নিজস্ব প্রতিবেদক:
সিমান্তের বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার আহবান জানান সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদ। গণমাধ্যম পাঠানো এক সংবাদ বিবৃতিতে এই আহবান জানান সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদ এর প্রধান সমন্বয়ক মোঃ মোস্তফা আল ইহযায।
সিমান্তের বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার আহবান জানিয়ে বলেন, গত কিছুদিন যাবৎ বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকা সমূহে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইন লঙ্ঘন করে বাংলাদেশি কৃষকের উপর গ্রেনেড, গুলি ও মটার শেল নিক্ষেপ করছে। গত ছয় মাসে ভারত ৬৬৮(ছয়শত আটষট্টি) রাউন্ড গুলি, ২৯৭ ( দুই শত সাতানব্বই) টি বিভিন্ন রকম গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছে। এছাড়াও অতিরিক্ত আরও ৩৪৬ রাউন্ড গুলি চালানোর তথ্য পাওয়া গিয়েছে। এসময় পাম্প অ্যাকশন গানের সঙ্গে ব্যবহার করেছে ইনসাস- বেরেটা পিস্তল, গ্রেনেডের সঙ্গে ব্যবহার করেছে মর্টার শেল। জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশিদের উপর সব চেয়ে বেশি গুলি ও গ্রেনেডের ব্যবহার করেছে বিএসএফ। যতদিন যাচ্ছে ততই বিএসএফ কে আগ্রাসী ভূমিকায় দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। শুধুমাত্র নিজের আধিপত্য বজায় রাখতে ভারতের এমন অবৈধ ও বেআইনি কর্মকান্ড বলে আমরা মনে করছি।
এসময় বাংলাদেশ সীমান্ত রক্ষী বাহিনী(বিজিবি)কে সর্বদা সীমান্তে সতর্ক অবস্থানে থাকার আহবান জানিয়ে বলেন, সীমান্ত এখনো সম্পূর্ণরুপে সুরক্ষিত হয়নি। যা গত কিছুদিন ঘটে যাওয়া কর্মকান্ড পর্যালোচনা করলেই দৃশ্যমান হবে। কিছু দিন পূর্ব থেকে আমরা দেখতে পাচ্ছি, শান্ত সিমান্তে হঠাৎ করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। গত ৫ আগষ্টের পর ভারতীয় মিডিয়ার অপপ্রচারের মধ্যে দিয়ে সীমান্ত উত্তেজনা শুরু হয়। ভারতীয় ক্ষমতাসীন দলের নেতৃবৃন্দগণ রাজনৈতিক সুবিধা নিতে বিএসএফ কে ব্যবহার করে সীমান্তে উত্তেজনা সৃষ্টি করে এবং স্থলবন্দর অভিমুখে বিভিন্নরকম কর্মসূচি দিয়ে আমদানি রপ্তানি বাঁধা সৃষ্টি করে। সনাতনী ঐক্য মঞ্চের ব্যানারে নানাবিধ অযুক্তিক কর্মসূচি পালন করে এবং অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করে ফেনীর সীমান্তবর্তী এলাকা বিলোনিয়া সীমান্তে এসে উস্কানি মূলক আচরণ করে মোহাম্মদ ইলিয়াসকে ধরে নিয়ে যায়। আসামের করিমগঞ্জ সিমান্তে সনাতনী ঐক্য মঞ্চের বাঁধার কারণে সিলেটের জকিগঞ্জ শুল্ক স্টেশন দিয়ে আমদানি রপ্তানি বন্ধ হয়ে য়ায়। ৬ জানুয়ারি চাঁপাইনবয়াবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জের চৌকা সিমান্তে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ উত্তেজনা সৃষ্টি করে যা মাসব্যাপী চলতে থাকে। ৮ জানুয়ারি বুধবার নওগাঁ জেলার ধমরাইটা এর বস্তাধর সিমান্তে গোলযোগ সৃষ্টি করে ভারতীয় বাহিনী। লালমনিরহাটের দহগ্রাম সিমান্তে নোম্যান্সল্যান্ডে কাঁটাতারের বেড়া নির্মানের অযুহাতে গোলযোগ সৃষ্টি করে। ১৩ তারখি সাতক্ষীরায় ফাঁকা গুলি করে এবং কৃষি কাজে বাঁধা সৃষ্টি করে। কুমিল্লার আদর্শ সদরের জগন্নাথপুরে নোম্যান্সল্যান্ডে কাঁটাতারের বেড়া নির্মান। চাপাইনবয়াবগঞ্জে কৃষককে গুলি করে আহত করা ও সুনামগঞ্জের বিসম্বরপুরে সাইদুল ইসলামকে গুলি করে হত্যা সহ অসংখ্য ঘটনার জন্মদেয় ভারতীয় বাহিনী। বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মাধ্যমে বাংলাদেশ অভ্যন্তরে গোলযোগ সৃষ্টি ও একটি জাতিগত সংঘাত সৃষ্টির চেষ্টা চলাচ্ছে বলে বিভিন্ন মাধ্যমে খবর পাওয়া যাচ্ছে।
বাংলাদেশ সরকার এবং দেশের সার্বভৌমত্বের সুরক্ষায় নিয়জিত রাষ্ট্রীয় বাহিনী সমূহের সদস্যদের নজরদারি বৃদ্ধি ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা জন্য অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ষড়যন্ত্র সমূহের চিহ্ন অনুসন্ধান পূর্ব প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে আহবান করেন এবং সীমান্তবর্তী এলাকা সমূহের বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার অনুরোধ করেন সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদ এর প্রধান সমন্বয়ক মোঃ মোস্তফা আল ইহযায। বিবৃতিতে আশঙ্কা করে বলেন, ভারতীয় বাহিনী আপাতত শান্ত থাকলেও যেই কোনো মহূর্তে রূপ পরিবর্তন করে জটিল পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। তাই সীমান্তবর্তী এলাকা সমূহের জনগণকে সর্তকতার পাশাপাশি সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা ও প্রতিহত করতে প্রস্তুত থাকতে হবে।