কলমেঃ সাহেলা সার্মিন
গোধূলির শেষ বেলা ধিকিধিকি জ্বলে
আড়ম্বরে ভরা কতো চকচকে যৌবন গেছে চলে।
দু'বাহুতে ছিলো কতো বল দু'পা সদা সচল
কর্ম মূখর সুখকর দিন কতো হৈ হুল্লোড়।
কতো ভালো বাসাবাসি কতো খুনসুটি
কতো আনন্দ কতো কাজ করে বাটাবাটি।
কতো অতিথি সেবা বাড়ি ভরা কলরব
আজ মানুষ থেকেও শূন্য, থাকে দূরে সরে সব।
ক্ষুধায় পেট জ্বলে ঘরে কেউ আসেনা ছলে
কখনো আসে এক প্লেট ভাত-ভাজি আর ডালে।
কখনো একটু খানি মাছ প্লেটের কার্ণিশে
তরকারির তলানি ঝোলে কাঁটায় মিলে।
স্বামী সোহাগে মুখে তুলে দিতো কতো বাহারী খাবার
আজ ডাল-ভাত ভর্তা ছাড়া কিছুই জোটেনা আর।
ডাগর আঁখি আজ ঘোলা জলে ভরা
দৃষ্টি ক্ষীণ সকাল দুপুর সন্ধ্যা একই ধারা।
তবুও স্মৃতিটুকু জাগরূক জ্বলজ্বল করে জ্বলে
তখনই ঝরে দু-চোখে বন্যা রেমারি বলে।
মলিন বিছানা জীর্ণ শীর্ণ দেহ
ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করে দেয় না কেহ।
টেবিলে ফুলদানিতে আজ নেই কোনো ফুল
ধবধবে বিছানা নেই টেবিলে তাজা ফুল।
পুত্রবধূ মহারাণী তাহার সময় নাই
পুত্র আরো ব্যস্ত মায়ের কথা মনে নাই।
নাতি-নাতনী ব্যস্ত লেখাপড়া ল্যাপটপ নিয়ে
দাদীর ঘরে বেহুদা সময় নষ্ট গেমস্ খেলে তার চেয়ে!
কখনো জ্বরে ডুকরে কাঁদে তেষ্টায় গলা কাঠ
একগ্লাস জলের জন্য নিজেকেই পেরোতে হয় চৌকাঠ।
ধপাস করে আছাড় পড়ে কোমর ভাঙে আবার
বিপদ এতে কমলো নাতো বেড়ে গেলো সবার।
কেনো আল্লাহ এমন জীবন দিলেন মানব তরে
শিশুর মতো লালন করার মানসিকতা দাও ঘরে ঘরে।
মা-বাবা বদলা চায়না চায় শুধুএকটু ভালোবাসা
এটুকু পেলেই বৃদ্ধ বয়সে সময় কাটবে খাসা।