শিশির ভেজা শীত
=============
হেমন্তের বিকেলের গানে একটু ফের এসে ;
বাতাসের সাথে মুচকি হেসে-
অতঃপর চলেই এলে সাদা কুয়াশার চাদরে।
স্নিগ্ধতার ছুঁয়ায় এক বিন্দু শিশির ঘাসের উপরে।
শুকনো পাতার কচকচে আওয়াজের ছলে-
আকাশমণি, সেগুন বাগানের তলে।
স্বর্ণের মতো শিশিরের ঝিলিকে,ভোর প্রভাতে,
স্পর্শহীন যেন সবকিছু,
বরফে জমাট বাঁধে দু-হাতে।
ঝোনাকি জানান দেয় সেই পথে -
যেখানে মানুষ বসে হাত ছড়িয়ে দেয় আগুন পোহাতে।
চাদরে ঢেকে নিলো শুধু মুখখানা পাই দেখিতে -
শীতের স্পর্শে লজ্জা আসিলও যেন তাহাতে!
পারেনা চোখ খানা মেলিয়া তাকাতে,
আসে জল কুয়াশার মতো উত্তরের দিক হতে।
এসেছে কুয়াশার রাণি - শীতের রাজা -
কম্পনের বুকে জলসা চোখে দূর হতে।
------------------------
মণির পুতুল বিয়ে
------------------------
আজ মণির পুতুল বিয়ে-মণির দেখা নাই,
কবর বিছানায় শুয়ে আছে কোন সাড়া নাই।
কত হৈ-হুল্লোড় আয়োজন করে পুতুল বিয়ে দিতো-
নোটন,খোকন,খুকী,নিহা'রা ও মজা করে খেতো!
আজ নতুন পুতুল বউ সাজিয়ে মা বসে আছে-
এতো করে ডাকে মণিকে, মণি আসে'না কাছে!
আঁচল দিয়ে চোখ মুছে, কষ্টের মুখ খানি লুকায়-
হারানোর বেদনায় শম্পা'বালার হৃদয় গেল শুকায়।
লোকে বলে পাগল হলো মেয়ে হারানোর শোকে;
আরকটি বাচাও রইল না-যে টেনে নিবে বুকে!
কবর পাড়ে দাঁড়িয়ে থেকে, আজও মণি'মণি করে-
ঘুম হারিয়ে কান্না ধরে সারা রাত ভরে।
বাবা তাহার মরিয়া গেছে জন্মের মাস খানিক আগে-
বাবার মতো বিদায় বেলাতে মণি ও গেলো আগে।
দুঃখী হয়ে বাকি রইলো মণির প্রিয় মা —
ধরনী'কে আজ করেনা কিছুতে শম্পাবালা ক্ষমা!
খুকী, নিহারা খেলতেছে মাঠে-মণি যে শুধু নাই..
মা তাহার করুণ সুরে বলে,মেয়ে কোথায় গেলিরে হারায়।
পুতুল বউটা, শম্পাবালা আজও যত্ন করে রাখে -
মণি আমার আসবে ছুটে কোন কাজের ফাঁকে।
আজও ভেবে যায় মেয়ে ছোটদের সাথে খেলতে গেছে-
সাপের কামড়ে মেয়ে মরেনি, আছে আজও বেঁচে।