আমির হোসেন, স্টাফ রিপোর্টার:
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার প্রায় সব জায়গায় স্কেভেটর দিয়ে মাটিকাটা সিন্ডিকেট বেপরোয়া হয়ে উঠছে। প্রশাসনের চোখ ধুলো দিয়ে দিন-রাত ফসলি জমি এবং নদীর মাটি কেটে তা মাহিন্দ্রা ট্রাক্টর গাড়িতে করে নিয়ে বিভিন্ন জায়গা ভরাট করতে বিক্রি করছে। অপর দিকে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে চলাচলকারী মানুষ জন।
এই চক্রের বিরুদ্ধে রহস্যজনক কারণে প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। মাটিকাটা সিন্ডিকেটের সদস্যরা দাপটের সাথেই প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অবৈধভাবে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে মাটিকাটা দস্যুদের কাছে তারা অসহায়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ,কৃষির জমি টপসয়েল ও নদীর মাটি কেটেছে মাটি দস্যুরা। এ সিন্ডিকেটের সদস্যদের কেউ কেউ গত ৫ই আগস্টের পর দল পরিবর্তন করে প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলের কথিত নেতাকর্মীদের সাথে একাট্টা হয়ে পুনরায় মাটি কেটে যাচ্ছে। ফসলি জমির টপসয়েল কাটার পাশাপাশি উপজেলার নদীর মাটি কেটে বিক্রি করছে। মাটি কাটা সিন্ডিকেটের লোকজনের ভয়ে এলাকার কেউ কিছু বলতেও সাহস পায় না। চক্রটি প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই মাটি কাটছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়,উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন মাটিকাটা সিন্ডিকেট রয়েছে। তারা উপজেলার মাটিয়ান ও শনি হাওর থেকে ফসলি জমির মাটি কেটে নিয়ে তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়কে, তাহিরপুর-আনোয়ারপুর সড়ক,আনোয়ারপুর-ফতেপুর সড়ক সহ বিভিন্ন সড়ক দিয়ে মাহিন্দ্র ট্রাকে করে মাটি পরিবহণ করে বিভিন্ন পুকুর,ডোবা,নতুন বাড়ির জায়গায় মাটি ভরাট এবং নিচু জমি ভরাট করছে মাটি দস্যুরা।
এদিকে,মাটি বহনকারী ট্রাক্টর ও অন্যান্য গাড়ি থেকে মাটি পড়ে সড়ক ধূলিময় হওয়ায় যাতায়াতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন পথচারীরা।
সড়ককে ফাটল ও ভেঙে যাচ্ছে। পিচ রাস্তায় রাস্তায় থোপ ঘোপ মাটি পড়ে আছে এতে ধূলা-বালুর কারণে পথচারীদের সর্দি,কাশি এবং শ্বাসকষ্ট রোগে ভুগতে হচ্ছে। পাশাপাশি মাটি পড়ে সড়কগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ অবস্থায় হঠাৎ ছিটেফোটা ও গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টিতে এসব রাস্তায় চলাচল চরম ঝুঁঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্কুল শিক্ষক জানান,দেশের পটপরিবর্তনে মনে করেছিলাম, হয়তো আর বেপরোয়াভাবে নদী কিংবা কৃষিজমির মাটিকাটা হবে না। কিন্তু এখন দেখছি,আগের চেয়ে অনেক বেশি মাটিকাটা শুরু হয়েছে। প্রশাসনের গতিবিধি দেখে মনে হচ্ছে,তারাও মাটি দস্যুদেরকে ভয় পাচ্ছেন।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবুল হাসেম জানিয়েছেন,মাটিকাটা ব্যক্তিদের ব্যাপারে কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে কিংবা তথ্য দিলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।