কলমেঃ ইঞ্জিঃ মোঃ সিরাজুল ইসলাম।
পল্লী গায়ে জন্ম নিলাম
বিলের কাদা মেখে ছিলাম,
পেটের দায়ে গ্রাম ছাড়লাম
শহরের জীবনে এসে পড়লাম!
জোব মাটির গন্ধ গায়ে
চড়েছি কত ডিঙি নায়ে,
খরস্রোতা মধুমতী
পার হয়েছি দিনে রাতি !
মটরশুঁটি সরিষার ক্ষেত
শুনেছি, পুঁথি পড়া জেগে রাত,
ছিলো না মোজো পেপসি, কোঁকা কোলা
মা খাওয়াতেন, ডিম কূল, দুধ ভাত, শবরী কলা!
ফুটবল হাডুডু খেলেছি মাঠে
শহুরে বাবু সব পার্কে হাটে,
গরু দাবড় ঘোর দৌড় ডাঙায় হতো
কবি গান জারি গান আঙ্গিনায় যতো!
সার্কাস যাত্রা নাটক
পথে পথে ঘুরতো, দলবেঁধে অষ্টক,
ছেলেরা মেয়ে সেজে নায়িকা হতো
পিছে পিছে ঘুরতো ভাদাইমা যতো !
কত সুন্দর ছিলো সে-ই গ্রাম-জীবন
আইজ সেথা চাঁদাবাজির বীজ বপন,
যে বয়সে আমরা ছিলাম সুখে
সেই বয়সে রামদা চালানো শিখে!
রাতা রাতি কোটি পতি সবার মনে
সাক্ষাৎ নাই তাদের বইপত্রের সনে,
লেখাপড়া করে যে, গাড়ী ঘোড়া চড়ে সে
আজকের বাস্তবতা —
লেখাপড়া করে যে, গাড়ীর নিচে পড়ে সে!
হিংসা-বিদ্বেষপূর্ণ যাদের মস্তিষ্ক খানি
তাদের কাছে শুনবেন আজ ধর্মের বানী,
ভূমিদস্যু রগ কাটা মস্তান যতো
গ্রামে হামবড়ায় মাথা উঁচু ততো!
গরীব অশিক্ষিত দুর্বল পিষে
রাতে ধর্ষক, দিনে সমাজে যায় মিশে,
কেমনে হলেন কোটি পতি অফিস ক্যাশ মেরে
আপনার ইতিহাস জানা লোক, সব যায়নি মরে!
লাখ টাকা ক্যাশ, যাদের হাতে দিছেন ধরায়
আপনি কৃতিসন্তান তাঁরাই বলে বেড়ায়,
কি জবাব দিবেন সৃষ্টি কর্তার কাছে
যমের হাত খানা চলে পিছে পিছে!
কত এলো মুনী ঋষি এধরা মাঝে
কত এলো ধূর্ত লোক মুখোশের সাজে!
সবাই চলে গেলো শ্বেত বস্ত্র মুড়ে
কত মুনফা করলো বালু মিশায় গুড়ে!
হাজার বছর আয়ু, পেলো নাতো কেউ
যতোই ধূর্ত তায় ওস্তাদ মানে, ধূর্ত রাজ ফেউ!