অথই নূরুল আমিন।
চারদিক থেকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি উঠছে। সংখ্যায় তারাও কম নয়। বিশেষ করে যারা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ চাচ্ছে। এদিকে আওয়ামী লীগের আসল চেহারা গত পনেরো বছরে জনগণের সামনে চলে এসেছে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগে কোন ভালো লোক ছিল না। কিছু চোর বেয়াদব গুন্ডা ফান্ডার এক দলে পরিণত হয়েছিল। তাই আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হলেও দেশের তৃণমূলের জনগণের আজকে আর কোন আপত্তি নেই। গত পনেরো বছর ধরে আওয়ামী লীগের যত মন্ত্রী এমপি হয়েছে। ওরাও কেউ সমাজের দামি লোক ছিলনা। তাই দেশের জনগণকে কোন কদর করত না। ওদের অনেকের চরিত্র ছিল। গুলিস্তানের টোকাই এবং হকারদের মত।
এদিকে জামায়াতে ইসলামী ধর্মীয় চেতনায় বিশ্বাসী একটি রাজনৈতিক দল। তাদের ও রয়েছে অসংখ্য কর্মী সমর্থক। তাদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসার। বিদেশী কিছু চক্রান্ত আর মুক্তমনা লক্ষ কোটি জনতার তোপের মুখে পরেছে এই ধর্মীয় মনোভাবের রাজনৈতিক দলটি বারবার।
এরই মধ্যে হাটি হাটি পা পা করে একবার বিএনপির সাথে জোট করে। আরেকবার আওয়ামী লীগের সাথে জোট করে, দেশের মসনদের স্বাদ নিয়েছে তারা কমবেশি। আওয়ামী লীগ, বিএনপি তাদের স্বার্থ রক্ষা করার ক্ষেত্রে ওরা যা ইচ্ছে তাই করতে পারে। আমাদের দেশের আওয়ামী লীগ, বিএনপি তাদের স্বার্থর জন্য বিদেশীদের কাছে সমগ্র জাতির মাথা বিক্রি করে দিয়েছে কয়েকবার। জানিনা ভবিষ্যতে আর কি কি দেখার বাকি আছে। এখনো তা অজানা।
বাংলাদেশে বতর্মানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শাসন চলে। এর মধ্যে জামায়াত এখন খুবই জোরালোভাবে নির্বাচনের প্রস্ততি নিচ্ছে। এর মধ্যে প্রায় দুইশর বেশি আসনে প্রার্থী প্রাথমিকভাবে ঘোষণা করে দিয়েছে জামায়াত। অন্যদিকে বিএনপির স্বাথে দূরত্ব শুরু হওয়াও শুরু হয়ে গেছে। আজকে বিএনপি বলতেছে আগে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে। তারপর স্থানীয় নির্বাচন। এই কথা শুনে দেশের সিংহভাগ জনগণ হাসাহাসি শুরু করে দিয়েছে। কেউ কেউ বলছে পাগল হয়ে গেছে। কেউ কেউ পনেরো বছরের ক্ষুধার্থ বলেও গালী দিচ্ছে। কেউ কেউ বলছে। ওরা যেভাবে খাই খাই শুরু করেছে। ওরা ক্ষমতায় এলে না জানি এবার দেশের কোন ক্ষতি হয়।
অন্যদিকে জামায়াত বলছে আগে স্থানীয় নির্বাচন দরকার। তারপর জাতীয় নির্বাচন। দেশের জনগণ
বলছে এই প্রস্তাব সঠিক। এভাবেই ধীরে ধীরে জামায়াত, বিএনপির দূরত্ব সৃষ্টি হচ্ছে ক্রমশ:। নির্বাচনে এই হিংসা প্রতিহিংসার মাত্রা আরো বেড়ে যেতে পারে। হাতাহাতি এমনকি খুন খারাপির মত ঘটনা ঘটে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। একসময় আওয়ামী লীগ বিএনপি একজোট হয়ে যেতে পারে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির অস্তিত্ব রক্ষা করার জন্য।
তার প্রথম কারণ হলো। দেশ স্বাধীনতার তেপ্পান্ন বছর পর আজকে জামায়াত সমগ্র দেশের তিনশ আসনে প্রার্থী দেয়ার সুযোগ পেয়েছে। এর আগে এরকম সুযোগই আর আসেনি। এবং জামায়াত তাও জানে আওয়ামী লীগ, বিএনপি কোন দিন জামায়াতকে এককভাবে ক্ষমতায় আসতে দেবে না। এদিকে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি ভালো করেই জানে। জামায়াত যদি একবার এই দেশে ক্ষমতায় আসতে পারে, তাহলে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি আর কোন দিন এই দেশে ক্ষমতায় আসতে পারবে না। তার কারণ জামায়াতের নেতাকর্মীদের দিয়ে কোনো চাদাবাজী হবে না। এবং জামায়াতের কোন এমপি বা মন্ত্রী বেগম পাড়ায় চুরির টাকা দিয়ে বাড়ি করবে না। জামায়াতে কোন দুর্নীতির আশ্রয় নেই। এটা মোটামুটি গ্যারান্টি দিয়ে বলা যায়। তখনই দেশের জনগণের মাঝে দিনের আলোর মত পরিস্কার হয়ে যাবে আওয়ামী লীগ বিএনপির আসল চরিত্র।
গত তিন যুগ ধরে দেশের মানুষ আওয়ামী লীগ,বিএনপির লুটপাট দেখতে দেখতে হতাশায় আছে। তাই সাধারণ জনগণ বলা বলি করছে, ভোটটা এবার জামায়াতকেই দেবে। ১৯৯১ থেকে ২০২৪ পযর্ন্ত আওয়ামী লীগ, বিএনপির কাছে অবহেলিত নির্যাতিত জনগণেরা সবাই নীরবে জামায়াতের ভোটার। যদিও প্রকাশ্যে আমার ভাই তোমার ভাই শ্লোগান হচ্ছে। এবং সামনেও হবে। নির্বাচন যদি নিরপেক্ষ হয়। তাহলে জামায়াত একাই একশ সত্তরের বেশি আসন পাবে। তবে সব আসন গুলোতে বিএনপি তুমুল প্রতিযোগিতায় থাকবে। এই লেখাটি গোটা জাতি জন্য একটি শিক্ষামুলক লেখা মাত্র। এর বেশি কিছু নয়।
অথই নূরুল আমিন,
কবি কলামিস্ট ও রাষ্ট্র বিজ্ঞানী।