এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির ,বাগেরহাট:
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে সরকারের ভর্তুকী মূল্যে বিতরণ করা ১৪টি আধুনিক কম্বাইন হারভেস্টার ধানকাটা মেশিনের মধ্যে ১১টি মেশিন নিখোঁজ থাকার ঘটনা তদন্তে নেমেছে দুর্ণীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদক বাগেরহাটের সহকারি পরিচালক মো. সাইদুর রহমানের নেতৃত্বে একটি দল আজ মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) কম্বাইন হারভেস্টার মেশিনগুলোর সন্ধান জানতে বেলা ১২টার দিকে মোরেলগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসে পৌছান। দুদকের দলটি তাদের প্রাথমিক তদন্তে ১৪টি মেশিনের মধ্যে ১১টি অনিয়মের আশ্রয়ে নিখোঁজ থাকার প্রমান পেয়েছে।
অভিযান শেষে সাংবাদিকদের প্রেস ব্রিফিং-এ দুদক কর্মকর্তা মো. সাইদুর রহমান বলেন, সরকারিভাবে এ উপজেলায় ৭০% ভর্তুকী মূল্যে ২০২১-২০২২ ও ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে সাধারণ কৃষকদের মাঝে স্বল্প সময়ে ধান কাটার সুবিধার্থে ১৪ টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার কৃষি যন্ত্রাশং (ধানকাটা মেশিন) কৃষি অফিস থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিতরণ করা হয়েছে। যা প্রতিটি মেশিনের মূল্যে ধরা হয়েছে ৩০ লাখ থেকে ৩২ লাখ টাকা। এর মধ্যে কৃষক বহন করেছে ৯ লাখ টাকা। বাকি টাকা সরকার ভতুর্কী দিয়েছেন। কাগজে কলমে এ মেশিনগুলো বিতরণ দেখানো হলেও বাস্তবে তা নেই। ১১ টি মেশিনের কোন হদিস মিলছে না। প্রাথমিক তদন্তে কৃষি অফিস থেকে এ কৃষি যন্ত্রাংশ বিতরণে অনিয়ম প্রমানিত হয়েছে। পরবর্তীতে তদন্ত সাপেক্ষে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এদিকে তালিকাপ্রাপ্ত সুবিধাভোগী অনেকেই বলছেন, ন্যাশনাল আইডি কার্ড তার নিকট থেকে নিয়ে তালিকায় নাম সংযুক্ত করা হয়েছে। মেশিন আদৌ তিনি পাননি। আবার মেশিন প্রাপ্ত সুবিধাভোগীরা কেউ কেউ বলছেন, অফিসের অনুমতি নিয়ে অন্য উপজেলায় মেশিন পাঠিয়েছেন। এ ধান কাটা মেশিন বিতরণে চরম অনিয়ম হয়েছে। সরকার অধিক মূল্যে ভতুর্কী দিয়ে সাধারণ কৃষকের সুবিধার্থে এ মেশিন দিয়েছেন। তা কোন কাজেই আসছে না। ভেস্তে গেছে সরকারের কৃষি সেক্টরের কোটি কোটি টাকা।
এ বিষয়ে মোরেলগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, এ উপজেলায় গত ৩ অর্থ বছরে সাধারণ কৃষকদের মাঝে ধান কাটা মৌসুমে স্বল্প সময়ে ফসল কাটার সুবিধার্থে ১৪টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬টি মেশিন বিভিন্ন ইউনিয়নে ফসল কর্তন কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। বাকি ৫টি মেশিন এর পূর্বের কর্মকর্তা আকাশ বৈরাগীর অনুমতি নিয়ে অন্য উপজেলা রয়েছে বলে এ কর্মকর্তা জানান। তবে, তিনি আসার পরে কোন অনুমতি দেননি।
মোরেলগঞ্জের কৃষি অফিসের সাবেক কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আকাশ বৈরাগী বলেন, ধান কাটা ১৪টি মেশিনই নিয়ম অনুযায়ী তালিকাপ্রাপ্তদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। বিতরণে অনিয়মের বিষয়ে তালিকায় নাম রয়েছে অথচ তিনি মেশিন পাননি এ রকম কোন অভিযোগ ইতোপূর্বে কেউ এসে তার দপ্তরে লিখিত বা মৌখিকভাবে বলেননি।