কলমেঃ বেলায়েত বাদল।
আমাদের বাড়ি পাশে বড় বিল হয়ে,
উঁচু পাড় সুন্দর খাল গেছে বয়ে।
দৈর্ঘ্যটা দশ মাইল, প্রস্থও বেশ,
নদী হতে শুরু হয়ে নদীতেই শেষ।
আষাঢ়েতে খুলে দেয় খাল মুখ খিল,
উপচিয়ে পানি গিয়ে ভরে বিল, ঝিল।
বর্ষায় ভরপুর জল ঘোলাটে,
স্রোতেতে কচুরীপানা চলিল ছুটে।
চাঁই পেতে ধরে মাছ বোয়াল, বেঁলে,
জাল্লায় সাঁকো নিচে জালটা মেলে।
চার ফেলে ছাতা মেলে বড়শি হাতে,
আর চোখে চেয়ে থাকে বকের সাথে।
বাঁশ গেঁড়ে, কাঠ মেরে নাহিবার ঘাট,
মোড়ে-মোড়ে খালপাড়ে জমে মেলা, হাট।
মাঘ মাসে পানি কমে কুয়াশা শীতল,
বেঁধে সেঁচে ধরে মাছ ছেলেদের দল।
পাইপ দিয়ে পানি দেয় শস্য ক্ষেতে,
নুয়ে পড়া উদ্ভিদ উঠিল মেতে।
লালশাক, পুঁইশাক, লাউয়ের মাচা,
বরবটি, শসা, শীমে ভরিল খাঁচা।
বৈশাখে সরু রেখা স্বচ্ছ জলে,
বালকেরা পার হয় কাদা পা গলে।
স্বর্পের মত খাল যায় একেঁ-বেঁকে,
ছাগলেরা ঘাস খায় কিশোরী দেখে।
দুই পাশে ধান ক্ষেতে সবুজ মেলা,
হাওয়া লেগে ঢেউ জেগে শীষের খেলা।
খালপাড়ে বৃক্ষরা ঘন সুশীতল,
নিড়ি দেয় জিড়িয়ে কৃষকের দল।
রোদে তেঁতে মজুরেরা নিতে আসে দম,
তমাল, জারুল, বট, শিমুল, কদম।
ছায়া পড়ে পাতা নড়ে চাঁদের কিরন,
দুই পারে দুইজন বিনিময় মন!
জোছনায় নৌকায় গিয়ে ঐ পারে,
কলা, পেঁপে, পেয়ারা দেয় প্রেমিকারে।
একদা স্বরেঅ সাঁতার দিল,
হাত ধরে স্বরেআ উঠিয়ে নিল।
পাড় কাটি খায় মাটি ভূমিদস্যু-
বাঁধা দিলে ফোন দেয় কোপা-শামসু!
সরকার ফিবছর কেঁটে যায় খাল,
ভেকুমিয়া টাকা খেয়ে হয় লালে লাল।
জমিঅলা বরাবর করিছে ভরাট,
মাঝে মাঝে চাপা খাল ক্রিকেটের মাঠ।
অনেকেই বৈকালে আসে বেড়াতে,
দূর্বায় হাঁটে, বসে বেদে ডেরাতে।
এই খাল আমাদের উপকার ভাই,
বড় খাল হলেও কোনো নাম নাই।
পানি, স্রোত, ঢেউ, মাছ নদীর মত,
তবে কেন ভাল নাম নদীর যত?