স্টাফ রিপোর্টার:
সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার এলাকার ত্রাস খ্যাত যুবলীগ নেতা সোহেল মিয়া শিবলুকে গ্রেপ্তার করেছে তাহিরপুর থানা পুলিশ।
গতকাল শনিবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে তাহিরপুর থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই পারভেজ ভুইঁয়া সহ পুলিশের একটি টিম অভিযান চালিয়ে উপজেলার বড়দল উত্তর ইউনিয়নের আমতৈল গ্রামে অভিযান চালিয়ে তার বাড়ি থেকে শিবলুকে গ্রেপ্তার করে।
আজ সকাল সাড়ে টায় এসআই মোহাম্মদ পারভেজ ভুইঁয়া এর সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অস্ত্র আইন সহ, মারামারি, বিভিন্ন মানুষকে হুমকিধামকিসহ একাধিক মামলার এজাহার ভুক্ত আসামী সোহেল মিয়া শিবলুর। আজ রোববার সকালে সুনামগঞ্জ কোর্ট হাজতের মাধ্যমে জেল কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সোহেল মিয়া শিবলু উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়ন যুবলীগের সহ সভাপতি ও ওই ইউনিয়নের সীমান্ত গ্রাম আমতৈলেত মৃত হযরত আলীর ছেলে।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও মামলার এজাহার সূত্রে জানাযায়, বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যুবলীগের সহ সভাপতির পদ ভাঙ্গিয়ে সীমান্ত এলাকায় সন্ত্রাসের রাজত্ব তৈরি করে সোহেল আহমেদ শিবলু। এমনকি শিবলু দেশীয় অস্ত্রসহ দলবল নিয়ে এলাকায় মহড়া দিতেন এবং অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে লোকজনের কাছ থেকে জোরপূর্বক চাঁদাদাবি করতেন। কেউ চাঁদা দিতে না চাইলে তাকে মারধরসহ গুরুতর জখম করে টাকা আদায় করতেন শিপলু। সীমান্তে মাদক চোরাচালান গ্যাংয়ের অন্যতম সদস্য শিবলু। তার বিরুদ্ধে তাহিরপুর থানায় ও সুনামগঞ্জ আদালত ও থানার হত্যা ও অস্ত্র মামলা সহ একাধিক মামলা রয়েছে। আমতৈল গ্রামের জমির হোসেন জানান, গত ১ জানুয়ারি একই গ্রামের কয়লা ও চুনাপাথর ব্যবসায়ী আমার চাচাতো ভাই নিজাম উদ্দিনের ছেলে জয়দর আলী(৪২) এর কাছে ১লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে শিবলু ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী। তার চাহিদামতো চাঁদা দিতে অপারগতা স্বীকার করলে এ নিয়ে জয়দর আলীকে প্রাণে মারর হুমকি দেয় শিবলু ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী। পরে এরই জের ধরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে শিবলু ও তার ২০/২৫ জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে গত ১০ জানুয়ারি শুক্রবার সন্ধ্যা জয়দর আলীর বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় শিবলু ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী জয়দর আলী (৪২) তার ভাই শাহ আলম (২৪), হৃদয় (২১) ও পিতা নিজাম উদ্দিন(৫০) তার মহিলাসহ পরিবারের ৮ জনকে রাম দা ও ধারালো ছুরি দিয়ে মাথাসহ শরীরের এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। এবং বাড়িঘর ভাঙচুর করে। এসময় ঘরের থাকা ৮০ হাজার টাকা ও কয়েক লাখ টাকার স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। পরে স্থানীয় তাদের উদ্ধার করে ওইদিন রাতেই জয়দর আলী, শাহ আলম, হৃদয় ও পিতা নিজাম উদ্দিনসহ গুরুতর আহতদের তাহিরপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। এদের মধ্যে তিন জনের অবস্থা আশঙ্কা জনক হওয়া তাদের প্রথমে সুনামগঞ্জ পড়ে সুনামগঞ্জ থেকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। এ ঘটনায়া গত ১১ জানুয়ারি সোহেল আহমেদ শিবলু সহ ২২ জনকে আসামি করে জমির হোসেন বাদি হয়ে তাহিরপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়ের পর থেকেই সন্ত্রাসী শিবলু ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী মামলা তুলে নিতে হুমকিধামকি ও বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। পরে জমির আলী নিরুপায় হয়ে সুনামগঞ্জ আদালতে জীবনের নিরাপত্তার জন্য আরেকটি মামলা করেন তিনি। এই শিবলু বাহিনীর ভয়ে এলাকায় কেউ কথা বলতে চায় না। তার বিরুদ্ধে কথা বললেই চলে হুমকিধামকি মারপিট ও অত্যাচার।