মো: রফিকুল ইসলাম টিটু, ধর্মপাশা প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা সদর ইউনিয়নের মহদীপুর গ্রাম সংলগ্ন মুর্শেদ ব্রিক ফিল্ড এর নামে একটি ইটের ভাটায় পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না থাকায় অবৈধ ভাবে ইট পোড়ানোর দায়ে মঙ্গলবার বিকালে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে ইট ভাটার চিমনি ও কাঁচা ইট গুড়িয়ে দিয়েছে ধর্মপাশা উপজেলা প্রশাসন। ধর্মপাশা উপজেলা প্রশাসন, রিবেশ অধিদপ্তরের সুনামগঞ্জ জেলা কার্যালয়, ধর্মপাশা থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের এক দল সদস্য নিয়ে এই অভিযান শুরু করেন ধর্মপাশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জনি রায়। এ সময় অন্যদের মধ্যে সেখানে উপস্থিত ছিলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের সুনামগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোহাইমিনুল হক, পরিদর্শক মো.সাইফুল ইসলাম, ধর্মপাশা থানার এসআই নিরঞ্জন পাল, ধর্মপাশা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টোশনের সহকারী ইনচার্জ দিলোয়ার হোসেন প্রমুখ। অভিযান চলাকালে একটি অ্যাক্সেভেটর (খননযন্ত্র) দিয়ে ইট ভাটার চিমনির একাংশ ভাঙা হয়। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা চুলোতে পানি ঢেলে দেন। এ ছাড়া ভাটার কাঁচা ইট খননযন্ত্র দিয়ে গুড়িয়ে দেওয়া হয়। রাত পর্যন্ত এই কার্যক্রম চলে। এলাকা বাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৯৩ সালে মহদীপুর গ্রাম সংলগ্ন ফসলি জমিতে মুর্শেদ ব্রিক ফিল্ড নামের এই ইটের ভাটাটি গড়ে উঠে। এটির বিষাক্ত কালো ধোঁয়ায় ভাটা লাগোয়া আশপাশের বোরো, আমন ধানের ফসলি জমিতে ধান ও ফলজ গাছের ফল উৎপাদন দিন দিন কমে যাচ্ছিল। পাশাপাশি ভাটা সংলগ্ন গ্রামের মানুষেরা জ্বর, সর্দি ও কাশিসহ বিভিন্ন রোগ বালাইয়ে আক্রান্ত হয়ে আসছিলেন। গত সাড়ে তিনমাস ধরে ছাড়পত্র ছাড়াই অবৈধভাবে ভাটার কার্যক্রম চালিয় আসছিল। মুর্শেদ ব্রিক ফিল্ডের স্বত্তাধিকারীদের একজন রেজুয়ান ইসলাম রাকীব বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে ইট ভাটার ছাড়পত্র নতুন করে নবায়নের জন্য আবেদন করায় ইটের ভাটায় এতদিন কাজ করিয়েছি। ছাড়পত্র না পাওয়ায় ও পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে চিঠি পেয়ে সোমবার বিকেলে এটির কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছি। পরিবেশ অধিদপ্তরে সুনামগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোহাইমিনুল হক বলেন, গত ১৭ফেব্রুয়ারি বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিবেশগত ছাড়পত্র কমিটির সভায় এই ইটের ভাটাটির নবায়ন না মঞ্জুর করা হয়েছে। পাশাপাশি এটির ছাড়পত্র বাতিল করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত চিঠি ভাটা মালিকের কাছে গত ২মার্চ পাঠিয়েছি। ধর্মপাশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও জনি রায় বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না থাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এই ইটের ভাটাটির চিমনি ভেঙে দিয়ে কাঁচা ইট গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ইট ভাটার যাবতীয় কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।