লেখক: ইবরাহীম মাহমুদ।
মানব জীবনের অপরিহার্য প্রয়োজন চারিত্রিক শুদ্ধতা, নির্মল বোধ ও বিশ্বাসরে শুভ্রতা। যে মানুষটি আচরণে উচ্চারণে সততা ও মাধুর্যতা ধরে রাখে। সে সবার মাঝে অনন্য সেরা হয়ে থাকে। সুন্দর ব্যাবহার ও উত্তম গুণাবলী মানুষকে নিয়ে যায় শিকড় থেকে শিখরে। অসীম উচ্চতায় হয় তার দীপ্তমান উপস্থিতি। একটি সুখী শান্তিময় সমাজ বিনির্মাণে উন্নত চরিত্রের বিকল্প নেই। সুন্দর মনের মানুষই পারে একটি সুন্দর সমাজ উপহার দিতে।
চরিত্র সুন্দর হওয়ার জন্য হৃদয় ও আত্না সুন্দর ও স্বচ্ছ হওয়া জরুরী। কেননা বাহ্যিক আচরণে অন্তরের বিশ্বাস ও স্বভাবের প্রতিফলন ঘটে। দার্শনিক ইমাম গাজ্জালী বলেন- মানব মনে যে গুণাবলী জাগরুক থাকে, বাহ্যিক কাজ কর্মে তাই প্রকাশিত হয়।
তাই ভালো নিয়তে কারো সাথে হাসিমুখে কথা বলা সদাকাহ। অপরদিকে মুখে হাসি ফুটিয়ে মনে কুটিলতা ধারণ করা গোনাহ।
চারিত্রিক শুদ্ধতা জীবনে আনে ভোরের কোমলতা, শিশিরের স্নিগ্ধতা। আর আত্নিক শুভ্রতা জীবনকে কাব্যিক সৃজনশীল করে তোলে। চারিত্রিক সৌন্দর্যের কল্যাণ পার্থিব জীবনের পাশাপাশি পারলৌকিক জীবনকেও সমৃদ্ধ করে।
ইসলাম উত্তম চরিত্রের প্রতি অত্যান্ত গুরুত্বের সাথে উৎসাহিত করেছে। রাসুল সা. বলেছেন,
তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তিই সর্বোত্তম যে নৈতিকতায় সর্বোত্তম।( বুখারী 3559 নং)
সুতরাং আমাদের জানতে হবে কোন কোন জিনিস নৈতিকতা ও চরিত্রের প্রাসাদ মজবুত করে।
নিজেকে সে সব গুনের অলংকারে সাজাতে হবে। সদা সত্য বলা। হৃদয়ে সত্যের আলো জ্বালা। বিপদে বিপাকে ধৈর্য্যের রজ্জু আক্রে ধরা, পরিমিতিবোধ রক্ষায় অভ্যস্ত হওয়া। অপরকে অগ্রাধিকার দেওয়া। আমানতদারিতা, দানশীলতা।ক্রোধ সংবরণ। হিংসা ও রিপুর তাড়না দমন। বিনয়,নম্রতা ও কোমলতাসহ মানবিক উপকারী গুনের অধিকারী হওয়া।
যে সব বিষয় চরিত্রকে কলুষিত করে।
মানুষকে টেনে নেয় পাশবিকতায়। ডুবিয়ে রাখে অসভ্যতার নর্দমায়। সেসব থেকে নিজেকে বাচিয়ে রাখতে হবে সর্বোচ্চ সতর্কতায়।
মিথ্যা, প্রতারণা,লোভ ও লালসা। হিংসা, অহংকার, পরশ্রীকাতরতা। খিয়ানত ইত্যাদি থেকে যোজন যোজন দুরত্ব অবলম্বন করা।
মহানবী সা. ছিলেন উত্তম চরিত্রের আদর্শ নমুনা।তিনি আমাদের শিখিয়েছেন চরিত্রকে সুশোভিত করার পদ্ধতি। বলেছেন এই দোয়া করতে। হে আল্লাহ! আমাকে সর্বোত্তম কাজ ও উন্নত চরিত্রের পথ দেখান। কেননা, আপনি ছাড়া এ পথের সন্ধান অন্য কেউ দিতে পারে না। আর অন্যায় কাজ ও খারাপ চরিত্র থেকে আমাকে রক্ষা করুন। কেননা, আপনি ছাড়া অন্য কেউ এ থেকে রক্ষা করতে পারে না।’ -সিফাতুস সালাত, মিশকাত হাঃ ৮২০, সুনান আন-নাসায়ী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন) ৮৯৯,
তাই আসুন চারিত্রিক গুণাবলী অর্জন করে জীবন ও মননের আঙিনা আলোকিত করি।সৎ হয়ে মহান ব্যাক্তিত্ব অর্জনে মগ্ন হই। আল্লাহ তাওফিক দান করুন। আমিন।