অধ্যায় ১: রহস্যময় আমন্ত্রণ
বরিশালের শীতের সকাল। চারদিকে কুয়াশা জমেছে, যেন পুরো শহর ধোঁয়ার চাদরে মোড়ানো। রুদ্র তার ছোট্ট রুমের জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে ছিল। সে বরাবরই কল্পনায় বিভোর থাকে, কিন্তু এই সকালে তার মন আনমনা। ঠিক তখনই দরজার নিচ দিয়ে একটা খাম ভেতরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়।
খামটি অদ্ভুত। পুরোনো ধরনের পেপারের খাম, যার ওপর কোনো নাম বা ঠিকানা নেই। শুধু সামনের দিকে লেখা: “রুদ্রের জন্য।”
রুদ্র চমকে ওঠে। তার কাছে চিঠি আসাটা অস্বাভাবিক। খাম খুলতেই ভেতর থেকে বের হয় একটা ছোট্ট কাগজের টুকরো। এতে লেখা:
“তুমি কি রহস্য ভালোবাসো? সন্ধ্যা ৭টায় পুরোনো রেলস্টেশনে আসো। সেখানে তুমি কিছু এমন পাবে, যা তোমার গোয়েন্দা প্রতিভাকে চ্যালেঞ্জ জানাবে।”
রুদ্রের মনে কৌতূহল দানা বাঁধে। তার শখের গোয়েন্দাগিরি নিয়ে ছোটখাটো অনেক ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু এমন সরাসরি আমন্ত্রণ আগে কখনো আসেনি। চিঠিটা কার কাছ থেকে এসেছে? কেউ কি তাকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করছে? নাকি সত্যিই কোনো চ্যালেঞ্জের সুযোগ?
দিনের বাকি সময়টা রুদ্র কাটিয়ে দেয় ভাবনার মধ্যেই। অবশেষে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে। রুদ্র তার ছোট নোটবুক আর একটি টর্চলাইট নিয়ে রেলস্টেশনের পথে রওনা দেয়।
রেলস্টেশনের গল্প:
পুরোনো রেলস্টেশনটি বহু বছর ধরেই পরিত্যক্ত। সেখানে কেবল বাতাসের শব্দ শোনা যায়। স্টেশনের চারদিকে ভাঙা জানালা, মরিচা ধরা রেলপথ, আর একটি পুরোনো ট্রেনের কামরা পড়ে আছে। জায়গাটায় কেমন একটা ভৌতিক আবহ।
রুদ্র ভেতরে ঢুকে দেখতে পায় কামরার ভেতর একটি খাম রাখা। খামের চারপাশে ছিটানো রক্তের দাগ। ভয়ে তার হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যায়। তবু সাহস করে খামটা তুলে নেয়। ভেতরে দুটি ছবি আর একটি নোট:
“অতীতের ভুলগুলো শুধরানো যায় না। কিন্তু তুমি কি সত্যিই এর সমাধান করতে পারবে? সময় খুবই কম। খুঁজে বের করো, নাহলে পরবর্তী মৃত্যু তোমার কাছেও হবে।”