কলমেঃ কামরুন নেসা লাভলী
তন্দ্রাছন্ন হয়ে কখন ঘুমের ভিতর
ডুবে গেছি----
সেই ছোট্ট গ্রাম ---
গ্রামের নাম কলমিলতা
পাশ দিয়ে নদী , নদীতে
বাইয়া চলে নৌ মাঝি
গান গাইয়া জীবনের পথ
খুঁজনের আশা বান্ধে ।
সে - ই আমি আঁকা / বাঁকা
পথের ধার দিয়া ছুট দে ছুট ---
হঠাৎ ! পিছন থেকে তুমি আইসা
চোখ ধইরা কইতা বলত ,
কইন্যা কে আমি ?
আমি অমনি তোমার হাতের স্পর্শে
বুকের কাঁপনে বুঝতাম ---
তুমি আমার নাগর !
দুই জনে মিলে বকুলের তলে ফুল তোলা
ঝর্ণার ধারে গীত গাওয়া , নদীতে বইসা -
শেষ বিকেলে সূর্যের অস্ত ডোবা দেখতাম ---
কি , যে চিক চিক করত ----
পশ্চিমা আকাশে সন্ধ্যার আগমনী ধ্বনি
প্রানের মইধ্যে কেমন যেন ভালো লাগার
কথা কইত ।
জামরুল , আম আরো কত কি গাছ ?
গাছ থেইক্কা আম পাইরা কইতা
নে , এত আদর কইরা কেউ সাধবোনা ---
আমরা দুই জন শাকের উপর দিয়া
গ্রামের ভিতর পাঁচালীর গল্প
শুনতে যাইতাম ---
তুমি ছিলে আমার মইধ্যে ---
আমি ছিলাম তোমার অন্তরে
ঝিলে যেমন পদ্ম ফোটে আপন মনে
আমি তেমন পদ্ম জলে তোমার বুকে
ভাসতাম ।
হঠাৎ !
কি এক আতংকে ঘুম ভেঙে যায়
চিৎকার করে উঠি নাগর , নাগর !
এপাশ ওপাশ কোথাও
তুমি নেই ---
স্বপ্ন ভাঙ্গে আর্তনাদে
চিৎকার করে উঠি
ডুকরে ডুকরে কাঁদি ---
সেই করিডোর , জানালার ভারি পর্দা ,
দক্ষিণা বাতাসের সুগন্ধ
কার্পেটের গাম্ভীর্য সব ---
সব কিছু অচেনা মনে হতে থাকে
নিজেকে সামলে নিয়ে শাড়ীর আঁচল
ঠিক করতে করতে আয়নায়
তোমার স্পষ্ট মুখচ্ছবি ভেসে ওঠে ।
তবুও বেরিয়ে পড়ি যান্ত্রিক কোলাহলে
নিত্য নৈমিত্তিক কংক্রিট ধুলো মাখা জীবনে ।।