অসহায় বৃদ্ধের আকুতি
যাদেরকে নিয়ে গড়েছি,
আমার সোনার সংসার।
তারা আমায় ফেলে রেখে,
কেউ গেছে বহুদুরে কেউ পরপার।
আদুরী নামের মেয়েটি আমার,
বিয়ে হয়ে গেছে চলে অন্যের ঘর।
অনেকদিন হয় দেখতে আসে না,
আমাকে সবাই করেছে পর।
মেয়েটি স্বামীর সাথে থাকে বিদেশ।
ছেলে আমার নেয় না খবর,
বহুদিন যাবত নিরুদ্দেশ।
আজ আমি অসুস্থ দেহখানি নিয়ে,
বিছানায় পড়ে আছি শূন্য এই ঘরে।
সবাই নিজের সুখ স্বাচ্ছন্দ নিয়ে ব্যস্ত,
কারো মমতাবোধ জন্মেনা আমার তরে।
যাদের জন্য জীবন যৌবন সব করেছি শেষ।
তাদের হৃদয়ে দয়ামায়ার নাইকো কোন লেশ।
আমার আপনজন ছিল যারা।
খোঁজখবর নেয় না কেউ তারা।
বেঁচে আছি কিনা মরে গেছি।
অবহেলা অনাদরে আমি দিশেহারা।
দূরদূরান্তে থাকে আত্মীয় স্বজন যারা।
স্বার্থপর অনাত্মীয় হয়ে গেছে তারা।
আমার জীবন এখন হতাশায় কষ্টে ভরা।
নেই কোন ওষুধ পাতি নেই কোন খাবার।
একলা ঘরে বন্দী জীবন করছি হাহাকার।
বহুদিন কেটে গেছে অনাদরে অর্ধাহারে,
বেশ কিছুদিন ছিলাম,না খেয়ে অনাহার।
এত কষ্ট এত দুঃখ সহ্য হচ্ছে না আমার,
পৃথিবী আমার উপর করছে অবিচার।
কিছুদিন আগে চলে গেছে আমার প্রিয়তমা,
যাওয়ার বেলায় বলল তাকে করি যেন ক্ষমা।
আমার বলতে যা কিছু ছিলো সবকিছু মিছে,
জীবন সায়াহ্নে এসে বুঝলাম অবশেষে।
এ জীবন কিছু না সবকিছু মিছে।
সবাইকে কাঁদিয়ে আমিও একদিন।
চলে যাবো না ফেরার দেশে।
সাদা কাফন পরা বেশে।
অন্তর পোড়া ধোঁয়া
কাছে থাকলে কেহ নাহি তাকে বুঝে,
হারিয়ে গেলে সবাই তাকে খোঁজে।
মুখ দেখে মানুষের কষ্ট নাহি যায় বুঝা,
জীবনটা বৈচিত্রময় নয়তো এত সোজা।
এই পৃথিবীটা বড়ই এক অদ্ভুত জায়গা,
এই জীবনটা ঠুনকো একেবারেই ফাঁকা।
চেনা মানুষগুলোর নানা রকমের মুখোশ,
ক্ষণে ক্ষণে রূপ বদলায় স্বভাবের দোষ।
বিশ্বাস করে না কেউ মুখের কথা,
কেউ বুঝেনা কোনো মানুষের ব্যথা।
ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবীটা বড়ই কঠিন,
কষ্টে হাসিগুলো হয়ে যায় মলিন।
বুকের ভিতর দাউ দাউ করে আগুন জলে,
দেখে না কেউ অন্তর পোড়া আগুনের ধোঁয়া।
হৃদয় মাঝে শত সহস্র রকমের ক্ষতের কষ্ট,
কখনো যায় না দেখা,যায় না তারে ছোঁয়া।