সুদীপ্ত মিস্ত্রী ডুমুরিয়া প্রতিনিধিঃ
অতিরিক্ত জোয়ারের চাপে খুলনার উপকূলীয় এলাকা ডুমুরিয়া উপজেলার ৭ নং শোভনা ইউনিয়নের বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরের পর স্থানীয় গ্যাংরাইল নদীতে পানির চাপ বাড়লে ৮ নং ওয়ার্ডের মাদারতলা গ্রামের খেয়াঘাট সংলগ্ন পিচের রাস্তাটি ভাঙতে থাকে। অল্প সময়ের মধ্যে পিচের রাস্তার তলদেশের বাঁধ ভেঙে পুরো এলাকা তলিয়ে যায়। এতে নিকটস্থ গ্রাম প্লাবিত হয়। গ্রামবাসী ও স্থানীয়দের স্বেচ্ছাশ্রমে এখন চলছে বাঁধ নির্মাণের কাজ।
শোভনা ইউনিয়নের সাবেক চেয়্যারম্যান মতিয়ার রহমান বাচ্চু জানান, মাদারতলা গ্রামের পাশেই গ্যাংরাইল নদী। দুপুরের দিকে সেখানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপকূল রক্ষার বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। এ সময় গ্রামের মধ্যে পানি প্রবেশ শুরু করে। প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কায় মূল গ্রামগুলো হল- মাদারতলা,বারুইকাটি, ব্রক্ষ্মারবেড়,শেখেরট্যাক,কাঁঠালিয়া,ঝরঝরিয়া,আমুড়বুনিয়া, সহ হেতালবুনিয়া।
শোভনা ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নং ওয়ার্ড মেম্বার মৃণাল বিশ্বাস বলেন, ‘শুক্রবার সকাল থেকে মাদারতলা গ্রামে গ্যাংরাইল নদী ভাঙন শুরু হয়। ভাটার সময় আমি স্থানীয় লোকজন নিয়ে বাঁধগুলো সংস্কারের চেষ্টা করছিলাম।’
স্থানীয় সমাজ সেবক স্বপন মিস্ত্রী বলেন, ‘আমাদের এলাকা ছাপিয়ে অন্তত ১০টি গ্রাম পানিতে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা ছিলো। স্থানীয়ভাবে আমরা চেষ্টা করেও এটা ঠিক করতে পারিনি। পানির চাপ আরও বাড়ছে। এই এলাকায় আরও বেশ কিছু বেড়িবাঁধ ভেঙে যেতে পারে। রাতে পানির চাপ বাড়লে অনেক বাড়ি ঘর ভেঙে যাওয়ার শঙ্কাও রয়েছে। কিছুদিন আগে হওয়া ঝড়ে এখানকার বেড়িবাঁধ ভেঙে গিয়েছিল। তখন পানি উন্নয়ন বোর্ড নামমাত্র সংস্কার করেছে। ফলে এখন আবার ভাঙন দেখা দিয়েছে। দ্রুত পানি উন্নয়ন বোর্ড ব্যবস্থা না নিলে আমাদের এলাকার অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে।
স্থানীয় সাবেক মেম্বর গৌরাঙ্গ মন্ডল বলেন, ‘শনিবার সকাল থেকে আমরা বাঁধ নির্মাণের চেষ্টা করছি, শনিবার সকাল পর্যন্ত বাঁধের অনেকটা অংশ নির্মাণ করতে সক্ষম হয়েছি। নিকটস্থ কদমতলা,মাদারতলা চলতি ব্রিজ প্রকল্পের কনফিডেন্স কোম্পানির পক্ষ থেকে ব্যাপকভাবে ভিটবালি ও বস্তা বিতরন করেছে। তবে পুরো এলাকা এখনও পানির নিচে। এখানে ফসলের অনেক ক্ষতি হয়েছে। অনেক মাছের ঘের তলিয়ে গেছে। ঠিক সময়ের মধ্যো বাঁধ নির্মান করতে না পারলে,কোটি টাকার উপরে ক্ষতির আশঙ্কা ধরা যাচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আশরাফুল আলম বলেন, ‘স্থানীয়দের সহায়তায় ভেঙে যাওয়া বাঁধ পুনর্নির্মাণ করা হচ্ছে। শনিবার বিকেলের মধ্যে আশা করা যাচ্ছে বাঁধ নির্মাণ সম্পন্ন হয়ে যাবে। আরও কয়েকটি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ আছে। ভাঙন মোকাবেলায় আমরা প্রস্তুত আছি।