০১- হাসিলাম পরিশেষে
জিজ্ঞাসিলাম স্বীয় সত্ত্বারে,মম মননরে,
থাকিস সদা মোর মানস কুঁটিরে,হৃদয় কোঠরে।
কাঁদিস কেন তবে অপরের তরে?
কহ মোরে হইবে তুমি কাহার?
পুড়িয়া যায় আত্মা মোর তরে
সতত যাহার,আমি তাহার।
তবে যে দেখি তাহার বসতি
তব বক্ষমাঝে,রাখিয়াছ সকলের অলক্ষ্যে!
দিয়াছ ঠাঁই যাহারে অতীব যতনে,
একান্ত আপনার করিয়া তব বক্ষমাঝে!
বলোতো দেখি,বিনিময় কি তাহার!?
ইজারা দিয়াছিনু তাহারে
প্রণয়ের বিনিময়ে।
ঝণ যদি সে শোধিতে না পারে?
মিটিবে দায়,শোধিত হইবে সে দেনা।
মিটিবে দায় ভালবাসার সঞ্চয় ও মুনাফাতে,বাকিটা মওকুফে।
বক্ষের যতন করিয়াছ যক্ষের মতন,
নিরলস,ঐকন্তিক প্রচেষ্টায় সমস্ত জীবন!
সেই বক্ষের মূল্য এত অল্প?
অল্প নহে সখা,দামী অতি!
হীরা-মানিক হইয়া করিছে খেলা,
সে তো আছে সতত সদা,
আত্মজ হইয়া মোর আত্মার মাঝারে!
তবে তো ছাড়িয়া দিয়া তাহারে,
আমিই জিতিলাম,বিজয়ে "হাসিলাম পরিশেষে!!"
০২- জীবনের আদ্যোপান্ত!
জীবন!সে তো অচেনা এক মনের গলি!
কভু আলোকে ভাস্বর,কভু তা আবার আঁধারে নিমজ্জিত কোন বিরাণ ভূমি।
কখনো পুষ্পময় উদ্যান,কখনো বা আবার শুনশান মহা শ্মশানের ভুতুড়ে ঘাটি!
কখনো আশার ভেলা,আবার কখনো সে
বালুচরে বেষ্টিত নিরাশা।
বুঝিনি কভু জীবনের মানে কি তা!
করিনি কখনো পাঠ জীবন খাতার ছিন্ন পাতায় কি লেখা!
জীবনের ক্যানভাসে কখনো দৃশ্যমান হয় দেদীপ্যমান প্রখর আলোর সুদীপ্ত ঝলমলে আলোর রেখা।
আবার আপন মনের মাধুরী মিশিয়ে রাঙানোর বদলে অমাবস্যার কালো রঙে ঢেকে যায় কখনো তার সকল আভা।
কখনো সে সুখের নিশাণ,কখনো বা দু:খের গোলক।
কখনো সে হর্ষের ঝিলিক,কখনো আবার সে বিষাদ সিন্ধুর প্রতীক!
কখনো তুমি ময় সারাক্ষণ আমার সারাবেলা!
কখনো আবার তুমিহীনা বিভীষিকাময় আমার দু:খের দরিয়া।
০৩- একটি সত্ত্বার আত্মাহুতি!
মহারাণী!
বেদনার বালুচরে কোন সত্ত্বার আত্মাহুতি দেখেছ কভু?
দূঃস্মৃতির আড়ালে তলিয়ে যেতে থাকা অতি সুপরিচিত আপনজনের চিরচেনা মুখাবয়বটাও কখনো কখনো
বিবর্ণ-ম্রিয়মাণ হয়ে যায়!
সেটাও কি দেখনি কখনো?
দুঃস্বময়ের ঘূর্ণিবাঁকে নিপতিত হয়ে হারিয়ে যেতে থাকে কত সত্ত্বা!
সে সম্পর্কেও তোমার জ্ঞান শূন্যের কোটায়।
আলো-আঁধারির খেলায় আলো যেমন আঁধারকে এড়িয়ে চলতে চায়,
দুঃখ-সুখের ভুবনে সুখও তেমন দুঃখকে মাড়াতে ভয় পায়।
যদি তার সংস্পর্শে এসে সেও হারিয়ে যায় নির্মম,নিদারুণ কালের করাল গ্রাসে!
আবার হাঁমাগুড়ি দিয়ে কোন রকমে পথ চলতে চায় কিছু সত্ত্বা।
স্বীয় সত্ত্বার সম্ভ্রম রক্ষার্থে যুদ্ধ করে থাকতে চায় বিরুদ্ধ স্রোতকে জয় করে।
ভালবাসাহীন মানুষ যেমন স্রোতের প্রতিকূলে চলতে চলতে আর কুলিয়ে উঠতে না পেরে পথ বেছে নেয় আত্নহননের!
পথহারা পথিক,দিকহারা নাবিক আমিও তেমন হারিয়ে গিয়েছি কোন বিশেষ কারো অবহেলার স্বীকার হয়ে।
বরণ করেছি আমার আত্মার মরণকে।
এভাবেই নিয়েছি ছুটি নিজের থেকে,
দিয়েছি স্বীয় সত্ত্বার আত্মাহুতি!