মোঃ আহ্সান কবির রিজওয়ান
একটি বাড়িতে একটি ছেলেকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। ছেলেটি কখনো কাঁদছে, কখনো হাসছে। সবার কাছে হয়তো চেহারাটা মায়াবী না। কেউ নেই খোঁজ নেওয়ার। তার করুণ অবস্থা দেখে আমি কেঁদে ফেলেছি, কেননা তার পরিবারের কাছে জানতে পেরেছি সে হাইস্কুল জীবনে গান লেখতে পেরে ছিল। একসময় সে দেশ ও দশকে আগলে রাখত বুকে কিন্তু আজ তাকেই আগলে রাখার কেউ নেই। আরো জানতে পারলাম সে এসএসসি ফেল, তবে কি পাগল হবার কারণটা গান? না। সে নিজেকে নিয়ে ভাবতে পারেনি ভবিষ্যতে কী হবে! তার একটা ডায়েরীতে খুঁজে পাওয়া যায় সে ‘সীমা কণিকা’ নামের একটি মেয়েকে ভালবাসত/বাসে, কিন্তু মেয়েটি কথা দিয়ে কথা রাখতে পারেনি। ছেলেটির একটি চিঠিতে উল্লেখ আছে ‘তুফান+কণিকা’। এর স্ট্যাটাসটা দেখে মনে পড়ল আমার ‘নীলাঞ্জনা’র কথা, সেও আমাকে বুঝতে পারেনি! তাহলে আমি হয়তো এক তরফা ভালবাসছিলাম। কেননা সে আমাকে ‘না’ নামক একটি শব্দই বলেছে। আচ্ছা এই ছেলেটির পাগল হবার কারণ ভালবাসা? হবে বোধহয় অল্প কিছু। ‘রেজন’ নামের একটি ছেলে বলল,” সে টাকার কারণে উদ্যোগক্তা হতে পারেনি। কেউ তাকে বুঝতে/মূল্যায়ন করতে পারেনি। বড় ভাইও টাকার কাঙ্গাল ছিল, টাকার জন্য পরিবারো ঠিক মত আদর-স্নেহ করেনি। কেউ কাজের সঠিক কাজের সন্ধান দিতে পারেনি, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে পারেনি। টাকার অভাবে ঠিক মত ব্যবসাও করতে পারেনি। সে দাসত্ব পছন্দ করেনা। তবু অনেক জায়গায় কাজ খুঁজে ইনকামের সন্ধান পায়নি। রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াইছে। একদিন রাস্তায় চলতে কী যেন ভাবনায় ছিল, হটাৎ একটি ট্রাকের চাকায় অক্সিজেন হয়। সে সুস্থ থাকাকালিন অনেক জায়গায় চাকুরি খুঁজে ছিল কিন্তু টাকা ও সাটিফিকেটের জন্য তা আর পায়নি।তারপরে ঠিক মত চিকিৎসা না হওয়ার কারণে দেউলিয়া (পাগল) হয়ে যায়। বাড়িতে পারিবারিক অশান্তি লেগেই থাকে।’ তাহলে কি এই টাকা সব নষ্টের মূল? আমাদের চারপাশে এমন অনেক লোক আছে, যারা আজ নানান বিপদ পরিস্থিরিতে/ক্ষতিগ্রস্ত আর এভাবে আমাদের দেশ থেকে নিভে যাচ্ছে একেকটা করে হয়তো শত নক্ষত্র। আমাদের অঞ্চলে চলে কি জানেন? আমরা অভাবে আছি, কেউ পাশে নেই! তারা লুকিয়ে লুকিয়ে কাজ করতে যায় যেন আমরা তা জানতে না পারি। এই ভিত্তিহীন বাঙালি জাতির আমার দরকার নেই। যারা অন্যকে সুখে দেখতে পারেনা, বিপদে-আপদে সবার পাশে থাকে না।
প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক: পায়রাভরত একাডেমি।
নিয়মিত লেখক: আজকালের আলো।