রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:১৮ পূর্বাহ্ন

গল্প:- অনুভূতিহীন স্মৃতি

Coder Boss
  • Update Time : শনিবার, ৩১ আগস্ট, ২০২৪
  • ৬৪ Time View

দিদারুল ইসলাম নুহিন

আজ স্কুলের জন্য একটু দেরি হয়ে গেলো।
তার ওপর বৃষ্টি পরছে। সকাল থেকেই কপালটা খারাপ। ওহ! সামনে একটা পার্ক। যাক ভালো আর ভিজতে হবে না। যাই একটু বসি। ওফ!! ১১:৩৫ বাজে এখনো বৃষ্টি থামলো না, আজ হয়তো আর স্কুলে যাওয়া হবে না। ওহ ক্ষমা করবেন। আমার সাথে তো আপনাদের পরিচয়ই করালাম না। আমার নাম আবির, পেশা? আমার কোনো পেশা নাই অলসতা ছাড়া। আচ্ছা এই বৃষ্টির কি হয়েছে? এখনো থামলো না? তার উপর এই পার্কে কেউ নেই? না ওই যে একজন আছে সামনে। উমম!! যাই ওই যায়গায় বসি। একা থাকতে হবে না অন্তত-পক্ষে।
এখানে তো একটা মেয়ে বসে আছে। মাশাল্লাহ মেয়েটা অনেক সুন্দর। আমি যদি বর্ননা করতে যাই তাহলেও আমি অসফল হবো। উমম, মেয়েটা কে তো কখনো দেখি নাই এই এলাকাতে। আমার মাথায় তাকে দেখা’র পর হাজারো কথা ঘুরতেছিলো। তখনই মেয়েটি আমাকে বললো, জি? আপনি কিছু বলবেন?

আমি একটু অবাক হয়ে গেলাম। না মানে একটা জীবিত মেয়ে আমার সাথে কথা বললো? আমি অবাক। বললাম, না আআ মানে না কিছু বলার নেই আর কি!! না মানে আজ এতো বৃষ্টি হচ্ছে
তাই আর কি আজ আমার স্কুলে যাওয়া টা হলো না। মেয়েটি একটু হেসে বললো। ওও আচ্ছা হুম আমিও একটু কাজে বের হয়েছিলাম মনে হয় না আজ আর যেতে পারবো।
আমি মেয়েটির কথায় এতো একটা খেয়াল করছিলাম না আমি শুধু তার দিকে একতরফা তাকিয়ে ছিলাম। তারপর বললাম আচ্ছা আপনি কি এই এলাকায় নতুন? সে বললো। হুম আমার বাবার কাজের জন্য এই এলাকায় এসেছে
তাই আমাদের ও আসতে হয়েছে।

আমি বললাম ও আচ্ছা। ঠিক আছে। আপনি তো এই এলাকায় নতুন, এতো একটা চিনেন না। যদি কিছু না মনে করতেন তাহলে আমরা বন্ধু হতে পারি? সে বললো অবশ্যই কেনো নয়?
আচ্ছা তোমার নামটা কি?
আমার নাম? আমার নাম আবির। তোমার?
আমার নাম আয়াত

আচ্ছা আয়াত, আগামীকাল তো শনিবার। চলো তোমাকে এই শহরটা ঘুরিয়ে দেখাই।

আয়াত বললো, উমমম!!! আচ্ছা ঠিক আছে।
কখন যাবে?

আমি বললাম, চলো বিকাল ৪টায় যাই?

সে বললো, আচ্ছা ঠিক আছে।

এইদিন টা কেনো জানি অনেক পরিপূর্ণ একটা দিন মনে হলো। পার্কে গেলাম আমি ১১:৩৫ এ। এতোটুকু কথায় কিভাবে যে ১টা বেজে গেলো আমি বুঝতেও পারলাম না আসায় গেলাম। মা জিজ্ঞেস আজ স্কুলে যাও নাই? আমি বললাম বৃষ্টির জন্য পার্কে দারিয়ে ছিলাম বৃষ্টি শেষ হতে হতে ১টা বেজে গেলো তাই আর যাওয়া হয়নেই।

আজ রাত হয়তো আর ঘুম আসবে না, সময়ও যাবে না। কালকে আয়াত কে নিয়ে ঘুরতে যাবো। আচ্ছা আমি কি তাকে পছন্দ করা শুরু করেছি? আরে না না। সে শুধু আমার বান্ধবী আর কিছুই নাাাাাা? নাহ কি! আর কিছু??

আচ্ছা সব বাদ, পরের টা পরে।

রাত থেকে সকাল হলো সকাল থেকে দুপুর,
এখন ৩টা বাজে, কি ড্রেস পড়বো তাই বুঝতে পারতেছি না। পাঞ্জাবি পরবো? নাকি শার্ট?
আচ্ছা কালো শার্ট পড়ি আর কালো জিন্স পড়ি। আর কালো জুতা আচ্ছা সব কালো।
এখন আমি রেডি। আ–রে আর ১০মিনিট আছে ৪টা বাজতে। আরে যেতে হবে তারাতাড়ি।

ওই ওয়েটার opss, sorry, মানে আবির

কি কি? আমাকে ওয়েটারের মতো লাগছে?

আরে আবির, আমি মজা করলাম তোমাকে তো অনেক সুন্দর লাগতেছে।
আচ্ছা বলো কোথায় যাবা এখন?

চলো আয়াত, যেতে থাকি, দেখি কতো দূর পর্যন্ত যাওয়া যায়।

তারপর আমি আর আয়াত সারাদিন ঘুরলাম। ৭:৪০ এ তাকে বাসায় সামনে রেখে আমিও বাসায় চলে আসলাম। এই দিনটা ছিলো আমার জীবনের সব থেকে মনোরম সৃতিপূর্ণ দিন। (২৫/০৩/২০২২)

এর পর থেকে আমরা প্রায়ই দেখা করতাম, ঘুরতাম। মজা করতাম। দিরে দিরে আমি যেনো তাকে ভালোবাসতে শুরু করলাম। ভালো লাগা থেকে কখন যেনো ভালোবাসা হয়ে গেলো তা বুঝতেও পারলাম না। সে আমার বাঁচার কারণ হয়ে গেলো, সে আমার রাত থেকে দিন দেখার কারণ হয়ে গেলো। সে আমাকে নতুন করে বাঁচতে শিখালো। একটা গাছ থেকে প্রতি সেকেন্ডে ৫ সেন্টিমিটার গতিতে পাতা মাটিতে পরে। আমার ভালোবাসাও যেনো প্রতি সেকেন্ডে ৫সেন্টিমিটার করে বৃদ্ধি পায়।

কিন্তু কে বা যানতো সে প্রতি সেকেন্ডে সে আমার থেকে ৫সেন্টিমিটার দূরে চলে যাচ্ছে। যা কে আমি ভালোবাসা মনে করতেছিলাম তা তো ছিলো একটা বড় গল্পের ছোট অধ্যায়।
কিন্তু এই অধ্যায়ের আর কিছু সৃতি রয়েছে যা আমাকে কাঁদানের পরো হাসায়।

২০/১১/২০২২। আর চারদিন পর আমার আর আয়াতের বন্ধুত্বের ৮মাস হবে।

এই বন্ধুত্বের কি বা নাম দিবো? একতরফা ভালোবাসা? আমাদের বন্ধুত্বের কখনো কোনো নাম ছিলো না।

২৪/১১/২০২২ সকালে আমি তারাতাড়ি করে আয়াতের বাসার দিকে গেলাম। আজকে আমাদের বন্ধুত্বের আট মাস। হঠাৎ বৃষ্টি নামলো সেই পার্ক। সেই একই সময়। সেই সকই ড্রেসে আফিয়া সেই একই বেঞ্চে বসে আছে। আমাকে দেখে সেই বৃষ্টির মধ্যে ছুটে আসলো। এসে আমকে জরিয়ে ধরলো। আমার শরীর থেকে যেনো প্রতি সেকেন্ডে ৫সেন্টিমিটার গতিতে রুহ যেনো বেরিয়ে গেলো। যেনো পুরো পার্কটা এক সেকেন্ডের জন্য নিরব হয়ে গেলো। পরবর্তী মুহূর্তে আমি দেখলাম আয়াত কান্না করছে, তাকে শান্ত করিয়ে বললাম কি হলো হঠাৎ?
সে কাঁদতে কাঁদতে বললো, আমার বাবার অন্য যায়গাই স্থানান্তর হয়েছে আমাদের আগামীকাল এই শহর ছেড়ে যেতে হবে।

আমার যেনো পুরো দুনিয়াটা এক মুহূর্তে শেষ হয়ে গেলো। আমি কিছু বলার সাহস পাইতেছিলাম না। তারপর, হাজারো সৃতি, অনুভূতি আমার চোখের সামনে এসে গেলো৷
আমার শরীর কাজ করা বন্ধ করে দিলো। পরবর্তী মুহূর্তে তাকে কি বলবো তা বুঝতেও পারলাম না। শুরু মুখ থেকে আচ্ছা বের হলো। সে আমাকে বললো, আচ্ছা আবির তোমার সাথে কাটানো প্রতিটা মুহূর্ত আমার জন্য সেরা ছিলো।

তারপর আমি বাসায় এসে পরলাম। অনুভূতিহীন সৃতি গুলো নিয়ে। রাতটা যেনো ধীরে ধীরে কাটছিলো ২৫/১১/২০২২ সে চলেগেলো। রেখে গেলো সৃতি আর।

বাবা আবির আবির?, দেখ তোর জন্য চিঠি এসেছে।
আয়াত নাম এর কেউ দিয়েছে!

গল্পের মধ্যে কখনো গল্প লেখতে দেখেছেন? আজ দেখাবো যে সেই ২৫তারিখ রাতের পর কিভাবে ৬মাসের গল্প একটি পৃষ্ঠার মধ্যে আটকে থাকে। সেই ২৫ তারিখ রাতের পর ৬টি মাস কেটে গেলো, কিন্তু আমার মনের মধ্যে থেকে গেলো সেই হাজারো সৃতি। সেই রাততো শেষ কিন্তু সেই রাতের সৃতি যেনো শেষ হয় না।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102