মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:২৭ অপরাহ্ন

সিরাজগঞ্জে কাঠের ঘানি টেনে সংসার চালান জহুরুল ও মিনা বেগম দম্পতি

Coder Boss
  • Update Time : রবিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৪
  • ৩১ Time View

মোঃ মোকাদ্দেস হোসাইন সোহান, সিরাজগঞ্জঃ

দীর্ঘ ৩৮ বছর থেকে ঘানি টেনে জীবিকা নির্বাহ করছেন জহুরুল (৫০) ও তার পরিবার। জহুরুলের বাড়ি সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জের ব্রহ্মগাছা ইউনিয়নের কালিয়াবিল এলাকায়। তিনি মৃত রফাত আলী প্রামাণিকের ছেলে। চাষাবাদের জমি নেই, জরাজীর্ণ বসতভিটায় বসবাস তার। পরিবারে রয়েছেন স্ত্রী মিনা বেগম, এক মেয়ে ও তিন ছেলে। তেলের ঘানি টেনে যা আয় হয়, তা দিয়ে সংসার চালাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় তাকে। সংসারের যাবতীয় খরচ চলে এ আয়ের ওপর নির্ভর করে। ইতোমধ্যে তিন ছেলে ও এক মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন তিনি। এই অমানষিক পরিশ্রমের মাধ্যমেই ঘোরে তাদের সংসারের চাকা। কড়ি কাঠের তৈরি কাতলার উপর প্রায় দুইশ কেজির পাথর বসিয়ে ঘাড়ে জোয়াল বেধে এই ঘানি টানেন তারা। ঘানির টানে ডালার ভিতর সরিষা পিষ্ট হয়ে ফোঁটায় ফোঁটায় তেল পড়ে নিচে রাখা পাত্রের মধ্যে। স্থানীয় হাটে এই তেল বিক্রি করলেই চলবে সংসার। প্রতিদিন ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত এভাবেই জীবন সংগ্রাম চালান হতদরিদ্র জহুরুল প্রামাণিক ও মিনা বেগম দম্পতি। জমি বলতে তাদের ওই বাড়ির ভিটেটুকুই। বংশ পরম্পরায় তারা এই পেশা ধরে রেখেছেন। সম্প্রতি ঐ বাড়িতে গিয়ে কথা হয় জহুরুলের সঙ্গে। তিনি জানান, প্রায় ৩৮ বছর ধরে আমি ও আমার স্ত্রী মিলে ঘানি টেনে খাঁটি সরিষার তেল বের করে বাজারে বিক্রি করি। সামান্য আয় দিয়েই কষ্ট করে চালাতে হচ্ছে সংসার। কিন্তু অভাব অনটনের সংসারে একমাত্র মেয়ের বিয়ে দিতে গিয়ে সেই গরুটিও বিক্রি করতে হয়েছে আমাকে। স্ত্রীসহ কষ্ট করে ঘানি টানলেও লজ্জায় কারও কাছে হাত পাতিনি। স্ত্রী মিনা বেগম বলেন, বয়স হয়েছে, তাই ঘানি টানতে আমাদের খুবই কষ্ট হয়। কিন্তু উপায়ও নেই, কী করব? তিনি আরো বলেন, বিয়ের পর থেকেই কাঠের ঘানি টানছেন। কাজটি কঠোর পরিশ্রমের ও খুবই কষ্টের।ইসমাইল হোসেন নামে এক প্রতিবেশী বলেন, এই প্রথম কেউ তাদের খোঁজ-খবর নিতে এসেছেন। আপনারা তাদের একটা গরু ও ঘরের ব্যবস্থা করে দিন। তাহলে এই পরিবারটি হয়তোবা আলোর মুখ দেখবে। এ বিষয়ে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী কাজল দাস বলেন, এ যুগেও ঘানি টেনে সংসার চালাতে হচ্ছে। এটা আমাদের জন্য দুঃখজনক। আমি সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতার হাত প্রসারিত করার আহ্বান জানাচ্ছি। এ ব্যাপারে রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাহিদ হাসান জানান, বিষয়টা খুবই অমানবিক। আপনার মাধ্যমেই জানলাম। তারা যদি আবেদন করে তাহলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102