কলমেঃ ইঞ্জিঃ মোঃ সিরাজুল ইসলাম।
আমি পাড় ভাঙ্গা এক প্লাবনে সিক্ত নদী
ভাঙ্গা গড়ার জীবন গল্প সবাই জানতো যদি,
সব হারানো একলা চলা পথিক
জানি না আমি যাচ্ছি কোথা, গন্তব্য নাই ঠিক!
বাড়ীর কাছে ছিলো আমার মধুমতী নদী
নদীর থেকে নির্মল হাওয়া বইতো নিরবধি!
দুই পাড়েতে স্নান করতো, শত ললনা
সিক্ত বসন ফিরতো ঘরে, করতো ছলনা!
পথের পাশে থাকতো বসে অনেক যুবক ছেলে
উঁচুনিচু গিরিখাত দেখতে নানা ছলে —
এক ললনা ফিরতো ঘরে খালি কলসি নিয়া
কলসির ভিতর রাখা চিঠি আমায় যেতো দিয়া!
সব সখিরা হাসতো মিটমিট, কাটতো ভেঙচি জীবে
চিঠি দেয়া-নেয়া দেখে ইঙ্গিত করতো, বিয়ে হচ্ছে কবে?
নদীর জলে ইলিশ ধরতো চোঙা জালে বাঁধ
এপার থেকে ওপার ফেলতো ইলিশ ধরা ফাঁদ,
বাবা-র থেকে টাকা নিতো জলকার রুস্তম মোল্লা
বিনা পয়সায় পাওয়া ইলিশ, রোজ খেতাম কল্লা!
পানশি নৌকায় পাড়া পাড় স্রোতস্বিনী নদী
পাল তোলা শত নৌকা চলতো নিরবধি!
প্রতি বছর দুই-চারটা নৌকা ডুবি হতো
কান্না কাটি আহাজারি, চোখে দেখছি কত!
গ্রাম ছেড়ে শহরেতে আসতে হলো চলে —
আসার সময় চোখ মুছায়ে আসলাম তারে বলে!
নদীর জলে পূর্নিমার চাঁদ আজ-ও আছড়ে পড়ে
আজ-ও হয়তো জোছনা ছড়ায় সারা রাত্রি ভরে!
আজ সেই মধুমতী, দারুন শ্লথ তার গতি
হয়তো তেমন জোয়ার প্লাবনে, হয়না পাড়ের ক্ষতি!
হয়তো ‘পারু’ যায় না আর মধুমতীর ঘাটে
নাতিপুতি পাকা-চুল, জায় নামাজের পাটে!
তসবিহ জপে সকাল বিকেল বেহেশতে যাওয়ার লোভে
কেঁদে ছিলো বিয়ের দিন আমার উপর ক্ষোভে!