কলমেঃ অনামিকা চৌধুরী ওরফে খাদিজাতুল কোবরা
সে আমায় কি ভাবে?কেনো আমি তার হাতের পুতুল হলাম?
আমার এই অভিযোগ যেন শ্রীরামপুরের বনমালীর বাড়ির নীরব কোণে বসে লেখা শরৎচন্দ্রের “পুতুলনাচের ইতিকথা” বা “গৃহদাহ” থেকে উঠে এসেছে তাই মনে করছো তুমি?
সমাজের রীতি-নীতির ঘেরাটোপে আবদ্ধ নারীকে পুতুলের মতো ব্যবহার করা যে কত সহজ, তা শরৎচন্দ্রের লেখায় বারবার ফিরে এসেছিলো তিনি ও নারীর মনের কথা, তার ব্যাথা, তার সংগ্রামকে তুলে ধরেছিলেন এমন এক সূক্ষ্ম অনুভূতির সঙ্গে,
যা যুগ যুগ ধরে বাঙালি মননে গেঁথে আছে।
আমিও কিন্তু ভুলিনি ওই সব তিরস্কারের দৃষ্টান্ত গুলো।
একটা সময় এগুলো অভিমান ছিলো আমার এখন, অভিযোগে পরিণত হয়েছে।
তবুও কি তোমার বোধগম্য হবে না কভু?
তুমি স্বামী তাই তোমার কাছে এসব অভিমান বা অভিযোগ অর্থহীন এটাই স্বাভাবিক। আমার স্ত্রী আমার আয়ত্বে থাকবে, থাকতেই হবে।
কিন্তু তুমি কখনোই
বুঝতে চাওনি, তোমার আচরণে কোথায়, কোথায় ভুল ছিলো।
আসলে , স্ত্রীর জন্য স্বামীর এই বক্তব্য প্রাসঙ্গিক: এটাই হয়ে থাকে এবং স্ত্রীরা মুখ বুঝে সয়ে গেছে দেখেই আজও এই খেলা চলছে ঘরে ঘরে।
একে সংসার বলে?
নাকি পুতুল পুতুল খেলা বলে?
তুমি – আমি দুটি মানুষ,
একই বন্ধনে আবদ্ধ।
নারীরা স্ত্রী হয় বলে কি তাদের সত্যিকারের সত্তাকে বিসর্জন দিতে হবে ওই স্বামী নামক পুরুষের কাছে?
তুমি আমাকে চিনতে পারো নি, এটা তোমার ব্যর্থতা। তাই তোমার ভালোবাসাও অসম্পূর্ণ।
তোমার ইচ্ছা, সুখ, স্বপ্ন—সবই তোমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। ঠিক ওই সকল আচরণ বা চাওয়া পাওয়ার মধ্যে পড়ে গেছি আমি একটি পুতুল।
যদি কখনো এই পুতুলটি হাত থেকে পড়ে গিয়ে গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে যায় তবে ভেবে নিয়ো, আমি তোমার অযোগ্য একটি কাঁচের পুতুল ছিলাম মাত্র।