অধ্যায় ২: মৃত্যুর ছায়া
রুদ্র গভীর চিন্তায় পড়ে গেল। খামের ভেতরের ছবিগুলো হাতে নিয়ে সে বাইরে বেরিয়ে এলো। রেলস্টেশনের চারপাশে শুধু নীরবতা। দূরে একটা কুকুরের ডাক শোনা যাচ্ছে। রুদ্র তার টর্চলাইট জ্বালিয়ে ছবিগুলো ভালো করে দেখল।
ছবির প্রথমজন একজন মধ্যবয়সী ব্যক্তি। তার পরনে দামি স্যুট আর মাথায় হালকা টাক। আরেকটি ছবি একজন তরুণের। তার চেহারায় আত্মবিশ্বাসের ছাপ, কিন্তু চোখের গভীরে যেন কোনো ভীতি লুকিয়ে আছে।
রুদ্র ছবি দুটির পেছনে নজর দিল। দুটিরই পেছনে একটি তারিখ লেখা: “২ জানুয়ারি ২০২৪।”
আজ ২ জানুয়ারি। ছবির মানুষগুলো কি এখনও বেঁচে আছে, নাকি তাদের সঙ্গেই এই রক্তের সম্পর্ক?
রুদ্র তার ছোট্ট বাইসাইকেল নিয়ে শহরের পথে বেরিয়ে পড়ল। বরিশালের পুরোনো পাড়াগুলোতে রাতের সময় সবকিছু কেমন অদ্ভুত লাগে। রাস্তায় খুব একটা মানুষ নেই। কিছুক্ষণ পর সে পৌঁছে গেল স্থানীয় চায়ের দোকানে, যেখানে প্রায়ই খবরের আলোচনা হয়।
চায়ের দোকানে:
দোকানে ঢুকে সে শুনতে পেল দোকানদার হারুন আর এক বৃদ্ধ লোক কথা বলছে।
“তুই শুনছস, রতন সাহেবরে নাকি খুন করছে!” বৃদ্ধ লোকটি বলল।
রুদ্র চমকে উঠল।
“রতন সাহেব কে?” সে জিজ্ঞাসা করল।
“এখানকার বড় ব্যবসায়ী। শুনছি, কেউ তার বাড়িতে ঢুকে গুলি করছে।”
রুদ্র দ্রুত সিদ্ধান্ত নিল যে তাকে রতন সাহেবের বাড়ি যেতে হবে। সে বুঝতে পারছিল, চিঠির খাম আর এই খুনের ঘটনা পরস্পরের সঙ্গে জড়িত।
রতন সাহেবের বাড়িতে:
রতন সাহেবের বাড়ি আলিশান। চারপাশে পুলিশের ভিড়। বাড়ির ভেতরে ঢুকতে না পেরে রুদ্র বাইরে দাঁড়িয়ে নজর রাখতে লাগল। কিছুক্ষণ পর একজন পুলিশ অফিসার বেরিয়ে এল। রুদ্র তাকে চিনত—এএসআই কামরুল। রুদ্র সুযোগ পেয়ে কাছে গিয়ে বলল,
“কামরুল ভাই, এই ঘটনার কিছু বলতে পারবেন?”
কামরুল কড়া গলায় বলল, “তুমি আবার কি করছ এখানে? এটা কোনো ছেলেখেলার জায়গা নয়।”
রুদ্র তার পরিচিতি কাজে লাগিয়ে নোটবুক দেখাল।
“আমি শুধু শুনলাম রতন সাহেব…খুন হয়েছেন। তার সঙ্গে আর কেউ ছিল?”
কামরুল কিছুটা গম্ভীর হয়ে বলল, “হ্যাঁ, আরেকজনের মৃতদেহও পাওয়া গেছে। নাম অভি। সম্ভবত কোনো আইনের ছাত্র ছিল। তবে ঘটনাটা এখনও পরিষ্কার নয়। তুমি দূরে থাকো।”
ক্লু খোঁজার শুরু:
রতন আর অভির খুনের পেছনে কী সম্পর্ক? রুদ্রের কাছে থাকা চিঠি আর ছবি এই ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত। রহস্য আরও ঘনীভূত হচ্ছে।