আমার মাথায় ভরণ করিতে চায়
মক্কার সেই মজলিশ,
যেথায় রাসূলুল্লাহ ওহীর তালিম দিয়ে
মুছে দিলেন দেবতার কূর্ণিশ।
আমার নয়ন দেখিতে চায়
সেই ঘটনা,
হাবশী বেলাল উমাইয়ার বন্দীশালায়
আহাদ আহাদ বাক্য বানে
ভুলে যায় নির্মমতার মূর্ছনা।
আমার কর্ণ শুনিতে চায়
তাওহীদের মায়াভরা বাণী,
আবুযর নির্যাতিত কাবার প্রাঙ্গণে
মুমূর্ষু হয়ে রচিলেন
ইমানের অকৃত্রিম কাহিনী।
আমার নাক শুঁকিতে চায়
রসূলের জান্নাতি
ঘর্মাক্ত ঘ্রাণ,
যে ঘ্রাণে আকুল হয়ে সহচরগণ
সঁপে দিলেন অমূল্য প্রাণ।
আমার ওষ্ঠদ্বয় হাসিতে চায়
রসূলের মধুময় মৃদু হাসি,
আবু হুরায়রা ক্ষুধার্ত জঠরে
তৃপ্ত হয়ে যেতো
প্রমাণ রাশি রাশি।
আমার দন্ত খুঁজে
সেই ওহুদের বিসর্জন,
ভেঙ্গে গেলো রসূলের দন্ত
নির্মম আঘাতে
আজও সেই রটনা
কাঁদিলেন রসুল
ওরা তো আমারই স্বজন।
আমার রসনা আবৃত্তি করিতে চায়
কুরআনের আসমানী কথা,
ধারণ করে হৃদয়ে রসূল
যে ওহী
শোনালেন সমতার বাণী
কায়েম করেন মানবতা।
আমার কন্ঠে বাজিতে চায়
সেই মায়াভরা সূর,
যে কন্ঠে আহ্বান করেন রসূল
পথহারা মানবতা
ফিরে পায় আপন ঠিকানা
যা হারিয়ে গিয়েছিলো বহুদূর।
আমার হস্তদ্বয় এগুতে চায়
আরশের করুণার পানে,
রসূল যেরূপে তুলে দু'হাত
কাঁদিতেন উম্মতের মুক্তির গানে।
আমার বক্ষ উজাড় করিতে চাই
মানবের ভালবাসার ময়দানে,
বক্ষ খুলে রসুল আজীবন
স্বর্গীয় প্রেম ভালবাসা দিয়ে
অনাথ অসহায় এতিম শিশু
আর পশু পাখিদের প্রাণে।
ক্ষুধা ধরাতে চাই
শূণ্যতা সৃষ্টি করে,
আমার ভরাট উদরে
রাসূলুল্লাহ অনাহারী ক্লেশ সয়ে
ক্ষুধার্ত উম্মতের মায়ায় অশ্রু ঝরালেন
পাথর বেঁধে তৃপ্তি ভরে।
আমার পদযূগল এগুতে চায়
যে রূপে রসূল সত্যের কন্টকময় পথে,
বোঝা বয়ে বিধাতার বিধানের
বিতরণ করিলেন ওহীর কিরণ
দূর্গম রাহে অসাধ্য জগতে।
সহিতে চায় আমার দেহ পল্লব
আবু লাহাবের নিক্ষিপ্ত পাথর
আর তায়েফের নিপীড়ন,
যেথায় ধৈর্য্য মায়ায় সহিলেন
কুফরের ঘাত দহণ
শত যাতন বেদনা হাসি মুখে করিলেন বরণ।