মানুষ হবি কবে?
মুখে মুখে বড় কথা করিস দিবস-রজনী,
আড়ালে তুই অন্য পথে হাঁটিস নিজস্ব ধরণী।
মানুষ হবি কবে রে তুই বাঁচবি কবে তুই সঠিক?
দেখবি কবে সবার মাঝে তোরই আদল ঠিক?
স্বপ্ন দেখিস চাঁদের আলো তবু মাটির খবর নেই,
হৃদয়ে তোর যত স্বার্থ ভালোবাসা আর কত দেই?
মানুষ হবি কবে রে তুই ত্যাগের পথটা চাস কই?
পরের ভালো চাস তুই কবে নাকি নিজেরটাতে রই?
খুব বুঝিস তুই ন্যায়-নীতি বলিস বড় বড় বুলি,
তবু কেন তোর মনেতে দাগ রয়ে যায় কত ভুলই?
নিজের ইচ্ছা রাজা হবি কিসের দায়ের তোর বাণী?
খুঁজিস শুধু নিজের সুখ তাতেই তোর সব কাহিনী।
পথে পথে কাঁটা বিছায় অথচ মুখে ফুল,
মুখের কথা সুন্দর অন্তরটা তুই ভুল।
মানুষ হবি কবে রে তুই চোখের জল বুঝবি?
অন্যের দুঃখ বুকে ধরবি তবেই মানুষ হবি।
স্বার্থের পথ ছেড়ে দিয়ে হাঁটবি তুই ভালোয়,
সত্যের জন্য লড়বি তুই, দাঁড়াবি যার পাশে রয়।
মানুষ হবি কবে রে তুই, চিনবি তোরই মন?
মানুষের মতো বাঁচার দিন কি আসবে কখন?
মানুষ হবি কবে রে তুই সময় শেষ হয় তবে,
মানুষের চেয়ে বড় কিছু নেই—সেটা জানবি কবে?
মানুষ হবি কবে রে তুই এমন জগৎ চাই,
মিথ্যে ছাড়া মুখে তোর আর কিছু কি নাই?
চোখে চোখে দেখিস মানুষ মনেতে রাখিস দূরে,
ভালোবাসা ভুলিস সবই হিসেব করিস ঘুরে।
মানুষ হবি কবে রে তুই চিনবি আপন পর?
হৃদয় খুলে বলবি সবার "ভালোবাসা মোর।"
প্রয়োজনে কদর বাড়ে
যখন প্রয়োজন এসে দাঁড়ায় দ্বারে,
তখনই কদর বাড়ে, সবাই থাকে সজাগ স্নেহে।
যে ছিলো আড়ালে, ছিলো দূরে কোথা,
আজ তারই জন্যে জ্বলে মন-প্রদীপের আলোটা।
যে মানুষ অবহেলায় কাটিয়েছে কাল,
আজ তারই পানে তাকায় অবিরাম।
যে বাতাসের মতো ছিলো অদৃশ্য,
প্রয়োজনে তারই হয় প্রকাশ্যে জয়গান।
যে নদী শুকিয়ে ছিলো তৃষ্ণার্ত বুকে,
এক পশলা বৃষ্টি এলেই তার কদর ঝরে।
যে পাখি চুপ করে ছিলো আকাশের কিনারে,
প্রয়োজনে তার সুরে সুর মেলায় প্রকৃতির রঙিন চাদরে।
সময় বলে দেয় কে কবে দামি,
কখন কার প্রয়োজন হবে অমূল্য জিনিসখানি।
তবু মানুষ ভুলে যায় সহজে সেই কথা,
যে মূল্যহীনটা একদিন সবার প্রিয় কথা।
যে আগুন নেভে না অযত্নের ছায়ায়,
একদিন তারই হবে উষ্ণতার মায়ায়।
যে সম্পর্ক ভাঙে অবহেলায়,
প্রয়োজন হলে সেও হয় ফের আগমনে খোলা খেয়ায়।
এই পৃথিবী ঠিক, কে কখন কেমন করে বাঁচে,
সময় মতো সবার মূল্য তুলে ধরে।
শুধু প্রয়োজন হলেই তার সুর বেজে ওঠে,
তখনই সবাই তার পাশে এসে জোটে।
তাই বলি, যাকে আজ ফেলেছো হেলায়,
সে কাল হতে পারে জীবনের আশ্রয়।
প্রয়োজনের দোরগোড়ায় দামি হয়ে যায়,
সবাই, সবকিছু—সময় শুধু তাকে চিনিয়ে দেয়।
জান্নাত আমি চাই
জান্নাত আমি চাই, সেথায় শান্তি পাই,
রাখবে যেথায় আল্লাহ, মমতা ঢেলে তাই।
দুঃখ নেই যেথায়, নেই কষ্টের বোঝা,
সুখে ভরা সেথায়, আলোয় রাঙা মোজা।
নবীজির সাহচর্য, জান্নাতে পাবো,
সত্য পথে চললে, আল্লাহর দয়া পাবো।
দিনরাত ইবাদতে মনটা দিবো যত,
তাকওয়ার পথে চলি, ভয় দূর হবে তত।
পাপের ছায়া হতে দূরে আমি থাকি,
সৎ পথে চলি, যেন ভুল না করি।
জান্নাত আমার লক্ষ্য, ওতেই মোর আশা,
আল্লাহর রহমতে পূর্ণ হোক ভালোবাসা।
মধুর সেই জীবন, জান্নাতের ঠিকানায়,
চাই শুধু আল্লাহর, সন্তুষ্টি মহানায়।
তাহারই পথে চলি, মেনে তাঁর রীতি,
জান্নাতের দ্বার যেন হয় আমার গতি।
প্রভুর ইবাদতে কাটুক সব বেলা,
তোমার মহিমা যেন থাকে মনের খেলা।
মা-বাবার সেবায় রাখো সদা মোর মন,
তোমার রহমতে ভরে উঠুক মোর জীবন।
মিথ্যা ও হিংসা দূরে সরিয়ে,
সত্য পথে চলি, রাখো তুমি ধ’রে।
দয়ালু, প্রভু তুমি, মাফ করো ভুল,
তোমার রহমতেই পাবো শান্তির কূল।
জান্নাতের বাগানে, শান্তির ছায়ায়,
তোমার সাথেই যেন শেষ ঠিকানায়।
তোমার প্রেমে মোর হৃদয় ভরে রাখি,
জান্নাতের আশায় আজীবন ডাকি।