সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২৮ অপরাহ্ন

সুন্দরবনের উপকূলীয় মোরেলগঞ্জে ডুবে গেছে ৩ শতাধিক মৎস্য ঘের, ৪০টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি

Coder Boss
  • Update Time : সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৪৬ Time View

এস. এম. সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট:

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ ও বৈরী আবহাওয়ার প্রভাবে ৪ দিনের টানা ভারি বর্ষণে বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের উপকূলীয় বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের পানগুছি নদী তীরবর্তী পৌরসভাসহ কমপক্ষে ৪০টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ডুবে গেছে ৩ শতাধিক মৎস্য ঘের। পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে ১ হাজার হেক্টর ফসলি জমির রোপা আমন ধানের ক্ষেত।হুমকির মুখে পড়ছে রাস্তা-ঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বেড়িবাঁধসহ বেশ কিছু বাড়িঘর। এনিয়ে এই অঞ্চল ৪বার প্লাবনের কবলে পড়লো।তাই শহর রক্ষা বাঁধসহ সন্ন্যাসী হয়ে ঘষিয়াখালী পর্যন্ত নদীর দু’পাড়ের স্থায়ী ভেড়িবাঁধের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। সরেজমিনে দেখা গেছে, উপকূলীয় অঞ্চল উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নসহ পৌরসভায় গত ৪ দিন ধরে টানা বৃষ্টি জোয়ারে অতিরিক্ত পানিতে পানগুছি নদীর তীরবর্তী মোরেলগঞ্জ পৌর শহরের ফেরীঘাট সংলগ্ন এলাকা, বারইখালীর কাশ্মীর, বলইবুনিয়ার শ্রেণীখালী, বহরবুনিয়ার ফুলহাতা, ঘষিয়াখালী, মোরেলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের গাবতলা গ্রামের নতুন করে আধা কিলোমিটার ধসে গেছে।হোগলাবুনিয়ার বদনীভাঙ্গা, সানকিভাঙ্গা, পাঠামারা, খাউলিয়া বাজারের ব্রিজসহ হুমকির মুখে অম্বিকা চরণ লাহা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, বদনীভাঙ্গা আর্দশ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৮০নম্বর বি পাঠামারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বহরবুনিয়ার এসবি মাধ্যমিক বিদ্যালয় নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

এদিকে দীর্ঘদিন ধরে পানগুছি নদী অব্যাহত ভাঙনের ফলে ফসলি জমি, বাড়িঘর গাছপালা বিলীন হয়ে নদীগর্ভে চলে যাওয়ায় নিঃস্ব হয়ে পড়েছে শত শত পরিবার।

উপজেলার মোরেলগঞ্জ সদর, বারইখালী, খাউলিয়া, হোগলাবুনিয়া, বলইবুনিয়া, পঞ্চকরণ, পুটিখালী, রামচন্দ্রপুর ও তেলীগাতি ইউনিয়নের অধীকাংশ গ্রামের শত শত বসতবাড়ির লোকজন পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। রাস্তাঘাট ও পুকুর ডুবে গেছে। মোরেলগঞ্জ উপজেলা বিএনপি সভাপতি শহিদুল হক বাবুল জানান, শুধু শহর রক্ষা বাঁধ নয়। ইতোমধ্যে গাবতলা হয়ে ঘষিয়াখালী পর্যন্ত স্থায়ী ভেরিবাঁধের ট্রেন্ডার হয়েছে। ২০১৭ সালে এ প্রকল্পের প্রস্তাবনা হয়েছে। বাস্তবায়নের অপেক্ষায় শহরবাসী। বেড়িবাঁধের কাজ শুরু হলে এ সমস্যায় থাকবে না পৌরবাসীর। গত ৪দিনের পানির চাপে নদীর তীরবর্তী ইউনিয়নগুলো অনেক কাঁচা পাকা রাস্তা ভেঙে পড়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অস্থায়ী বেড়িবাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে। এভাবে এক সপ্তাহ পানির চাপ থাকলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে গ্রামবাসীরা।

এ বিষয়ে মোরেলগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিনয় কুমার রায় বলেন, ৪ দিনের প্রবল বর্ষণে উপজেলার নিচু এলাকার মৎস্য ঘেরগুলো তলিয়ে গেছে। তবে, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণ করা যায়নি।

এ সম্পর্কে কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, ১৬ হাজার হেক্টর ফসলি জমির মধ্যে নিম্নাঞ্চলের প্রায় ১ হাজার হেক্টরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।বাগেরহাট জেলা পানিউন্নয়ন বোর্ডে নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, মোরেলগঞ্জ শহর সংলগ্ন রামপাল-মোংলা হয়ে ঘষিয়াখালী পর্যন্ত ৯৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষার জন্য মন্ত্রাণালয়ে প্রস্তাবনা রয়েছে। এ ছাড়াও ইতোমধ্যে পানগুছি নদীর ভাঙন হতে বাগেরহাট জেলা সদর সংলগ্ন এলাকা সংরক্ষণ এবং বিষখালী নদী পুনঃখনন শীর্ষক প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102