লেখকঃ ইঞ্জিঃ মোঃ সিরাজুল ইসলাম।
বিশ্বের সবচেয়ে ধনী গ্রাম হচ্ছে গুজরাটের ” মাধাপার”!
বিশ্বের সবচেয়ে ছোট গ্রাম বাংলাদেশের সিলেটের “শ্রীমুখ”, লোকসংখ্যা পাঁচ জন! কিন্তু আপনারা জানেন না বাংলাদেশের “মৃত্যু উপত্যকা” কোন গ্রাম? বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলার কলাতলা ইউনিয়নের “চর চিঙ্গড়ী” গ্রাম! উপজেলা টা অনেকটাই বর্বরতার সাক্ষী! কোন একসময় এই উপজেলায় ” পুলিশ হত্যা” হয়েছিলো, তখন খুলনাও জেলা হয় নাই, জেলা ছিলো যশোহর! সেই পুলিশ হত্যা মামলার তদন্তে এসেছিলেন “বিখ্যাত লেখক বঙ্কিম চন্দ্র!” তার সুপারিশে একসময় খুলনা জেলা, বাগেরহাট থানা, পরে মহকুমা এবং মোল্লাহাট থানা, ভেঙে “চিতলমারী!” সে যাক, আমার, আপনাদের ভুগোল বা ইতিহাস শিখাবার ইচ্ছে নাই!
বিগত সরকার আমলে একটা ৫/৭ বছরের শিশু হত্যা হয়েছিলো বাবার উপর প্রতিশোধ নিতে এবং পুকুরে তার লাশ ভাসোমান পাওয়া গিয়েছিল, একজন সংখ্যা লঘূ ছাত্রের সদ্য কেনা মটর সাইকেল লোভে তাকে হত্যা করে কচুরিপানার নিচে লুকিয়ে রাখা হয়েছিলো, বিচার কি হয়েছে আজ-ও খুঁজে পাই নাই!
“মৃত্যু উপত্যকা চর চিঙ্গড়ী” গ্রামের ছোট ভাই “চিঙ্গড়ী গ্রাম” সেখানে “আলম” নামে একজন যুবক হত্যা হয়েছিলো কয়েক বছর আগে!
চর চিঙ্গড়ী গ্রামে কয়েক জনের হাত পা কাটা হয়েছে মাত্র কিছু বছর আগে, গতকাল ঐ গ্রামের “নূরুল ইসলাম” নামে একজন হাসপাতালো মৃত্যু বরন করেছে, তার জানাজার কয়েক ঘন্টা পরে তার অবোধ শিশু টা বর্বর পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলো অভিমানে, সদ্য ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১৭/১৮ জন দারুন আহত হয়ে হাসপাতাল বেডে! কেন “চর চিঙ্গড়ী” গ্রাম টা “মৃত্যু উপত্যকা” War field ? কারন টা আমি বলবো তার আগে এলাকাটা র বর্ননা দিতে চাই!
আমার নিজ গ্রাম চর চিঙ্গড়ী! আমার বাড়ীর অনতি দূরে যেমন দক্ষিণ এশিয়ার বিখ্যাত কামেল বুজুর্গ “মাওলানা শামসুল হকের’ বাড়ী তেমনি গান্ধী জিন্নাহ জর্জওয়াশিংটনের মত আর একজন “জাতির জনক’ শেখ মুজিবের বাড়ী! আমার বাড়ী খুব কাছাকাছি প্রগতিশীল রাজনৈতিক অখণ্ড ভারতের নেতা “মুন্সি একরামুল হকের” বাড়ী যে বাড়ীতে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী সহ অনেক নেতার আগমন ঘটেছে! আমি সেই নেতাকে দেখি নাই তবে তার তৈরি নেতা “শামসুদ্দিন সিকা’ আমার রাজনৈতিক জীবন গুরু! তারপর যারা দারুন সৎ ভালোমানুষ ছিলেন নিরোদ বিহারি নাগ, মূসা মিয়া, এমএ খয়ের, কাজী সায়েম সবার স্নেহ ভাজন ছিলাম! এখন ও কলম রাজনীতি করি, সত্য কে সত্য বলি মিথ্যা কে মিথ্যা!
এখন আমার ছোট ভাইরা যারা রাজনীতি করেন তারা এসব মহান ব্যক্তিদের নাম টেনে আনেন না, কোন সভায় তাদের জন্য শ্রদ্ধা দেখানো হয় না! সবাই দেখাতে চান, আমি, আমি এবং আমি যার আমলে এই অঞ্চলে রাজনীতি শুরু হলো! আমি প্রথম ” আওয়ামীলীগার, আমি প্রথম জাতীয়তাবাদী তাদের বা জীবিত আমরা যারা দুএকজন আছি তাদের থেকে এদের রাজনীতি বিস্তর ফারাক!
প্রিয় পাঠক, কেন এই গ্রামটা মৃত্যু উপত্যকা! কেন একজন লোককে বর্বর খুণি আখ্যা দিয়ে ফেজবুকে এত স্টেটাস! কেন আত্ম সমালোচনা নাই? মানুষের অভাব থাকতে পারে, আমি ও আমার সহধর্মিণী ঢাকায় তাকে আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়ে, চাকুরী দিয়ে সেলাইন সম বাচিয়ে রেখেছিলাম! এই লোকটা কে ঢাকা থেকে কেউ একজন নিয়ে গেলো গ্রামে, আমার বিরুদ্ধে বার-বার সে হাতিয়ার হয়েছে, আমি দূঃখী নই, কারন আমি জানি উপকারী লাঞ্ছিত হন, এটাই ইতিহাস কিন্তু কে তাকে বর্বর বানালো, কে তাকে মেম্বার বানালো কে স্কুল কলেজের সভাপতি করলো কে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি করলো এই টিপসহি লোকটাকে, আবার চেয়ারম্যান করার সময় আমাকে তার নৌকা আনতে দৌড় ঝাপ করতে হলো সাংসদ থেকে গোপালগঞ্জের প্রভাবশালী ব্যক্তির কাছে এবং অনেক আগেই কনফার্ম করে ঘরে ফিরলাম সহধর্মিণী সহ! তার অনুরোধ থাকতো, ভাবী ভাতিজা কে নিয়ে আসবেন ধানমন্ডি! চেয়ারম্যান হয়েই প্রথম অস্ত্র আমার উপর ব্যবহার —- অখুশি নই, আমি লেবাসধারী ধার্মিক নই, মিথ্যা বাদী নই, তাকওয়া পূর্ণ জীবন আমার, পাঁচটা বাড়ী করা সম্ভব ছিলো রাজধানী তে —
“সিন্দাবাদের দানব” ঘাড়ে তুললে নামানো যায় না! সিন্দবাদ ও নামাতে পারেন নাই! তাকে তো ভালো শিক্ষা দেয়া হয় নাই! তাহলে তাকে এখন কেন “বর্বর খুনি” বলা কেন তার সাথে, আধিপত্য বিস্তারের খেলায় যাওয়া, কোন হ্যামিলন বাঁশি বাজায়, বাঁশির সুরে কয়েক গ্রাম তাকে পরাস্ত করতে ছোটে, তার কাছে পরাজিত হয়ে জীবন দেয়! নিরো রোমে বসে বাঁশি বাজায়, ইউক্রেন শেষ কিন্তু বাইডেন স্যার রোজ কোর্মা পালাউ খাচ্ছেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসাবে, জেলে স্কি এর ক্ষমতা যায়, কানেধরে ওঠবস প্রায়! বুঝুন, “আপনি কাউকে শেষ করতে চাইলে সে ফিরে পড়বে ই।’ বাসার বিড়াল কুকুর থেকে শিক্ষা নেন নাই? তাহলে সারাজীবন কি পড়ালেখা করলেন, কি অভিজ্ঞতা অর্জন করলেন? আমি ভয় পাচ্ছি গুপ্ত হত্যা শুরু না হয় এই গ্রামটায়, এখন সময় আছে বন্ধ করুন, ছায়ার সাথে লড়া যায় না! কাউকে মুছে দেয়া যায় না!
দুর্ভাগ্য বশতঃ বা সৌভাগ্য বশত বিগত প্রধানমন্ত্রীর ভাই ছিলেন আমার উপজেলার সাংসদ! তাকে, কে হাসিল করবেন এই প্রতিযোগিতা ছিলো আগে এখন তিনি নাই কিন্তু কেউ আওয়ামীলীগ করেছে তাকে শেষ করতে যেয়ে বার-বার জীবন যাচ্ছে, আর নিরো রোমে বসে বাঁশি বাজাচ্ছে। আমরা রাজধানীতে থাকি, কষ্ট পাচ্ছি, যে জীবন দিচ্ছে সে আপনজন যাকে বর্বর বলা হচ্ছে তার পিছে হাততালি দিয়েছেন যখন আমার মত ভদ্রলোক গুলো নাজেহাল হয়েছে —
বন্ধ করুন আধিপত্য বিস্তারের খেলা, আর নতুন নূরুল ইসলাম কে কবরে শায়িত করবেন না! আমার দৃষ্টিতে “চর চিঙ্গড়ী গ্রাম” এখন ইউক্রেন! সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে ভাঙচুর আগুন দখল না করলে ও চলতো! বাংলাদেশে প্রায় সাতাশি হাজার গ্রামের মধ্যে চর চিঙ্গড়ী একটা গ্রাম মাত্র !
আমার উল্লেখ করা নেতাদের মধ্যে আমি সবচেয়ে জুনিয়র কর্মী কারো ওয়ার্ড মেম্বার হওয়ার খায়েশ ও ছিলো না! আপনাদের সেই সব নেতাদের নীতি আদর্শ স্মরন করুন, ধর্মের পথে চলুন, কারো পূর্ব পেশা টেনে কাউকে ছোট করা যায় না! ”
বলিউড নায়িকা “রেখাজ্বী” বলেছিলেন, “বিলিউড সিনেমার নায়িকা হয়েছে আর কাদা চটকাতে হয় নাই এমন কেউ বলতে পারবে না ! আমার মুজিব ছবিওয়ালা পোস্টার নিয়ে আসতেন শক্তিশালী মুসলিম লীগ নেতা ” আঃ কুদ্দুস”, একে বলে সহ অবস্থান! তিনি আমার প্রতিদ্বন্দ্বী থাকতেন ভোট কেন্দ্রে, তখন দুই ইউনিয়ন মিলে ভোট কেন্দ্র ছিলো! তিনি আমার হাত-পা কাটেন নাই!
আল্লাহ, সেই “রব” অতিমাত্রায় কিছু পছন্দ করেন না!