মোঃ রাব্বি হোসেন, স্টাফ রিপোর্টার
যৌক্তিক সময়ের মধ্যে দ্রুত রাস্ট্র মেরামত ও সংস্কার সম্পন্ন করে জাতীয় সংসদ নির্বাচন এর রোডম্যাপ ঘোষণা করার আহবান জানিয়েছেন গণতন্ত্র মঞ্চের কেন্দ্রীয় নেতা, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহবায়ক বীরমুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু। ২৪ অক্টোবর ২০২৪ আমার দেশ আমার অধিকার পার্টির ৮ম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপনের আলোচনা সভার প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু আরো বলেন দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে ৩৮ টি রাজনৈতিক দল, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন , পেশাজীবি ও গণমাধ্যমের অনেক ব্যক্তিত্বের আন্দোলন এর চুড়ান্ত ফসল হচ্ছে ছাত্র জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লব ও বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন বিপ্লবী সরকার। আন্দোলনের শরিক দল সমুহের মতামত কে পাশ কাটিয়ে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ অন্তর্বতী কালীন সরকারের জন্য হিতে বিপরীত হবে। বিপ্লবী সরকারকে ব্যর্থ করে দিতে দেশি-বিদেশি চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র রুখতে ছাত্র-জনতা ও রাজনৈতিক দল গুলোকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
তিনি আরো বলেন,এখনো প্রশাসনের রন্দ্রে রন্ধ্রে পতিত স্বৈরাচাারের দোসররা সক্রিয় রয়েছে, সিন্ডিকেট করে নিত্যভোগ্যপণ্য দাম বাড়িয়ে সাধারণ জনগণকে বিপ্লবী সরকারের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়ে বিপ্লবী সরকারকে উৎখাত এর গভীর ষড়যন্ত্র করছে। পতিত স্বৈরাচারের বাণিজ্য সিন্ডিকেটকে চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক ও প্রবীণ রাজনীতিবিদ জননেতা কাজী আবুল খায়ের বলেন, খুনি ও সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা হলেও মূল ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও তাদের শরীকদের নিষিদ্ধ না করা খুবই দুঃখজনক। তিনি বলেন গাভীকে বাঁচিয়ে রেখে বাছুরকে ফাসি দিলে ফ্যাসিজম নির্মূল করা সম্ভব হবে না। ছাত্র জনতার বিপ্লবকে ব্যার্থ করে দেওয়ার জন্য পরাজিত ফ্যাসিস্ট ও তাদের দেশি-বিদেশি কুশীলবরা মরনপন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। জাতির এই কান্তি কালে দল মত নির্বিশেষে ফ্যাসিজম বিরোধী শক্তি ও ভারতীয় আধিপাত্যবাদকে রুখতে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন ক্ষুদ্র স্বার্থ ও ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে দেশে প্রকৃত গণতন্ত্র সুশাসন নিশ্চিত করার স্বার্থে নিজেদের মধ্যে বিভেদে না জড়িয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকা সময়ের অনিবার্য দাবি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ গণ আজাদী লীগের সভাপতি জননেতা মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খান বলেন, রাষ্ট্রের মালিক হচ্ছে জনগণ, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ এর অবৈধ দখলদারদের কে জনগণ উচ্ছেদ করে রাষ্ট্রের মালিকানা বুঝে নিয়েছে। পরাজিত ফ্যসিস্ট শক্তি আবারো মরিয়া হয়ে দেশি বিদেশি চক্রান্তের মাধ্যমে ফিরে আসার মরন কামড় দেয়ার অপচেষ্টা ও নিত্যনতুন ষড়যন্ত্র করছে। পতিত স্বৈরাচারকে রুখতে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
তিনি বলেন রজনৈতিক দলের ভেতরেই যদি গণতন্ত্রের চর্চা না থাকে দেশে উদার গণতন্ত্র বহাল রাখা সম্ভব নয়। রাজনৈতিক দলে যতদিন মনোনয়ন বাণিজ্য,কমিটি বাণিজ্য বজায় থাকবে ততদিনে এদেশে প্রকৃত গণতন্ত্র ও অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না।
তিনি আরো বলেন, আমরা গান বজনা, চাটুকারিতা ও গালাগালির জাতীয় সংসদ চাইনা। রাজনৈতিক দলে গণতন্ত্রের চর্চা না থাকলে রাজতন্ত্র বা জমিদারী প্রথার সৃষ্টি হতে পারে। রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আনতে হবে। মেধা, যোগ্যতা ও দেশপ্রেম হবে রাজনীতিবিদদের মাপকাঠি। রাজনীতিতে কালো টাকার মালিক, গড়ফাদার, সন্ত্রাসী ও পেশাদার ব্যবসায়ীদের আধিক্য বন্ধ করতে হবে।
আমার দেশ আমার অধিকার পার্টির সভাপতি জননেতা শেখ শাখাওয়াত তানজিম এর সভাপতিত্বে ও মোক্তার আখন্দ এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত ৮ ম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ডেমোক্রেটিক পিপলস পার্টির সভাপতি জননেতা মোঃ আব্দুল কাদের, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি জননেতা কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন, জিয়া সমাজ কল্যাণ পরিষদের সভাপতি জননেতা গিয়াস উদ্দিন খোকন গণধিকার পরিষদের বিপ্লবী নেতা ও সাবেক ছাত্রনেতা মোহাম্মদ তারেক রহমান প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে শেখ সাখাওত তানজিম বলেন
যদি বিপ্লবী সরকার ব্যর্থ হয় বাংলাদেশকে কঠিন মূল্য দিতে হবে,তাই যেকোনো মূল্যে সংস্কার ও রাষ্ট্র মেরামত কে সফল করে সুশাসন, গণতন্ত্র ও বৈষম্যহীন সমাজ নিশ্চিত করতে বিপ্লবী সরকারকে দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দল সমুহকে সম্মিলিতভাবে সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে হবে। আর বিপ্লবী সরকার কে সত্যিক সময়ের মধ্যে সংস্কার সম্পন্ন করে তো নির্বাচনের রোড ম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। পতিত স্বৈরাচার বিরোধী সকল শক্তিকে দেশি-বিদেশি চক্রান্ত মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। শেষে প্রধান অতিথি কেককেটে, দোয়া ও মুনাজাতের মাধ্যমে ৮ম প্রতিষ্টা বার্ষিকীর বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।