লেখকঃ ইঞ্জিঃ মোঃ সিরাজুল ইসলাম।
বর্তমান বিশ্বের মানব চরিত্র বিশ্লেষণ করলে কি মানুষ কে সৃষ্টির সেরা জীব বলা যায়? মানব মনে যে হিংসা বিদ্বেষ অহংকার ধোঁকা অর্থ বিত্তের লোভ, সম্পদ লিপ্সা, ক্ষমতায় যেতে মানবতা মনুষ্যত্ব ধর্ম নীতি বিবেক বোধ ইহকাল পরকাল সব শেষ করে দিতে পারে! একটা অসহায় পাঁচসাত বছরের রক্ত পিন্ড শিশুকে ধর্ষন করতে যে মানুষের যৌন উত্তেজনা হয়, তাকে শ্রেষ্ঠ জীব বলি কি ভাবে? ধর্ষণের পর হত্যা, মসজিদ মন্দিরে ধর্ষণ হচ্ছে, একরাতের হিল্লা বিয়ে করে মসজিদ সিড়িতে বাসর না করলেই নয় ঈমাম সাহেবের! অথচ আমরা কেউ সেরা ধর্ম মুসলিম বলে দাবী করছি তো কেউ সেরা ধর্ম হিন্দু বলে দাবী করছি! প্রতিবেশী হিন্দু ভাই জমি দখল করতে রাতের আঁধারে পরিবারের সব সদস্য হত্যা করে চুনের ড্রামে রাখছি দ্রুত পঁচা তে (খুনি তাজুল যা করেছিলো)!
প্রিয় পাঠক, আমরা কি কেউ কুরআনের মুসলমান, কেউ কি গীতা অনুসারী হিন্দু বা বাইবেল অনুসারী খৃষ্টান? ১৯৬৪ সালে পাকিস্তান সরকার তার ক্ষমতা পাকা করতে কাশ্মীর “হযরত বাল মসজিদ” থেকে নবীর চুল মুবারক চুরি করায় বাঁধায় দেয় হিন্দু মুসলমান দাঙ্গা! সেই দাঙ্গা ছড়ায় যায় পূর্বপাকিস্তান খুলনায়! খান এ সবুর সাহেব হিন্দুর ৫০ বিঘা জমি দখল করে বাড়ী করেন এবং আদালতে মামলায় হেরে যান, প্রতিশোধ নিতে তিনি এই সুযোগ গ্রহণ করেন এবং
হিন্দু মুসলমান দাঙ্গা বাধায় দিয়ে কচুকাটা করেন সেই হিন্দু ভদ্রলোকের পরিবার সহ হাজার-হাজার হিন্দু মা ভাই বোনকে ! খালিশপুর দৌলতপুর খুলনা তিনদিন ধরে হিন্দু কাটা চলে! ঢাকা আদমজী থেকে অনেক জায়গায় সে নৃশংসতা ছড়ায় যায়, সে হৃদয় বিদারক কাহিনি ছিলো বড়ই নির্মম! ধর্ষণ ও চলেছে পাশাপাশি! ১৯৪৭ এর পর বড় হিন্দু বিতাড়ন হয়েছে ১৯৬৪ সালে মুসলিম লীগ সামরিক সরকার আইযুব আমলে! ১৯৪৭ এর আগে সম্ভবত ৩১% হিন্দু ছিলো, ১৯৬৪ সালের আগে খুলনায় হিন্দু প্রধান এলাকা ছিলো!
আইয়ুবের গদি পোক্ত হয়, নবীর চুল আবার অজানা পথে কাশ্মীর সেই মসজিদে ফিরে যায়! হিন্দু সংখ্যা গুরু খুলনায় হিন্দু সংখ্যা লঘূতে পরিনত হয়! সবুর খান সাহেবের প্রমোশন হয়, যোগাযোগ মন্ত্রী ও আইয়ুব খানের প্রিয়জন হয়ে যান, ১৯৭১ এ তার ১৯৬৪ সালের অভিজ্ঞতা কাজে লাগান তবে হিন্দু হত্যার সাথে প্রগতিশীল বাংগালী হত্যা যোগ হয়! মৃত্যুর পরে ও সবুর খানের প্রমোশন হয়, তিনি সারাজীবনের পুরস্কার হিসেবে নোবেল বিজয়ী না হলে-ও “সংসদ প্লাজায়” কবরস্থ হওয়ার গৌরব অর্জন করেন!
আমি সবুর খানের খালিশপুর দৌলতপুর সভায় গিয়েছি, দেখেছি ২/৩ শো লোক পয়সায় এনে বক্তৃতায় বলেছেন,”আপনারা হাজার-হাজার মানুষ আমাকে ভালোবেসে চিত্রালী সিনেমা হলের সামনে মাঠের ভিতর বসে আছেন আমার জয় নিশ্চিত!” ইহারা মুসলমানের লীগ ইহারা ই পাকিস্তান নামক দেশ করেছিলেন! সংখ্যা লঘূ হত্যা ইহাদের কাছে পূণ্যের কাজ! এই রাজনীতি একশ্রেণীর সো কল্ড মুসলমানের ক্ষমতায় যাওয়ার হাতিয়ার, লেবাস শুধু আল্লাহ কে ফাঁকি ও পাবলিক কে বোকা বানানো!
যে দেশে সাড়ে চার লাখের মত মসজিদ, ২০ হাজারের মত মাদ্রাসা, প্রতি বছর ১২ লাখের মত ধর্মীয় শিক্ষিত লোক কুরআন শিখে বের হয় সে দেশে মানুষ হত্যা হয় কি ভাবে, হিজাব নেকাব বোরকা এখন অধিকাংশ মহিলার পোশাক সে দেশে ২ মাসে ৭৭৪ জন ধর্ষণের শিকার ( তথ্য –যুগান্তর পত্রিকা)! অথচ অমুসলিম দেশগুলোতে ১২” জাঙ্গিয়ার মত জিন্স প্যান্ট ও একটা পাতলা টাইট গেঞ্জি সব মেয়েদের পরিধেয় পোশাক, কোন ধর্ষন নাই! মেয়েদের দিকে কাউকে তাকাতে দেখি নাই! ইউরোপ আমেরিকা নয় এশিয়ার অমুসলিম দেশের নারী পোশাক বললাম! জাপান ফিলিপাইন কোরিয়া থাইল্যান্ড সিঙ্গাপুর কোন ধর্ষণ নাই! অথচ দাড়ি-টুপি সুরমা লম্বাচওড়া জামা কুরআন তেলাওয়াত আমরা মুসলমান দেশে ঘর্মাক্ত সবাই, আঁখলাকের কোন পরিবর্তন নাই!
ভালো থাকেন সুস্থ থাকেন আগে মানুষ হোন পরে হিন্দু মুসলমান হোন!