সিলেট প্রতিনিধি:
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ৩নং পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের বল্লাঘাটের মন্দিরের জুম পাড় নামক স্থানে রাতের আধারে ফেলুডার মেশিন দিয়ে জুম পাড় কেটে অবৈধ ভাবে পাথর উত্তোলনের কারণে হুমকি মূখে রয়েছে শ্রী শ্রী বালিবাড়ি মন্দির,ফসলী জমি,পান সুপারীর বাগান,চা বাগান ও বসতবাড়ি। গত ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতার আন্দলনে স্বৈরাচার হাসিনা সরকার পালিয়ে যাওয়ার পর থেকেই জাফলংয়ের পাথর কোয়ারীসহ বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক লুটপাটের ঘটনা ঘটে। শুধু জাফলং পাথর কোয়ারী থেকে প্রায় শত কোটি টাকার পাথর লুট হয়। পাথর লুট-পাটে জড়িত থাকার অভিযোগে স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও বিএনপির অর্ধশতাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে সিলেট পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো.বদরুল হুদা বাদী হয়ে পৃথক-পৃথক ৩টি মামলা দায়ের করেন। ঘটনার প্রায় ৬ মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও রহস্যজনক কারণে পাথর লুট-পাটকারী মামলার আসামীরা এখনো রয়েগেছে ধরা ছোয়ার বাইরে।স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে,পতিত আওয়ামীলীগের দোস’র বিগত সময়ে যারা জাফলংয়ে লুটপাট করে হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন,মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ওইসব দোস’রদের পূর্ণভাসনের জন্য নামধারী কিছু বিএনপির প্রভাবশালী নেতা আড়ালে থেকেই এসব অবৈধ কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রকাশিত সংবাদের তথ্যমতে সিলেট জেলা বিএনপির বহিস্কৃত নেতা ও গোয়াইনঘাট উপজেলা সাবেক চেয়ারম্যান শাহ আলম স্বপন ও জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য বিএনপি নেতা মো.রফিকুল ইসলাম শাহপরান’র নের্তৃত্বে জাফলংয়ের বল্লাপুঞ্জি, মন্দির’র জুমপাড়,জিরোপ্রয়েন্ট,বাবুল’র জুম এলাকা, বল্লাপুঞ্জি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর জাফলং সেতু সংলগ্ন পাথর কোয়ারী এলাকায় অবৈধভাবে দানবযন্ত্র ফেলুডার মেশিন দিয়ে মাটি কেটে পাথর উত্তোলনের চলছে মহোৎসব। অবৈধ ভাবে ফেলুডার মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলনের ফলে জুমপাড় এলাকায় শ্রী শ্রী বালিবাড়ি মন্দির,বল্লাঘাটের পুরাতন পর্যটন স্পট, বল্লাপুঞ্জি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়,খেলার মাঠ, শত হেক্টর ফসলী জমি, চা বাগান,জাফলং সেতু,জাফলং বাজার,নয়াবস্তী,কান্দুবস্তী গ্রামের বসতবাড়ী ও খাসিয়া সম্পাদায়ের,পান সুপারীর বাগান সহ আশ পাশের এলাকা নদী গর্ভে বিলিন হওয়ার আশস্কা রয়েছে। নাম প্রকাশে অনইচ্ছুক এলাকার একাধিক লোকজন জানান,পাথর খেঁকুদের সাথে স্থানীয় প্রশাসনের মুঠা অংকের টাকা ভাগ-বাটুয়ার হয় এ কারণে প্রশাসন নিরব থাকে। ফলে আওয়ামীলীগ ও বিএনপি এক সাথে মিলেমিশে বীরদর্পে ফেলুডার মেশিন দিয়ে মাটি কেটে তারা অবৈধ পাথর উত্তোলনের কাজ চলমান রেখেছে।স্থানীয় প্রশাসনের লোক দেখানো টাস্কফোর্সের অভিযান পরিচালনা করা হলেও অভিযান পরিচালনাকারী দল ঘটনাস্থল পৌছানোর আগেই আগাম খবর চলে যায় পাথর খেঁকু চক্রের কাছে যে কারণে বল্লাঘাট জুম পাড় এলাকায় মন্দিরের মাটি কেটে অবৈধ পাথর উত্তোলন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি বৈচিএের কাল্পনিক দৃশ্য ভ্রমণ পিপাসুদের অভয়রণ্য জাফলং। মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশ ঘেরা এ জনপদ ও প্রকৃতি কন্যা জাফলং এর প্রাকৃতিক মনোমুগ্ধকর দৃশ্যপট দেখতে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রতিনিয়ত ছুটে আসে ভ্রমন পিপাসু হাজারও পর্যটক। কিন্তু কালের বিবর্তনে হারাচ্ছে অপরূপ স্যেন্দর্যের লীলাভূমি প্রকৃতি কন্যা জাফলং তার নিজস্ব রূপলাবণ্য। এসব পাথর খেঁকু চক্রের সদস্য আওয়ামীলীগ ও বিএনপির নামধারী নেতাদের কাছে আজ পরাস্ত প্রকৃতি কন্যা জাফলং।এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তরের নিষেধধজ্ঞা জারী থাকলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হচ্ছেনা কোন আইনগত ব্যবস্থা। এভাবে অপরিকল্পিতভাবে পরিবেশ অধিদপ্তরে অবহেলা থানা পুলিশের গাফলাতির কারনে পাথর উত্তোলনের ফলে নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে চা বাগান, ধ্বংস হচ্ছে প্রাকৃতিক পরিবেশ, সাধারণ মানুষ হারাচ্ছে ফসলী জমি ও আবাসস্থল। এসব এলাকা থেকে পাথর উত্তোলন ও অপসারণ করতে খনিজ মন্ত্রণালয়ের সংশি¬ষ্ট বিভাগের অনুমতি নেয়ার বিধান থাকলেও এসব নিয়মের কোন ধারে কাছেই নেই কেউ। তাছাড়াও মন্দিরের জুমপাড় এলাকা একটি বিবাদমান এবং ঝুকিপূর্ণ এলাকা। বিগত সময়ে শ্রী শ্রী বালিবাড়ি মন্দিরের পাড় এলাকায় অবৈধ পাথর উত্তোলনের সময় মাটির পাড় ধসে,মাটি চাপায় পাচ শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। বিগত সময়ে অর্থাৎ ২০০৬ সালের ডিসেম্বর মাসে উক্ত ভূমি থেকে পাথর উত্তোলনকে কেন্দ্র করে বিবাদমান ব্যাক্তিদের মধ্যে গুলাগুলি হয় এসময় জুমপাড় এলাকা সংলগ্ন কান্দুবস্তী গ্রামের লিটন নামের এক স্কুল ছাত্রের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়।এব্যাপারে গোয়াইনঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ সরকার মোহাম্মদ.তোফায়েল আহমদ জানান, অবৈধ বালু ও পাথর উত্তোলন বন্দে থানা পুলিশের টহল অব্যাহত রয়েছে।
এবিষয়ে সিলেটের জেলা প্রশাসক শের মোহাম্মদ.মাহবুব মুরাদ বলেন,প্রাকৃতিক সম্পদ পাথর ও বালু লুটপাটের সাথে জড়িদের বিরুদ্ধে আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে। সরকারী বিধি নিষেধ থাকা সত্বেও তা অমান্য করে অবাধে জুম কেটে পাথর উত্তোলন। পর্যটন কেন্দ্র জাফলংয়ের সৌন্দর্য ধরে রাখতে পরিবেশ অধিদপ্তর,র উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সু দৃষ্টি কামনা করছেন স্থানীয় এলাকবাসী।