া এ শিল্পকে তিনি ধারণ করেছেন।পুরান ঢাকার আদি খাবার নিয়ে কাজ করছেন।বিভিন্ন সময়ে ওনার রান্নার প্রোগ্রাম বেসরকারি টিভি চ্যানেলে প্রচার করা হয়।
হৃদয়ে পতাকা ২ মার্চ নামক জাতীয় ভিত্তিক একটি সামাজিক সংগঠনের সভাপতি তিনি।২ মার্চকে,জাতীয় পাতাকা দিবস রাষ্ট্রীয়ভাবে ঘোষণার দাবীতে তার সংগঠন কাজ করে যাচ্ছে। সুধী সমাজে ওনার ম্যাসেজ পৌছে দেবার জন্যে তিনি সহ তার সংগঠন বহু দিন থেকে কাজ করছেন।আশা করা যায় নানা মহলে বিষয়টি আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন।
এছাড়াও সামাজিক কর্মকান্ডে সাহানা সব সময় এগিয়ে আসেন।ব্লাড ডোনার খুঁজে দিতে তিনি কাজ করেন।
রমজানে অসহায় ছিন্নমুলদের সাথে নিয়ে ইফতার করেন।
বর্তমানে জাগ্রত পথশিশু সংগঠনের পৃষ্ঠপোষকতার দায়িত্বে আছেন।
তাছাড়া বিভিন্ন সামাজিক ও সাহিত্যিক জগতের সংগঠনের গুরু দায়িত্বে আছেন।
সাহানা ভালো বক্তা এবং একজন বাচিক শিল্পী ও বটে।বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের পক্ষে থেকে সমাজ বিনির্মানে বিভিন্ন সভা সেনিনারে জোরালো বক্তব্য পেশ করে যাচ্ছেন।
একজন সফল স্বার্থক নারী হিসেবে পথচলা খুব সহজ ছিলোনা। পুরান ঢাকার আদি কালচারে বেড়ে ওঠা এক নারী সাহানা, জীবনের নানা ঘাত প্রতিঘাত পেরিয়ে আজ একজন সামাজসেবী,সংগঠ ও নারী উদ্দোক্তা। সর্বোপরি একটি সামাজিক সংগঠন হৃদয়ে পতাকা ২ মার্চ এর সভাপতি এবং জাতীয় পর্যায়ে ইতিহাসের দাবী নিয়ে এগিয়ে চলা এক নারী।
একজন বন্ধু বৎসলা, নারী নেতৃত্ব দিতে সক্ষম। নারী জীবনের নানা বিষয় নিয়ে বিভিন্ন সময়ে টকশোতে উপস্থিত হয়ে নিজেকে উপস্থাপন করে যাচ্ছেন এই সাহানা।ইট-পাথরে ঢাকা পুরান ঢাকার অলিগলি থেকে উঠে আসা একজন সার্থক আলোকিত নারী হিসেবে সাহানা সুলতানা ( সাহানা সেলিম) এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।